এই প্রথমবারের মতো সূর্যমুখী ফুলের
চাষ করছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার
কৃষকরা ।এই জেলার মোট ৯টি উপজেলা নিয়ে প্রায় ৪০ হেক্টর
জমিতে হাইসান-৩৩ জাতের
সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন
কৃষকরা ।
এই জেলার কৃষি সম্প্রসারণ
অধিদপ্তর উপ-পরিচালক মো.
বিউল হক মজুমদার বলেন,
এই জেলার মোট ৯টি উপজেলায় প্রায় ৪০ হেক্টর
বা ৩শ' বিঘা জমিতে
ভোজ্য তেল উৎপাদনের লক্ষ্যে
এই প্রথমবারের মতো সূর্যমুখী ফুলের
চাষ করা হচ্ছে। এদের
মধ্যে নবীনগরে রয়েছে ৪০ বিঘা, আশুগঞ্জে
রয়েছে ২০ বিঘা, সরাইলে
রয়েছে ২০ বিঘা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
সদরে রয়েছে ৮০ বিঘা,
কসবায় রয়েছে ২০ বিঘা,
নাসিরনগরে রয়েছে ৪০ বিঘা,
বাঞ্ছারামপুরে রয়েছে ৩০ বিঘা,
আখউড়ায় রয়েছে ২০ বিঘা
ও বিজয়নগরে রয়েছে ৩০ বিঘা
জমিতে সূর্যমুখী চাষ করা হচ্ছে।
এতে করে এই উপজেলাগুলোর প্রায় তিনশ' জনেরও উপরে কৃষক
সুবিধাভোগী হচ্ছে।
তিনি আরও জানান,
৯০ থেকে ১০৫ দিনের
মধ্যেই কৃষকরা বীজ ঘরে
তুলতে পারবেন সূর্যমুখী ফুল চাষের। যদি কোন
প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ
বা অন্য কোন প্রকার ক্ষতি না
হয় তাহলে ছয় থেকে
থেকে সাড়ে ছয় মণ
সূর্যমুখী ফুলের বীজ পাওয়া
যাবে প্রতি বিঘা জমিতে ।
আর প্রায় ১৮ কেজি তেল পাওয়া যাবে এক মণ
বীজ থেকে ।২৮০ টাকা দামে
প্রতি কেজি তেল বাজারে বিক্রি
করা যায়। এই বীজ থেকে তেল
ছাড়াও খৈল দিয়ে মাছের
খাবার এবং গাছ জ্বালানি
হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়
রয়েছে বিভিন্ন সূর্যমুখী প্রদর্শনী যায়গা আর সেইখানে গিয়ে দেখা যায়,
ফুটে থাকা হলুদ সূর্যমুখী
ফুলের সমাহার আর এক চোখজুড়ানো মন কারানো দৃশ্যের অবতারণা হয়েছে। চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে হলুদ রঙের ফুলের
মনমাতানো ঘ্রাণ আর তার
উপর মৌমাছির গুঞ্জনে
মুখরিত হয়ে উঠেছে কৃষকের
জমি। এটি যেন কোন ফসলের
জমি নয়, এ এক
দৃষ্টি কেড়ে নেয়া বাগান। এমন মনোমুগ্ধকর
দৃশ্য দেখার জন্য শুধু প্রকৃতি প্রেমীই
নয় বরং যে কারো
হৃদয় কেড়ে নেবে। ইতোমধ্যেই সূর্যমুখী গাছে ফুল
ধরা শুরু হয়েছে।আর চারিপাশেল এই সুন্দর্য দেখতে প্রতিদিন শহরসহ অন্যন্য এলাকা থেকে
সৌন্দর্য প্রিয় মানুষেরা দল বেঁধে আসেন এই সূর্যমুখী ফুলের বাগান দেখতে। অনেকেই বাগানে
শখ করে ক্যামারায় বন্ধি করে রাখেন স্মৃতি হিসেবে।
তবে এই ফুল
চাষের লক্ষ্য শুধু বিনোদন
নয়, মূলত ভোজ্য তেল
উৎপাদনের মাধ্যমে খাদ্য চাহিদা মেটানই
হচ্ছে তাদের মূল লক্ষ্য।
কৃষকরা
জানান, গত পৌষ মাসের
প্রথম দিকে সংশ্লিষ্ট কৃষি
অফিস থেকে বীজ সংগ্রহ
করে চাষ শুরু করেছেন
তারা। একটি পরিণত সূর্যমুখী
ফুলের গাছ ৯০ থেকে
১১০ সেন্টিমিটার লম্বা হয়ে থাকে।
পরিণত হয়ে ইতোমধ্যেই সূর্যমুখী
গাছে ফুল ধরতে শুরু
করেছে। ফেনীর সোনাগাজীতে সূর্যমুখী
ফুল থেকে তেল তৈরির
কারখানা আছে। তাদের সাথে
আমাদের চুক্তি হয়েছে। আমাদের
উৎপাদিত সূর্যমুখী ফুলের বীজ তারা
কিনবে। কৃষকদের কাছ থেকেই কোম্পানি
সরাসরি বীজ কিনবে।
আশুগঞ্জের
বায়েক গ্রামের সূর্যমুখী ফুলের চাষি সারোয়ার
আলম জানান, আগে বিভিন্ন
ধরনের সবজির চাষ করতেন।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে কৃষি অফিসারের পরামর্শে
পথমবার ৬৬ শতাংশ জমিতে
হাইসান-৩৩ জাতের সূর্যমুখী
ফুলের চাষ করেছি।
0 Comments