কিভাবে যাওয়া যায়:
ঢাকার নিকটবর্তী জেলা হলো মুন্সিগন্জ। এইখানে রয়েছে অনেক ইতিহাস তার মধ্যে একটি হযরত বাবা আদম শহীদ (র.) এর মাজার এবং মসজিদটি মুন্সীগন্জের রামপালে রয়েছে। মাত্র ২৩ কিলোমিটার দূরুত্ব ঢাকা থেকে মুন্সীগঞ্জের । কিন্তু আরো ০৫ কিলোমিটার ভিতর দিয়ে যেতে হবে এই মাজারে যাওয়ার জন্য। ঢাকা হতে সকালে রওনা হলে ১২ টার মধ্যে এসে মাজার জিয়ারত ও মসজিদ দর্শন করে বিকেলে বিকেলেই ঢাকায় ফিরে আসা যাবে। কষ্ট হবে না সড়কপথে যেতে। তবে নৌপথে গেলেকিছু াঝামেলা থেকে বেচেঁ যাবেন যেমন: সময়ও বাচঁবে এবং যানজট এড়িয়ে নদী পথের সৌন্দর্য অবগাহন করে স্বাচ্ছন্দের সাথে পৌছানো যাবে। সদর ঘাট থেকে মুন্সীগঞ্জ গামী লঞ্চে ২ ঘন্টার মধ্যেই পৌছে যাওয়া যাবে মুন্সীগঞ্জ লঞ্চ ঘাটে। মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা হইতে রিক্সায় দরগাবাড়ি হযরত বাবা আদম শহীদ (র.) এর মাজার সংলঘ্ন মসজিদ এ যাওয়া যায়। ভাড়া ২৫-৩০ টাকা।
বাবা আদমের মসজিদ ও মাজার
বিক্রমপুরের ইতিহাসে লিপিবদ্ব রামপাল গ্রামের নিকটস্থ কাজী কসবা গ্রামে একটি ছয় গম্বুজ বিশিষ্ট
মসজিদটি
রয়েছে। এটি হলো সুলতানী আমলের।একটি মাজার রয়েছে এর গজ কয়েক পূর্বে ২৫ (পঁচিশ) ফুট বাহুবিশিষ্ট আয়তনের ইটের তৈরী মঞ্চের উপর একটি পাকা সমাধি বিশেষ ভাবে রয়েছে
এই মাজারটি। এটি বর্গাকার সমাধির উপর।
আয়তাকার ভিত্তি ভূমির উপর মসজিদটি প্রতিষ্ঠিত। মসজিদটির আয়তন উত্তর-দক্ষিণে ৪৩
ফুট এবং পূর্ব-পশ্চিমে
৩৬ ফুট। অষ্ট কোণাকৃতির
বুরুজ বা মিনার রয়েছে চার কোণায় চারটি ।
ছাদের কার্ণিশের উপর
উঠেনি মিনারটি । মনোরম বলয়াকারের
স্ফীত রেখায় অলংকরণের কাজ
আছে মিনারের ধাপে ধাপে।
তিনটি
অর্ধবৃত্তাকার অবতল মেহরাব রয়েছে পশ্চিম দেয়ালে বাইরের দিকে উদগত কেন্দ্রী মেহরাবের পেছন দিকের দেয়ালটি। ধনুকাকৃতির খিলানবিশিষ্ট তিনটি প্রবেশপথ রয়েছে সামনের দেয়ালে এবং এতে আয়তাকারে নির্মিত যে সব ফ্রেম আছে তার চূড়ার দেশে অনেক সুন্দর কারুকাজ রয়েছে। গভীর সমতল কুলুঙ্গী রয়েছে প্রধান প্রবেশ পথের দুই পাশে । উপরিভাগ সুন্দরভাবে খাঁজকাটা। ঝুলন্ত শিকল ও ঘন্টার অলংকরণ রয়েছে। মসজিদে কোন বারান্দা নেই। গ্রানাইট পাথরে নির্মিত দুইটি স্তম্ভ অভ্যন্তর ভাগে আছে। এই দুইটি স্তম্ভের সাহায্যে পূর্ব পশ্চিমে দুই সারিতে এবং উত্তর-দক্ষিণে তিন সারিতে বিভক্ত রয়েছে অভ্যন্তর ভাগ । স্তম্ভ দুইটির মাঝ থেকে অষ্টকোণাকৃতি প্রায় ৪ (চার) ফুট পর্যন্ত এবং ষোলকোণাকৃতি এর পর । এই দুইটি স্তম্ভ এবং চারপাশের দেয়ালের উপর মসজিদের অর্ধবৃত্তাকার ছোট ছোট গম্বুজ ছয়টি স্থাপিত। গম্বুজ ও মসজিদের অভ্যন্তর-ভাগের মতোই পূর্ব-পশ্চিমে দুই এবং উত্তর-দক্ষিণে তিন সারিতে বিভক্ত। দেয়াল অতিশয় পুরু।প্রধান মেহরাবটি এবং দুই পাশের দুই মেহরাব ও পাশের দেয়াল লতাপাতা, জ্যামিতিক নক্সা ও ও গোলাপফুল, ঝুলন্ত প্রদীপ ও শিকল প্রভৃতি অত্যন্ত সুন্দর পোড়ামাটির চিত্র ফলক দিয়ে অলংকৃত। মসজিদের বাইরের দিক বিশেষ করে সামনের দেয়াল অতি সুন্দর পোড়ামাটির চিত্রফলক দিয়ে অলংকৃত ছিল। কেন্দ্রীয় প্রবেশপথের দুইপাশে কিছু কিছু চিত্রফলকের কাজ এখনও চোখে পড়ে।
অর্ধবৃত্তাকার অবতল মেহরাব রয়েছে পশ্চিম দেয়ালে বাইরের দিকে উদগত কেন্দ্রী মেহরাবের পেছন দিকের দেয়ালটি। ধনুকাকৃতির খিলানবিশিষ্ট তিনটি প্রবেশপথ রয়েছে সামনের দেয়ালে এবং এতে আয়তাকারে নির্মিত যে সব ফ্রেম আছে তার চূড়ার দেশে অনেক সুন্দর কারুকাজ রয়েছে। গভীর সমতল কুলুঙ্গী রয়েছে প্রধান প্রবেশ পথের দুই পাশে । উপরিভাগ সুন্দরভাবে খাঁজকাটা। ঝুলন্ত শিকল ও ঘন্টার অলংকরণ রয়েছে। মসজিদে কোন বারান্দা নেই। গ্রানাইট পাথরে নির্মিত দুইটি স্তম্ভ অভ্যন্তর ভাগে আছে। এই দুইটি স্তম্ভের সাহায্যে পূর্ব পশ্চিমে দুই সারিতে এবং উত্তর-দক্ষিণে তিন সারিতে বিভক্ত রয়েছে অভ্যন্তর ভাগ । স্তম্ভ দুইটির মাঝ থেকে অষ্টকোণাকৃতি প্রায় ৪ (চার) ফুট পর্যন্ত এবং ষোলকোণাকৃতি এর পর । এই দুইটি স্তম্ভ এবং চারপাশের দেয়ালের উপর মসজিদের অর্ধবৃত্তাকার ছোট ছোট গম্বুজ ছয়টি স্থাপিত। গম্বুজ ও মসজিদের অভ্যন্তর-ভাগের মতোই পূর্ব-পশ্চিমে দুই এবং উত্তর-দক্ষিণে তিন সারিতে বিভক্ত। দেয়াল অতিশয় পুরু।প্রধান মেহরাবটি এবং দুই পাশের দুই মেহরাব ও পাশের দেয়াল লতাপাতা, জ্যামিতিক নক্সা ও ও গোলাপফুল, ঝুলন্ত প্রদীপ ও শিকল প্রভৃতি অত্যন্ত সুন্দর পোড়ামাটির চিত্র ফলক দিয়ে অলংকৃত। মসজিদের বাইরের দিক বিশেষ করে সামনের দেয়াল অতি সুন্দর পোড়ামাটির চিত্রফলক দিয়ে অলংকৃত ছিল। কেন্দ্রীয় প্রবেশপথের দুইপাশে কিছু কিছু চিত্রফলকের কাজ এখনও চোখে পড়ে।
এক সময়ে মানত
হাসিলের জন্য হিন্দু-মুসলিম
উভয় সমপ্রদায়ের মহিলাদের দ্বারা এই মসজিদের
স্তম্ভ দুইটি সিন্দুরানুলিপ্ত হয়ে
রক্তবর্ণ ধারণ করেছিল।
আমাদের আলোচ্য এই
মসজিদটি দরগাবাড়ীর মসজিদ বা বাবা
আদমের মসজিদ এবং মাজারটি
বাবা আদমের দরগা নামে
পরিচিত। বাবা
আদম সম্পর্কে বিক্রমপুরে বহু জনশ্রুতি প্রচলিত
রয়েছে। তবে
জনশ্রুতিগুলোর সবাই বাবা আদম
ও বল্লাল সেনের যুদ্ধ
সম্পর্কীত।
জনশ্রুতিগুলো নিম্নরূপঃ
রাজা বল্লাল সেন
ছিলেন বিক্রমপুরের মহাপরাক্রমশালী ঘোর তান্ত্রিক।
তিনি ধর্মীয় অধীরতায় বশবর্তী
হয়ে মসজিদ গুলোকে মন্দিরে
পরিণত করেন এবং সেইখানে গরু জবেহ ও আযান
দিয়ে নামাজ পড়া নিষিদ্ধ
করেন দেন। একদিন রামপালের কাছের এলাকা আব্দুল্লাহপুর গ্রামের কানাইচং মাঠের জনৈক মুসলমান
তার পুত্রের জন্ম উপলক্ষে অনেব গপোনে গরু জবেহ করেন। কিন্তু
দুর্ভাগ্য হলে যা হয় আরকি একটি চিল ছো
মেরে এক টুকরো মাংস
নিয়ে ফেলে দেয় বল্লাল সেনের রাজপ্রাসাদের
আঙ্গিনায় । এইটা দেখে রাজা বল্লাল সেন অত্যন্ত ক্রুদ্ধ
হয়ে গরু হত্যা কারিকে খোঁজে
বের করার জন্য গুপ্তচর
নিয়োগ করেন। বল্লাল সেনের নির্যাতনের ভয়ে উক্ত গোহন্তা সেইখান থেকে পালিয়ে গিয়ে
মক্কায় হাজির হন।
তখন বাবা
আদম নামক এক ধর্মান্ধ
জবরদস্ত ফকীর ছিলেন মক্কায়।
উক্ত ব্যক্তি বল্লাল সেনের নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বাবা আদমের
শরনে যান। সেই সময়ের বল্লাল সেনের কর্তৃক মুসলিম নির্যাতনের
কাহিনী দরবেশকে সম্পুন বলেন। তখন বাবা আদম বিক্রমপুরকে রাজার অধীনতা থেকে
তাদেরকে উদ্ধার করবেনই করবেন। আর এই
উদ্দেশ্যে বাবা আদম মুহুতের মধ্যে ৭
(সাত) হাজার সৈন্য সংগ্রহ
করেন এবং এই সৈন্যবাহিনী
নিয়ে তিনি মক্কা থেকে
বিক্রমপুরের উদ্যেশে দীর্ঘ যাত্রা শুরু
করেন। পথে
পথে অনেক যুদ্ধ করেন এবং জয়ে লাভ ও করেন অবশেষে তিনি এবং
তার সৈন্য বাহিনী রামপালের উপকন্ঠে দরগাবাড়ি বল্লাল
রাজার রাজধানীতে এসে ঘাঁটি গাড়েন। সেই সময় সেইখানে একটি মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন
এবং সেই মসজিদটির নামকরন করা হয় তার নামে। মসজিদটি
নামকরণ করেন বাবা আদমের
মসজিদ। এই
মসজিদটিকে কেন্দ্র করেই শুরু হয় বাবা আদমের ইসলামী আচার অনুষ্ঠান প্রকাশ্যেই
পালন করা। আজান দিয়ে নামাজ পড়া থেকে শুরু করে অনেক
ষাঁড় ও গাভী জবে
হ করা হতে থাকে। এই
আজানের শব্দ বল্লাল সেনের
রাজপ্রসাদের মধ্যে গিয়ে পৌঁছে। এতে
বল্লাল সেন অনেক ক্রুদ্ধ হয়ে পড়েন এবং নবাগত মুসলিম
সৈন্যবাহিনীর নেতা বাবা আদমের
কাছে কয়েকটি দাবী রেখে
দূত পাঠান। দূত আসেন বাবা আদমের নিকট এবং তাকে বলেন,
“হয় তো তোমরা বিক্রমপুর ছাড় নয় প্রতিমাপূজক বিরোধী আচার অনুষ্ঠান
প্রতিপালন থেকে বিরত হও।” কিন্তু
অলৈকিক ক্ষমতাসম্পন্ন দরবেশ বাবা আদম
এতে দমাবার পত্র নন। তিনি
তার অসংখ্য ভক্তের সমর্থনে
নিশ্চিত হয়ে পরাক্রমশালী বল−াল সেনের কাছে
এক ঔদ্ধত্বপূর্ণ উত্তর পাঠালেন।
তিনি বললেন, “একমাত্র আল্লাহ ছাড়া অন্য
কোন উপাস্য নেই এবং
মোহাম্মদ (দঃ) তার রসূল। এইখান কার রাজা বল্লাল সেন আপনি যাই বলুন
না কেন আর যাই
করুন না কেন আমাদের ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান প্রতিপালন থেকে এক চুল পরিমাণও বিরত হবনা আমি
এবং আমার সমর্থনরা।
এহেন ঔদ্ধত্বপূর্ণ উত্তরে বাধ্য হয়েই
বল−াল সেন সৈন্য
সংগ্রহ করে বাবা আদমের
বিরুদ্ধে যুদ্ধ যাত্রা করলেন। তবে
পূর্ব থেকেই বিভিন্ন রণাঙ্গনে
মুসলিম সৈন্য বাহিনীর বিজয়
ও পরাক্রমের কাহিনী অবহিত থাকাতে পরাজিত
হলে যাতে শত্রুর হাতে
বন্দী হয়ে মানসম্ভ্রম খোয়াতে
না হয় সে জন্য
তিনি আগেভাগেই ব্যবস্থা করে রেখে যান। তিনি
সাথে করে একটি কবুতর
নিয়ে যান এবং বলে
যান যে, পায়রাটি একা
রাজপুরীতে ফিরে এলে রানী
এবং রাজপরিবারের অপরাপর সদস্যগণ যেন
মনে করেন যে রাজা
যুদ্ধে পরাজিত ও নিহত
হয়েছেন। আর
তারাও যেন জাতিধর্ম রক্ষার
জন্য অমনি জ্বলন্ত অগ্নিকুন্ডে
আত্মবিসর্জন দেন। এই
উদ্দেশ্যে পূর্ব থেকেই রাজপুরীতে
একটি অগ্নিকুন্ড প্রজ্বলিত ছিল। রাজধানী
রামপালের মাইল দুই দূরবর্তী
কানাইচঙ্গের মাঠে প্রত্যুষকালে থেকে
তৃতীয় প্রহর পর্যন্ত এক
রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হয়।
বল্লাল সেন বাবা
আদমকে নিহত করেন।
বল্লাল যুদ্ধে জয়ী
হয়ে রক্তমাখা দেহ ধোয়ার জন্য
যেই পার্শ্ববর্তী জলাশয় “কাঁছারীর দীধিতে”
অবতরণ করেন অমনি দৈবক্রমে
পায়রাটি বস্ত্রাভ্যন্তরে থেকে উড়ে গিয়ে
রাজপুরীতে পৌঁছে। আর
তক্ষুণি রাণী ও রাজপরিবারের
অপরাপর সদস্যবৃন্দ ও রাজার পরাজয়
ও মৃত্যু আশঙ্কা করে
সেই জ্বলন্ত অগ্নিকুন্ডে আত্মবিসর্জন দিলেন। এদিকে
বল্লাল সেনও পায়রা ছুটে
যাওয়া মাত্রই যুদ্ধ ক্ষেত্র
থেকে পাগলের মতো রাজধানী
রামপাল অভিমুখে ছুটে এলেন।
কিন্তু ইতিমধ্যে সবাই শেষ হয়ে
গেছে। এই
শোক সহ্য করতে না
পেরে রাজাও ঐ একই
চিতায় ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মহুতি দিলেন। ফলে
বিক্রমপুর মোসলমানদের হস্তগত হল।
তৎকর্তৃক
নির্মিত মসজিদের কয়েক গজ পূর্বে শহীদ দরবেশ বাবা আদমকে সমাহিত করা হল । আর তখন
থেকেই সমাধিটির নাম হল বাবা আদমের দরগা আর মসজিদটির নাম হল বাবা
আদমের মসজিদ ।
see the nex |
0 Comments