কাজের
ব্যস্ততায় পার্লারে বুকিং দেওয়া হয়নি?
কিংবা জ্যামের ভয়ে পার্লারে যাওয়ার
ইচ্ছা নেই? কিন্তু ঈদের
আগে তো একটা ফেসিয়াল
করতেই হবে। তবে
কী করার? ঘরে বসে
করে নিতে পারেন পার্লারে
মত হোয়াইটিং ফেসিয়াল। কোন
বিশেষ অনুষ্ঠানের আগে চেহারায় দ্রুত
উজ্জ্বলতা আনতে বেশ কার্যকর
এই ফেসিয়ালটি। নিয়মিত
এই ফেসিয়াল করলে ত্বকের দাগ
কমতে থাকে। আসুন
জেনে নেয়া যাক কীভাবে
বাড়িতে বসেই হোয়াইটেনিং ফেসিয়াল
করবেন।
কীভাবে বাড়িতেই করে নিতে পারবেন হোয়াইটিং ফেসিয়াল :
হোয়াইটিং ফেসিয়াল
ত্বকে
নতুন গ্ল আনার ক্ষেত্রে এবং প্রাণসঞ্চার আনার
জন্য হোয়াইটিং ফেসিয়ালের সমকক্ষ আর কোন ফেসিয়াল নেই । আসুন দেখি সিলভার ফেসিয়াল
কিট দিয়ে কীভাবে বাসায়
হোয়াইটিং ফেসিয়াল করবেন…
প্রস্তুতিপর্ব
সবার আগে ত্বককে হোয়াইটিং
ফেসিয়ালের জন্য প্রস্তুত করে নেওয়া দরকার। তার
জন্য ত্বকের গভীর থেকে
সমস্ত ধুলোময়লা আর দূষিত পদার্থ
বের করে দিতে হবে।
ধাপ 1: ক্লেনজ়িং
হোয়াইটিং ফেসিয়ালের
প্রথম ধাপটা হল ক্লিনজিং। প্রথমে মুখ পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। এরপর মুখ ও গলায় ক্লিনজিং
মিল্ক দিয়ে ভালভাবে ম্যাসেজ করুন। ৫ মিনিট ম্যাসেজ করার পর অতিরিক্ত ক্লিনজিং মিল্ক
মুছে ফেলুন। বাজারের পণ্য ব্যবহার করতে না চাইলে তৈলাক্ত ত্বকের অধিকারীরা শসা ও শুষ্ক
ত্বক হলে কাঁচা দুধ দিয়ে এ কাজটি সেরে নিতে পারেন।
ধাপ ২: স্ক্রাবিং
এবার,
ঘরোয়া স্ক্রাব দিয়ে ত্বক স্ক্রাবিং
করতে করতে হবে। ত্বকের
মৃত কোষ তুলার জন্য
স্ক্রাবিং খুব জরুরী। সার্কুলার
মোশনে ত্বক ম্যাসেজ করুন
১-২ মিনিট। এরপর
পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে
নিন। আপনি নিজেই ঘরোয়া
কিছু উপাদান দিয়ে ফেসিয়াল
স্ক্রাব তৈরী করতে পারবেন।
তৈলাক্ত
ত্বকের জন্য, এক টেবিল
চামচ মধু, এক টেবিল
চামচ চিনি ও এক
টেবিল চামচ পানি এক
সাথে মিশিয়ে নিন।
সাধারন
ত্বকের জন্য, এক টেবিল
চামচ ওটমিল গুড়া, এক
টেবিল চামচ মধু ও
এক টেবিল চামচ দুধ
এক সাথে মিশিয়ে নিন।
শুষ্ক
ত্বকের জন্য, এক টেবিল
চামচ চিনি, এক টেবিল
চামচ মধু ও আমন্ড
অয়েল একসাথে মিশিয়ে স্ক্রাব
হিসেবে ব্যবহার করুন।
স্ক্রাবিং
করার পর মুখ ধুয়ে
তা বাতাসে শুকানো পর্যন্ত
অপেক্ষা করুন।
ধাপ ৩: ম্যাসেজিং
এবার মুখ ও গলায়
ম্যাসাজ করার জন্য হোয়াইটেনিং
ম্যাসাজ ক্রিম নিন।
ক্রিম খুব ভালভাবে গলা
ও মুখে ম্যাসাজ করুন
১৫-৩০ মিনিট ধরে। ম্যাসাজ
করার সময় কিছুক্ষণ পরপর
আঙ্গুলে হালকা ক্রিম নিয়ে
আঙ্গুল পানিতে ভিজিয়ে তারপর
ম্যাসাজ করবেন। এতে
ম্যাসাজের ধারা বজায় থাকবে। যত
ভালো ম্যাসাজ করতে পারবেন মুখ
তত উজ্জ্বল দেখাবে, কেননা ম্যাসাজ করলে
রক্তপ্রবাহে গতি আসে।
ম্যাসাজ শেষে ত্বক ঠান্ডা
পানিতে ভেজানো রুমাল দিয়ে
মুছে ফেলুন। অথবা
প্রাকৃতিক উপাদান চাইলে ১/২ কাপ আতপ চালের গুঁড়ো, ২ টেবিল চামচ লেবুর রস, ২ টেবিল চামচ টমেটোর রস ও কয়েক ফোঁটা অলিভ অয়েল ভালোভাবে মিশিয়ে মুখের ত্বকে হালকা হাতে স্ক্রাব করে নিন।
ধাপ ৪: স্টিম
ফেসিয়ালের
ক্ষেত্রে স্টিম বেশ জরুরি। এটি
লোমকূপ খুলতে সাহায্য করে
এবং ত্বককে গভীর থেকে
পরিষ্কার করে। প্রথমে
খুব অল্প পরিমাণ বাদাম
তেল সারা মুখে মালিশ
করে নিন। তারপর
বাজারের পাওয়া যায় এমন
স্টিমারের সাহায্যে স্টিম নিন অথবা
মুখ পরিষ্কার করার সময়ই পাত্রে
করে পানি নিয়ে আঁচে
বসিয়ে রাখুন। ক্লেনজ়িং
শেষ হতে হতে পানিটা
ফুটে যাবে। পানি
ফুটে গেলে আঁচ থেকে
নামিয়ে নিন। এবার
মাথায় একটা তোয়ালে ঢাকা
দিয়ে মুখটা জলের ঠিক
উপরে রাখুন যাতে ধোঁয়াটা
মুখের উপর লাগে।
চার-পাঁচ মিনিট এভাবে
থাকুন। তারপর
মুখ সরিয়ে নিয়ে তুলো
দিয়ে মুখ আর গলা
মুছে নিন। সমস্ত
ধুলোময়লা সরে গিয়ে ত্বক
পরিষ্কার হয়ে যাবে।
ধাপ ৫: ব্ল্যাকহেডস পরিষ্কারকরণ
একটা ব্ল্যাকহেডস পরিষ্কারক যন্ত্রের সাহায্যে ব্ল্যাকহেডসগুলো পরিষ্কার করে নিন।
যেহেতু লোমকূপ খোলা আছে
তাই যন্ত্রের হালকা চাপেই উঠে
আসবে ব্ল্যাকহেডস।
ধাপ ৬ : টোনিং
অনেকেই
ভেবে থাকে এর হয়ত
প্রয়োজন নেই। কিন্তু
এ ধারণা ভুল।
যেহেতু স্টিমের মাধ্যমে লোমের গোড়া খোলা
হয়েছে টোনিং-এ তা
বন্ধ করা জরুরি, নয়তো
খোলা পোর দিয়ে ময়লা
ঢুকে ব্রণ সৃষ্টি করতে
পারে। বাজারের
টোনারে অনীহা থাকলে গোলাপ
জল লাগিয়ে নিন।
ধাপ ৭ : ফেসপ্যাক
এবার
হচ্ছে আসল কাজ- হোয়াইটেনিং
মাস্কের ব্যবহার। এবার
হোয়াইটেনিং ফেসপ্যাক তৈরী করুন। আপনারা
অনেকেই হয়তো জানেন জাফরানের
উপকারী দিকসমূহ। তাহলে
এটাও জেনে থাকবেন যে
জাফরানে আছে হোয়াইটেনিং প্রোপার্টি,
যা ত্বকের রঙ উজ্জ্বল
করতে সাহায্য করে।
জাফরানের
আঁশ- ৫-৬টা, টক দই/দুধ/দুধের সর- ১/২ কাপ,
গোলাপের পাপড়ি- ২-৩টা, চন্দন/মুলতানি
মাটি/নিমের(স্পর্শকাতর ত্বক
হলে) গুঁড়ো- ১ টেবিল চামচ, কাঠ বাদামের গুঁড়ো- ২-৩ টা, গোলাপ জল- ১
টেবিল চামচ
জাফরানগুলো
তরল দুধে ২-৩
ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন যতক্ষণ
না এর রঙ হলুদাভ
হয়। এবার গোলাপের পাপড়িগুলো
ভালো করে ধুয়ে নিন।
তারপর পাপড়িগুলোর পেস্ট তৈরি করে
নিন। এবার একে একে
দুধ-জাফরান, গোলাপ পেস্ট, মুলতানি
ও বাদামের গুঁড়ো গোলাপ জলে
গুলিয়ে রাখুন। সুন্দর পেস্ট
তৈরি হয়ে গেলে মুখের
ত্বকে লাগিয়ে ২০-২৫
মিনিট অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে গেলে
কলের ঠান্ডা পানিতে ভালো
করে ধুয়ে ফেলুন। এর সাথে চোখ
বন্ধ রেখে উপরে
পাতলা শসা/আলুর
স্লাইস লাগিয়ে রাখতে
পারেন।
যদি জাফরান না
থাকে তাহলে আরও একটি সহজ উপায় দেওয়া হল যেকোন ত্বকের জন্য
মুলতানি মাটির
পেষ্ট অনেক বেশী
উপকারী। ২
চা চামচ মুলতানি
মাটি ১ চা
চামচ ডিমের সাদা
অংশ ১ চা
চামচ গোলাপজল মুলতানি
মাটি,ডিমের সাদা
অংশ, গোলাপজল ভাল
করে মিশিয়ে পেষ্ট
তৈরি করেন। মুখ
এবং গলায় ভাল
করে প্যাকটি লাগান।
১৫ মিনিট পর
ঠান্ডা পানি দিয়ে
মুখ ধুয়ে ফেলুন।
তৈরী করতে
ঝামেলা মনে হলে
দোকান থেকে যেকোন
হোয়াইটেনিং ফেসপ্যাক
কিনে নিতে পারেনা।
ফেসপ্যাক মুখে
ও গলায় ২০
মিনিট লাগিয়ে রাখুন।
ধাপ ৮ : ময়েশ্চারাইজিং
সব
শেষে ভালো একটি ময়েশ্চারাইজার
দিয়ে ত্বকের আর্দ্রতায়
তালা লাগিয়ে দিন।
0 Comments