মুন্সিগঞ্জ জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ


রাজা বল্লাল সেনের দিঘী বা রামপালের দিঘী



কিভাবে যাওয়া যায়:
ঢাকার পাশের জেলা মুন্সীগন্জের অবস্থান রামপাল ইউনিয়নেই  রাজা বল্লাল সেনের দিঘী বা রামপালের দিঘীর। ঢাকা থেকে মুন্সীগঞ্জের দূরুত্ব মাত্র ২৩ কিলোমিটার  তবে এই দিঘীটি দেখার জন্য আরো ০৫ কিলোমিটার দক্ষিণে আসতে হবে ঢাকা হতে সকালে এসে দিঘীটি দর্শন করে বিকেলেই ঢাকায় ফিরে আসা যাবে সড়কপথে যেতে কষ্ট হবে না কিন্তু নৌপথে গেলে সময়ও বাচঁবে এবং যানজট এড়িয়ে নদী পথের সৌন্দর্য দেখতে দেখতে সাচ্ছন্দের সাথে পৌছানো যাবে সদর ঘাট থেকে মুন্সীগঞ্জ লঞ্চে দিয়ে মাত্র  ঘন্টার মধ্যেই পৌছে যেতে পারবেন মুন্সীগঞ্জ লঞ্চ ঘাটে এখান থেকে  আবার রিক্সায় যেতে হবে রামপাল ইউনিয়নের রামপাল কলেজ তার পাশেই রয়েছে  রাজা বল্লাল সেনের দিঘী বা রামপালের দিঘী দেখতে যাওয়া যায় ভাড়া মাত্র ৩৫-৪০ টাকা

কিছু কথা:
বল্লাল সেন ধার্মিক (প্রচুর মন্দির গড়েন)  ছিলেনএবং সে তার মাকে খুব ভালবাসতেন তিনি মাতৃভক্ত ছিলেন। প্রজাদের পানীর কষ্ট দুর করতে চান সে তার কাছের সবার কাছে পরামর্শ চাইলেন। পরামর্শদাতার নাম ছিল রামপাল আর তার নাম অনুসারে এই যায়গার নাম করন করা হয় এখনও রামপাল, পঞ্চবটি এই সব ঐতিহাসিক গ্রামগুলো এখনো টিকে আছে রাজা বল্লাল সেন একদিন ঘোষনা দিলেন একরাতের মাঝে তার মা যতোটা রাস্তা পায়ে হাটতে পারবেন উনি ততোবড় দীঘি খনন করবেন রাজা ভেবেছেন তার বৃদ্ধা মা কতোটুকুই বা আর হাটতে পারবে রাতে রাজমাতার হাটা দেখে বল্লাল সেন অবাক হয়ে গেলেন এবং আতঙ্ক হয়ে পরলেন ।তিনি দেখেন তার মাতা হন হন করে হাটা শুরু করে বিশাল এলাকা ক্রস করে ফেললেন বল্লাল সেন তার মায়ের পথরোধ করলেন  ছলনার মাধ্যমে পরে বিশাল এলাকা খনন করলেন কিন্তু মায়ের সাথে ছলনার ফলে দিঘিতে পানি আসে না বল্লাল সেনের প্রেস্টিজ শেষ প্রজাদের সামনে মন্ত্রি রামপাল জানালেন দিঘিতে প্রান বিসর্জন দিলে পানি আসবে (দিনাজপুরের রাম সাগরের গল্পটাও অবিকল) রাম সাগরের রাজা রাম নিজের প্রান বিসর্জন দিয়েছিলেন বল্লাল সেনও তাই করতে গেলেন কিন্তু রামপাল তার বন্ধুকে খুব ভালোবাসতেন তাই বন্ধুকে ফাঁকি দিয়ে নিজের প্রান বিসর্জন দিলেন
বল্লাল সেনের সেই  দিঘী টি এখনো আছে কিন্তু এখন আর দিঘি বলে চেনা যায় না কেন না এখন সেই যায়গা টিতে গড়ে উঠেছে  বিশাল একটা নিচু জায়গা আর সেইখানে ধুমায় চাষ বাস করা হচ্ছে তবে বর্ষায় নাকি পুরো দিঘিতে পানি থাকে

সেন বংশের শেষ হলো কিভাবে? রাজা বল্লাল সেন (মনে হয় উনি শেষ বল্লাল সেন, ) প্রচন্ড ধর্মান্ধ ছিলেন তার রাজ্যে তেমন কোন মুসলিম ছিলনা সেইখানে শূধু একজন মুসলীম প্রজা ছিলেন আর সেই মুসলিম টির  কোন সন্তান হয় না একদিন এক ফকির তার বাসায় ভিক্ষা চাইতে লে, এবং এই কথাটি বলায় আল্লাহ তোমার মনের আশা পুর্ন করবে সেই গৃহস্থ প্রচন্ড রাগ করে বলে তোমাকে ভিক্ষা দিবো না  আমার কোন পুত্র সন্তান হয় না। তুমি ভন্ড ফকির

সেই ফকির তখন বললেন আমি দোয়া করলাম বাচ্চা তোমার একটি পুত্র সন্তান হবে কিন্তু একটি সর্ত হলো সন্তান হলে তুমি অবশ্যই আল্লাহর নামে একটা গরু কোরবানী দিবেসত্যি সত্যি তার এক পুত্র সন্তান হলো। কিন্তু সেই রাজ্যে তখন মানে বল্লাল সেনের রাজ্যে তখন গরু খাওয়া বড় অপরাধ ছিল কাছেই ছিল জঙ্গল সেই গৃহস্থ তখন একটি বুদ্বি বের করল আর সেই মতাবিক লুকিয়ে গরু জবাই দিয়ে হার গোর মাটি চাপা দিল কিন্তু একটি কাক সেই মাংসের টুকরা উড়িয়ে নিয়ে গিয়ে বল্লাল সেনের প্রাসাদে ফেললো বল্লাল সেন তখন অনেকক্ষেপে গেলেন (লক্ষ্যনীয় মহাস্থান গড়ের লোক কথার সাথে যথেষ্ট সাদৃশ্য) সেই মুসলমান প্রজাকে ধরা হলো বল্লাল সেন আদেশ করলেন তুমি ছেলে হওয়াতে গরু কুরবানী করেছ তুমি জাননা হিন্দুদের কাছে গরু প্রচন্ড শ্রদ্ধার জিনিস এখন গরুর বদলে তোমার সদ্যজাত পুত্রকে হত্যা করা হবে পুত্রকে বাচাতে সেই গৃহস্থ পালিয়ে গেলেন পালাতে পালাতে উনি পবিত্র মক্কা শরীফে গেলেন মক্কা শরীফে বাবা আদম নামের একজন ধার্মিক পীর সব ঘটনা শুনে অনেক রাগ করলেন বাবা আদম সাড়ে সাতহাজার মুরীদ নিয়ে বিক্রমপুর আসলেন এখানে উনারা সবাই এক সাথে শব্দ করে আজান দিয়ে নামায পড়া শুরু করলেন উনি এজন্যে এখানে একটা মসজিদ ও  নির্মান করেন অঞ্চলের প্রথম মসজিদ হয়  সেটি  তাই এই মসজিদটির নাম দেওয়া হয় বাবা আদমের মসজিদ বল্লাল সেন তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করলেন
বল্লাল সেনের সেনাবাহিনীর সংখা ছিল অনেক বড় তারপরেও উনি প্রাসাদে বলে রেখেছিলেন সে যদি মারা যাই প্রাসাদের সব মহিলারা যেন সুইসাইড করে নেয় তবুও যেন কারও হাতে ধরা না দেয়  রানীরা তাকে জিজ্ঞেস করলো, কিভাবে আমরা তারা বুঝবে যে উনি  মারা গেছে।  উনি জানালেন তার জামার ভেতরে একটা কবুতর লুকিয়ে রাখবে আর উনি মারা গেলে সেই কবুতর ছাড়া পেয়ে উড়ে আসবে আর তা দেখে যেন তার পরে সব মহিলারা গন সুইসাইড করবে যুদ্ধে মুসলমানরা হেরে গেল বাবা আদম তিনি অনেক ধার্মিক ছিলেন তিনি যুদ্ধ ক্ষেত্রেও নামায পড়ছিলেন কিন্তু বল্লাল সেনের সৈন্যরা তার চুল পরিমান ক্ষতি করতে পারলো না বাবা আদম নামায শেষ করার পর বল্লাল সেনের সঙ্গে মুখো-মুখি লড়াই হলো বাবা আদম তখন এক পর্যায় বললেন আমার আল্লাহর ইচ্ছে আমি  মারা যাব তোমার হাতে নও চালাও তলোয়ার বল্লাল সেন তরবারী চালালেন কিন্তু তার তরবারী উনাকে একটুও আহত করতে পারলো না আবারও বাবা আদম বললেন শুন আল্লাহ চান না  আমার মৃত্যু হোক কোন কাফিরের তলোয়ারে তুমি আমার তলোয়ার নিয়ে আমাকে মারও   এবারে বাবা আদমের তলোয়ার নিয়ে রাজা বল্লাল সেন  তাকে আঘাত করলেন। আর তখনই  বাবা আদম শহীদ হন বাবা আদমের মসজীদের পাশেই তার মাজারে উনার কবর মসজিদটা দুর্দান্ত সুন্দর গেলেই পবিত্র অনুভতি হয় জায়গাটার নাম সিপাহীপাড়া এখানেই বাবা আদম বল্লাল সেনের সাথে লড়াই করেন বাবা আদমকে হত্যার পর গায়ে লেগে থাকা রক্ত ধুতে বল্লাল সেন নদীর পানিতে ঝুকেন ঝোকার ফলে চান্স পেয়ে উনার কবুতরটা পালিয়ে যায় বল্লাল সেন বিপদ বুঝতে পেরে দ্রুত প্রাসাদে ফেরেনততোক্ষনে দেরী হয়ে গেছে কবুতর দেখে রানীরা সবাই বিশাল অগ্নিকুন্ড জ্বালিয়ে তাতে আত্মাহুতি দেন শোকে দুঃখে কাতর বল্লাল সেন নিজেও আত্মহত্যা করেন
বল্লাল সেনের মৃত্যুর কারন তিনি নিজেই আর তার হাতেই নিহত বাবা আদম লড়াইয়ে পরাজিত হয়েও উনি জয়ী বল্লাল সেনের মৃত্যুর পরে বৌদ্ধরা আবার সিংহাসনে বসে কিন্তু বেশী দিনের জন্যে না মুসলমানরা আসা শুরু করেছে খুব দ্রুত ক্ষমতা চলে যায় তাদের হাতে

 মুন্সীগঞ্জে প্রভাবসালীদের সাথে প্রশাসনের কিছ অসাধু কর্মকর্তাও জড়িত

মুন্সীগঞ্জের কিছূ প্রভাব সালীদের ও অসাধু কমকতা দের দাপটে দখলছাড়া হয়ে যাচ্ছে প্রাচিন বিক্রমপুরের রাজা বল্লাল সেনের এই ঐতিহ্যবাহী রামপাল দিঘীটি দিঘীটির চার পাশে নির্মান হচ্ছে বড় বড় ঘড় বাড়ী। আর এতে করে হারিয়ে যেতে শুরু করেছে মুন্সীগন্জের তথা প্রাচিন বিক্রমপুরের ইতিহাস ঐতিয্য  দলি্লের অবস্থাতে গিয়ে দেখাগেছে, প্রায় ২২ শত ফুট দৈর্ঘ শত ফুট প্রস্থে এই বিশাল আকৃতির দিঘীটি একে বারে দখলের বাইরে আর কারনে ধিরে ধিরে সংকুচিত হয়ে আসছে  দিঘীটির আয়াতন সংকুচিত হয়ে প্রায় অর্ধেক হয়েগেছে যেখানে একটি বিশাল আকৃতির দিঘি দিঘীর চার পাড়ে নির্মান করা হচ্ছে কাচা-পাকা ঘড় বাড়ী ‍
স্থানীয় জনগন অভিযোগ করে যখন যে সরকার মতায় আসে সেই সরকারের লোকজন স্থানিয় ভূমি অফিসের অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজেশে শুরু হয় দিঘীর পার দখলের প্রক্রিয়া পরে ধিরে ধিরে শুরু হয় দিঘীর ভূমি দখলের কাজ বর্তমানে দিঘীর দনি-পূর্ব পাড় দখল করে মাটি দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে এবং ঠিক তার উল্টো পাড়ে নির্মান করা হচ্ছে বিশাল আকৃতির বহুতল ভবন
আর বিগত কিছু দিনের মধ্যে দিঘীর পশ্চিম পারে নির্মান করা হয়েছে আরো একটি দ্বিত্বল ভবন একাজে কেউ বধা প্রদান করলে তাদের মার ধর করার হুমকি দেয় ভূমি দস্যুরা এবং জায়গা নিজেদের বলে দাবী করে ইতিহাস থেকে জানা গেছে মুন্সীগঞ্জ তথা বিক্রমপুরের ঐতিহ্যের মধ্যে বাবা আদম শাহী মসজিদ, ইদ্রাকপুর কেল্লা, বজ্রোযোগীনি তে অতিস দিপংকর এর বাড়ী, টঙ্গীবাড়ীর কালীবাড়ী, সোনারং এর জোরা মঠ, আউটশাহীর শাহী মসজিদ, রাজা বল্লাল সেনের রাম পাল দিঘী, কোদাল ধোয়া দিঘী রাজা বল্লাল সেনের বাড়ী অন্যতম এগুলির প্রত্যেকটিরই আলাদা আলাদা ইতিহাস রয়েছে
লোক মুখে শোনা যায় রাজা বল্লাল সেনের দিঘীটির ইতিহাস এটি একটু ভিন্ন রকম সেই এলাকার বৃদ্বদের মুখ থেকে জানা গেছে, যে একটি সময় প্রাচিন বিক্রমপুরের রাজধানী রামপাল অঞ্চলে খুব পানির সমস্যা ছিল আর তাই রাজা বল্লাল সেনের মা অঞ্চলের পানির সমস্যা দুর করার জন্য একটি বড় ধরনের পানির উৎস খনন করার নির্দেশ দেয়  রাজা বল্লাল সেন ছিল মায়ের খুব ভক্ত মায়ের নির্দেশ পালনের জন্য বড় দিঘী খননের উদ্দেগ নেন তিনি কিন্তু কথা হচ্ছে কত টুকু হবে দিঘীর দৈর্ঘ প্রস্থ তা নির্ধারন করার জন্য সির্ধান্ত নিলেন তার মা সকাল থেকে পায়ে হেটে যেখানে গিয়ে কালান্ত হয়ে বসবেন সেটা হবে দৈর্ঘ আর তার পর প্রস্থে যতটুকু যেতে পারবেন সেটা হবে প্রস্থ
এইভাবে দৈর্ঘ ও প্রস্থ নির্ধারনের পরে কয়েক হাজার শ্রমীক দিয়ে কাজ করা শুরু করে  দিঘীটি খনন করেন। আর  সময় শ্রমীকরা কাজ শেষ করে কোদাল ধোয়ার জন্য যে যায়গা টা তৈরী করে সেটি  হলো এখন কোদাল ধোয়ার দিঘী নামে পরিচিত রাজা বল্লাল সেনের দিঘী দখল সম্পর্কে বলা হলে দিঘীর পাশে বসবাস কারীরা দাবী করেন দিঘীর জায়গায় নয় এটি তারা নিজেদের ব্যাক্তি মালিকানা জায়গায় ঘড় বাড়ী নির্মান করছেন ৃতবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে রামপাল এলাকার একাধিক ব্যাক্তি জানান, যারা দিঘীর পারে ঘর-বাড়ী নির্মান করছে তারা দিঘীরপারে জায়গাটি নিজেদের জায়গা বলে দাবী করছে

তারা ভূমি অফিসের অসাধূ কর্মকর্তাদের টাকা দিয়ে প্রভাব সালীদের মতার বলে জায়গা গুলি দখল করে নিচ্ছে বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক আজিজুল আলম জানান, দিঘীর জায়গা দখল সমম্পর্কে আমার কিছুই জানা নেই আসলে এসব ঐতিহ্যবাহী জায়গা গুলি প্রশাসনের একার পে রা করা সম্ভব নয় গুলি রায় স্থানীয় বাবে জনসচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে কেউ যদি দিঘীর জায়গা নিজের বলে দাবী করে তাহলে তার কাগজ পত্র দেখা হবে আর কেউ যদি সরকারী ভূমি দখল করে তাহলে তাদের কে ছাড় দেওয়া হবে না রাজা বল্লাল সেনের দিঘী রার জন্য তিনি খূব দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের আস্বাশ দেন সর্বপরি প্রাচিন বিক্রমপুরের ইতিহাস ঐতিহ্যকে রা করতে হলে সমস্ত ভূমি দস্যুদেরকে কঠোর হস্থে দমন করতে হবে বলে মনে করে অভিঙ্গ মহল

হযরত বাবা আদম শহীদ (.) এর মসজিদ



কিভাবে যাওয়া যায়:
ঢাকার নিকটবর্তী জেলা হলো মুন্সিগন্জ। এইখানে রয়েছে অনেক ইতিহাস তার মধ্যে একটি   হযরত বাবা আদম শহীদ (.) এর মাজার এবং মসজিদটি মুন্সীগন্জের রামপালে রয়েছে। মাত্র ২৩ কিলোমিটার দূরুত্ব ঢাকা থেকে মুন্সীগঞ্জের কিন্তু  আরো ০৫ কিলোমিটার ভিতর দিয়ে যেতে হবে এই মাজারে যাওয়ার  জন্য। ঢাকা হতে সকালে রওনা হলে ১২ টার মধ্যে এসে মাজার জিয়ারত মসজিদ দর্শন করে বিকেলে বিকেলেই ঢাকায় ফিরে আসা যাবে।  কষ্ট হবে না সড়কপথে যেতে। তবে নৌপথে গেলেকিছু াঝামেলা থেকে বেচেঁ যাবেন যেমন: সময়ও বাচঁবে এবং যানজট এড়িয়ে নদী পথের সৌন্দর্য অবগাহন করে স্বাচ্ছন্দের সাথে পৌছানো যাবে। সদর ঘাট থেকে মুন্সীগঞ্জ গামী লঞ্চে ঘন্টার মধ্যেই পৌছে যাওয়া যাবে মুন্সীগঞ্জ লঞ্চ ঘাটে। মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা হইতে রিক্সায় দরগাবাড়ি হযরত বাবা আদম শহীদ (.) এর মাজার সংলঘ্ন মসজিদ যাওয়া যায়। ভাড়া ২৫-৩০ টাকা

বাবা আদমের মসজিদ  মাজার

বিক্রমপুরের ইতিহাসে লিপিবদ্ব রামপাল গ্রামের নিকটস্থ কাজী কসবা গ্রামে একটি ছয় গম্বুজ বিশিষ্ট 
মসজিদটি রয়েছে এটি হলো সুলতানী আমলের।একটি মাজার রয়েছে এর গজ কয়েক পূর্বে ২৫ (পঁচিশফুট বাহুবিশিষ্ট আয়তনের ইটের তৈরী মঞ্চের উপর একটি পাকা সমাধি বিশেষ ভাবে রয়েছে এই মাজারটি এটি বর্গাকার সমাধির উপর। 
আয়তাকার ভিত্তি ভূমির উপর মসজিদটি প্রতিষ্ঠিত মসজিদটি আয়তন উত্তর-দক্ষিণে ৪৩ ফুট এবং পূর্ব-পশ্চিমে ৩৬ ফুট অষ্ট কোণাকৃতির বুরুজ বা মিনার রয়েছে  চার কোণায় চারটি  ছাদের কার্ণিশের উপর উঠেনি মিনারটি  মনোরম বলয়াকারের স্ফীত রেখায় অলংকরণের কাজ আছে মিনারের ধাপে ধাপে

তিনটি
অর্ধবৃত্তাকার অবতল মেহরাব রয়েছে পশ্চিম দেয়ালে  বাইরের দিকে উদগত  কেন্দ্রী মেহরাবের পেছন দিকের দেয়ালটি ধনুকাকৃতির খিলানবিশিষ্ট তিনটি প্রবেশপথ রয়েছে সামনের দেয়ালে এবং এতে  আয়তাকারে নির্মিত যে সব ফ্রেম আছে তার চূড়ার দেশে অনেক সুন্দর কারুকাজ রয়েছে গভীর সমতল কুলুঙ্গী রয়েছে প্রধান প্রবেশ পথের দুই পাশে উপরিভাগ সুন্দরভাবে খাঁজকাটা ঝুলন্ত শিকল ঘন্টার অলংকরণ রয়েছে মসজিদে কোন বারান্দা নেই  গ্রানাইট পাথরে নির্মিত দুইটি স্তম্ভ অভ্যন্তর ভাগে আছে এই দুইটি স্তম্ভের সাহায্যে পূর্ব পশ্চিমে দুই সারিতে এবং উত্তর-দক্ষিণে তিন সারিতে বিভক্ত রয়েছে অভ্যন্তর ভাগ  স্তম্ভ দুইটির মাঝ থেকে অষ্টকোণাকৃতি প্রায় (চার) ফুট পর্যন্ত  এবং ষোলকোণাকৃতি এর পর এই দুইটি স্তম্ভ এবং চারপাশের দেয়ালের উপর মসজিদের অর্ধবৃত্তাকার ছোট ছোট গম্বুজ ছয়টি স্থাপিত গম্বুজ মসজিদের অভ্যন্তর-ভাগের মতোই পূর্ব-পশ্চিমে দুই এবং উত্তর-দক্ষিণে তিন সারিতে বিভক্ত দেয়াল অতিশয় পুরুপ্রধান মেহরাবটি এবং দুই পাশের দুই মেহরাব পাশের দেয়াল লতাপাতা, জ্যামিতিক নক্সা গোলাপফুল, ঝুলন্ত প্রদীপ শিকল প্রভৃতি অত্যন্ত সুন্দর পোড়ামাটির চিত্র ফলক দিয়ে অলংকৃত মসজিদের বাইরের দিক বিশেষ করে সামনের দেয়াল অতি সুন্দর পোড়ামাটির চিত্রফলক দিয়ে অলংকৃত ছিল কেন্দ্রীয় প্রবেশপথের দুইপাশে কিছু কিছু চিত্রফলকের কাজ এখনও চোখে পড়ে
এক সময়ে মানত হাসিলের জন্য হিন্দু-মুসলিম উভয় সমপ্রদায়ের মহিলাদের দ্বারা এই মসজিদের স্তম্ভ দুইটি সিন্দুরানুলিপ্ত হয়ে রক্তবর্ণ ধারণ করেছিল
আমাদের আলোচ্য এই মসজিদটি দরগাবাড়ীর মসজিদ বা বাবা আদমের মসজিদ এবং মাজারটি বাবা আদমের দরগা নামে পরিচিত বাবা আদম সম্পর্কে বিক্রমপুরে বহু জনশ্রুতি প্রচলিত রয়েছে তবে জনশ্রুতিগুলোর সবাই বাবা আদম বল্লাল সেনের যুদ্ধ সম্পর্কীত

জনশ্রুতিগুলো নিম্নরূপঃ
 রাজা বল্লাল সেন ছিলেন বিক্রমপুরের মহাপরাক্রমশালী ঘোর তান্ত্রিক তিনি ধর্মীয় অধীরতায় বশবর্তী হয়ে মসজিদ গুলোকে মন্দিরে পরিণত করেন এবং সেইখানে গরু জবেহ আযান দিয়ে নামাজ পড়া নিষিদ্ধ করেন দেন একদিন রামপালের কাছের এলাকা আব্দুল্লাহপুর গ্রামের কানাইচং মাঠের জনৈক মুসলমান তার পুত্রের জন্ম উপলক্ষে অনেব গপোনে গরু জবেহ করেন কিন্তু দুর্ভাগ্য হলে যা হয় আরকি একটি চিল ছো মেরে এক টুকরো মাংস নিয়ে ফেলে দেয় বল্লাল সেনের রাজপ্রাসাদের আঙ্গিনায়  এইটা দেখে রাজা বল্লাল সেন অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হয়ে গরু হত্যা কারিকে খোঁজে বের করার জন্য গুপ্তচর নিয়োগ করেন বল্লাল সেনের নির্যাতনের ভয়ে উক্ত গোহন্তা সেইখান থেকে পালিয়ে গিয়ে মক্কায় হাজির হন
তখন  বাবা আদম নামক এক ধর্মান্ধ জবরদস্ত ফকীর ছিলেন মক্কায় উক্ত ব্যক্তি বল্লাল সেনের নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বাবা আদমের শরনে যান সেই সময়ের বল্লাল সেনের কর্তৃক মুসলিম নির্যাতনের কাহিনী দরবেশকে সম্পুন বলেন তখন বাবা আদম বিক্রমপুরকে রাজার অধীনতা থেকে তাদেরকে উদ্ধার করবেনই করবেন। আর এই উদ্দেশ্যে বাবা আদম মুহুতের মধ্যে  (সাত) হাজার সৈন্য সংগ্রহ করেন এবং এই সৈন্যবাহিনী নিয়ে তিনি মক্কা থেকে বিক্রমপুরের উদ্যেশে দীর্ঘ যাত্রা শুরু করেন পথে পথে অনেক যুদ্ধ করেন এবং জয়ে লাভ ও করেন অবশেষে তিনি এবং তার সৈন্য বাহিনী রামপালের উপকন্ঠে দরগাবাড়ি বল্লাল রাজার রাজধানীতে এসে ঘাঁটি গাড়েন সেই সময় সেইখানে একটি মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন এবং সেই মসজিদটির নামকরন করা হয় তার নামে। মসজিদটি নামকরণ করেন বাবা আদমের মসজিদ এই মসজিদটিকে কেন্দ্র করেই শুরু হয় বাবা আদমের ইসলামী আচার অনুষ্ঠান প্রকাশ্যেই পালন করা। আজান দিয়ে নামাজ পড়া থেকে শুরু করে অনেক ষাঁড় গাভী জবে করা হতে থাকে এই আজানের শব্দ বল্লাল সেনের রাজপ্রসাদের মধ্যে গিয়ে পৌঁছে এতে বল্লাল সেন অনেক ক্রুদ্ধ হয়ে পড়েন এবং নবাগত মুসলিম সৈন্যবাহিনীর নেতা বাবা আদমের কাছে কয়েকটি দাবী রেখে দূত পাঠান দূত আসেন বাবা আদমের নিকট এবং তাকে বলেন, “হয় তো তোমরা বিক্রমপুর ছাড় নয় প্রতিমাপূজক বিরোধী আচার অনুষ্ঠান প্রতিপালন থেকে বিরত হওকিন্তু অলৈকিক ক্ষমতাসম্পন্ন দরবেশ বাবা আদম এতে দমাবার পত্র নন তিনি তার অসংখ্য ভক্তের সমর্থনে নিশ্চিত হয়ে পরাক্রমশালী বলাল সেনের কাছে এক ঔদ্ধত্বপূর্ণ উত্তর পাঠালেন তিনি বললেন, “একমাত্র আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন উপাস্য নেই এবং মোহাম্মদ (দঃ) তার রসূল এইখান কার রাজা বল্লাল সেন আপনি যাই বলুন না কেন আর যাই করুন না কেন আমাদের ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান প্রতিপালন থেকে এক চুল পরিমাণও বিরত হবনা আমি এবং আমার সমর্থনরা এহেন ঔদ্ধত্বপূর্ণ উত্তরে বাধ্য হয়েই বলাল সেন সৈন্য সংগ্রহ করে বাবা আদমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ যাত্রা করলেন তবে পূর্ব থেকেই বিভিন্ন রণাঙ্গনে মুসলিম সৈন্য বাহিনীর বিজয় পরাক্রমের কাহিনী অবহিত থাকাতে পরাজিত হলে যাতে শত্রুর হাতে বন্দী হয়ে মানসম্ভ্রম খোয়াতে না হয় সে জন্য তিনি আগেভাগেই ব্যবস্থা করে রেখে যান তিনি সাথে করে একটি কবুতর নিয়ে যান এবং বলে যান যে, পায়রাটি একা রাজপুরীতে ফিরে এলে রানী এবং রাজপরিবারের অপরাপর সদস্যগণ যেন মনে করেন যে রাজা যুদ্ধে পরাজিত নিহত হয়েছেন আর তারাও যেন জাতিধর্ম রক্ষার জন্য অমনি জ্বলন্ত অগ্নিকুন্ডে আত্মবিসর্জন দেন এই উদ্দেশ্যে পূর্ব থেকেই রাজপুরীতে একটি অগ্নিকুন্ড প্রজ্বলিত ছিল রাজধানী রামপালের মাইল দুই দূরবর্তী কানাইচঙ্গের মাঠে প্রত্যুষকালে থেকে তৃতীয় প্রহর পর্যন্ত এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হয় বল্লা সেন বাবা আদমকে নিহত করেন বল্লা যুদ্ধে জয়ী হয়ে রক্তমাখা দেহ ধোয়ার জন্য যেই পার্শ্ববর্তী জলাশয়কাঁছারীর দীধিতেঅবতরণ করেন অমনি দৈবক্রমে পায়রাটি বস্ত্রাভ্যন্তরে থেকে উড়ে গিয়ে রাজপুরীতে পৌঁছে আর তক্ষুণি রাণী রাজপরিবারের অপরাপর সদস্যবৃন্দ রাজার পরাজয় মৃত্যু আশঙ্কা করে সেই জ্বলন্ত অগ্নিকুন্ডে আত্মবিসর্জন দিলেন এদিকে বল্লাল সেনও পায়রা ছুটে যাওয়া মাত্রই যুদ্ধ ক্ষেত্র থেকে পাগলের মতো রাজধানী রামপাল অভিমুখে ছুটে এলেন কিন্তু ইতিমধ্যে সবাই শেষ হয়ে গেছে এই শোক সহ্য করতে না পেরে রাজাও একই চিতায় ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মহুতি দিলেন ফলে বিক্রমপুর মোসলমানদের হস্তগত হল  তৎকর্তৃক নির্মিত মসজিদের কয়েক গজ পূর্বে শহীদ দরবেশ বাবা আদমকে সমাহিত করা হল  আর তখন থেকেই সমাধিটির নাম হল বাবা আদমের দরগা আর মসজিদটির নাম হল বাবা আদমের মসজিদ 

ইদ্রাকপুর কেল্লা


কিভাবে যাওয়া যায়:
মুন্সীগঞ্জ নগর/কার্যালয় এর কাছেই রয়েছে পুরাতন কোর্ট অফিস এবং তার উপর পাশেই রয়েছে ইদ্রাকপুর  কেল্লাটি  ঢাকার গুলিস্তান বা ফুলবাড়িয়া থেকেঢাকা ট্রান্সপোর্টবাদিঘীরপাড় ট্রান্সপোর্ট” বা অন্যান্য এই রোডে আসা বাসে চড়ে  মুক্তারপুর আসতে হবে মুক্তারপুর থেকে রিক্সা যোগে ২০-২৫ টাকায় বা  অটো রিক্সায় ১০ টাকা (জন প্রতি)  ইদ্রাকপুরের কেল্লায় যেতে পারবেন 
সংক্ষিপ্ত :
 ইদ্রাকপুর কেল্লাটি রয়েছে মুন্সীগঞ্জশহরের প্রান কেন্দ্রস্থলে। সুবেদার মীর জুমলা এবং মোঘল সম্রাটআওরঙ্গজেবের আমলে সেনাপতি বাংলার কর্তৃক ১৬৬০ সালেবিক্রমপুরের এই অঞ্চলে একটি  দুর্গ নির্মিত হয় যার নাম দেয়া হয় ইদ্রাকপুর কেল্লা  সে সময় এই দূর্গটি নির্মিত হয় মুলত মগ জলদস্যু পর্তুগীজদের আক্রমন হতে এলাকাকে রক্ষা করার জন্য  এমন শুনা যায় যে  দূর্গের সাথে ঢাকার লালবাগের দূর্গের সুড়ঙ্গপথে যোগাযোগ ছিল শত্রুদের উদ্দেশ্যে গোলা নিক্ষেপের জন্য রয়েছে দূর্গটির দেয়ালে অসংখ্য ছিদ্র  প্রাচীন যুগের এই দুর্গটির চারকোণায় একটি করে গোলাকার বেস্টনী রয়েছে  এই দূর্গটি পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষিত হয় ১৯০৯ সালে এলাকায় এস.ডি. কুঠি হিসাবে পরিচিত বহু উচ্চ প্রাচীর বেষ্টিত এই গোলাকার দূর্গটি


বিস্তারিত : ইদ্রাকপুর কেল্লা
বিক্রমপুরের মুন্সীগঞ্জ জেলার অতিতের ইতিহাসের সাক্ষীর অনেক ইমারতের মধ্যে একটি হলো ইদ্রাকপুর কেল্লা মুঘল শাসনামলে বিখ্যাত বারোভূঁইয়ারা বাংলারবিভিন্ন অঞ্চলে স্বাধীনভাবে দেশ শাসন করতেন চাঁদ রায়কেদার রায় বারো ছিলেন ভূঁইয়াদের মধ্যে অন্যতম আর তারা ছিলেন বিক্রমপুরের । আর এদের চাঁদ রায়-কেদার রায়দের শায়েস্তা করার লক্ষ্যেই মুলত মুন্সীগঞ্জের ইদ্রাকপুর নামক স্থানে একটি কেল্লা নির্মাণ করা হয় ।আর এটি করেন মুঘল ফৌজদার  ১৬১১খ্রিধলেশ্বরী-ইছামতির সংযোগ এ চাঁদ রায় ডাকচেরা যাত্রাপুর দূর্গ হারিয়ে পরাজিত হন আর এই সময় সমগ্র বিক্রমপুর মুঘলদের শাসনে চলে আসে বিশাল বিক্রমপুরকে মুঘলদের  কাছে রাখতে এবং ইংরেজ সৈন্যদের হাত থেকে বাংলার রাজধানী ঢাকাকে রক্ষা করার জন্য মুন্সীগঞ্জের ইদ্রাকপুর নামকস্থানে  ১৬৬০ খ্রিএকটি দূর্গ বা কেল্লা নির্মাণ করেন মুঘল সুবেদার মীর জুলমা। এই কেল্লাটি লালবাগের চেয়ে ছোট কিন্তু এর গুরুত্ব ছিল অনেক বেশি ১৬৬০ সালে ইদ্রাকপুর এলাকাটি ইছামতি-ধলেশ্বরী, ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা ও শীতলক্ষ্যার একত্র হওয়ার যায়গা ছিল কিন্তু এখন এই নদি গুলো মেঘনা-ব্রহ্মপুত্র, ইছামতি ধলেশ্বরীর গতি পরিবর্তনের ফলে এখন মুন্সীগঞ্জ শহরের কেন্দ্রস্থল মাকহাটী-কাচারী সড়কের পশ্চিম পাশে কোর্টগাঁও এলাকায় অবস্থিত চতুর্দিকে প্রাচীর দ্বারা আবৃত দূর্গের মাঝে মূল দূর্গ ড্রামের মধ্যে দূর্গের প্রাচীর শাপলা পাপড়ির মতো প্রতিটি পাপড়িতে ছিদ্র রয়েছে ছিদ্র দিয়ে কাঁসার ব্যবহার করা হতো দূর্গের উত্তর দিকে বিশালাকার প্রবেশদ্বার রয়েছে সিঁড়ি দিয়ে মূল দূর্গের চূড়ায় উঠা যায় মূল ভূমি হতে ২০ ফুট উঁচু দেয়ালের বর্তমান উচ্চতা প্রায় / ফুট প্রাচীরের দেয়াল - ফুট পুরো দূর্গে প্রবেশদ্বারের উত্তর পাশে একটি গুপ্ত পথ রয়েছে কথিত আছে, গুপ্ত পথ দিয়ে লালবাগ কেল্লায় যাওয়া যেত এর সত্যতা পাওয়া যায়নি তবে গুপ্ত পথ দিয়ে লালবাগ কেল্লায় নয়, অন্য কোথাও পালানো যেত ২১০ দৈর্ঘ্য ২৪০ ফুট আয়তনের দূর্গখানি এখনও অক্ষত অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে ইদ্রাকপুর কেল্লা খুব সম্ভবত ১৬৫৮ সালে নির্মাণ কাজ শুরু হয় এবং ১৬৬০ সালে তা শেষ হয় কেল্লাটি দুই ভাবে বিভক্ত- পশ্চিমাংশ পূর্বাংশ একটি ফুট উচ্চতার দেয়াল রয়েছে ড্রামের মধ্যখানের বরাবর কামান বসানোর জন্য মোট তিনটি মঞ্চ রয়েছে প্রাচীরের উত্তরপাশে তবে দক্ষিণ পাশেও থাকার কথা ছিল তিনটি  কিন্তু সেখানে রয়েছে ২টি  
উত্তর পাশে রয়েছে দূর্গে প্রবেশের মূল পথটি আবদুল্লাপুরে মঙ্গত রায়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালিত হয়েছিল এই দূর্গটি হতে  এই যুদ্বে মীর জুমলার সেনাপতি সদলি খান মগ রাজা মঙ্গত রায় উভয়েই মারা যান  শাহ সুজার সেনাপতি ছিলেন মঙ্গত রায় বলে অনেকে ধারণা করেন আবুল হোসেন নামের  একজন সেনাধ্যক্ষ  ইদ্রাকপুর কেল্লায় সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকতেন কিনি ছিলেন নৌ বাহিনীর প্রধান তার নিয়ন্ত্রণে পদ্মামেঘনাধলেশ্বরী  ইছামতির তীরে প্রায় ২০০ নৌযান প্রস্তুত থাকত যে সব নৌযান থাকত তা হলো কোষা, জলবা, গুরব, পারিন্দা, বজরা, তাহেলা, সলব, অলিল, খাটগিরি মালগিরি ইদ্রাকপুর কেল্লার নিয়ন্ত্রণে থাকত । সদলি খান ছিলেন  ইদ্রাকপুর কেল্লার নিয়ন্ত্রণে যে সব পদাতিক বাহিনী ছিল তার প্রধান এক সময় ইদ্রাকপুর দূর্গে মহকুমা প্রশাসনের বাস ভবন (১৮৪৫-১৯৮৪)ছিল পরবর্তীতে এটা সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ের পুরাতত্ত্ব বিভাগের আওতাভুক্ত হয়


অতীশ দীপঙ্করের পণ্ডিত ভিটা



কিভাবে যাওয়া যায়:

ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলা মুন্সীগঞ্জ মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার বজ্রযোগিনী ইউনিয়েনের বজ্রযোগিনী গ্রামে অতীশ দীপঙ্করের পণ্ডিত ভিটা অডিটরিয়াম অবস্থিত সড়কপথে ঢাকা থেকে মুন্সীগঞ্জের দূরুত্ব মাত্র ২৩ কিলোমিটার তবে অতীশ দীপঙ্করের পণ্ডিত ভিটা অডিটরিয়াম দেখার জন্য আরো ০৬ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে আসতে হবে ঢাকা হতে সকালে এসে অতীশ দীপঙ্করের পণ্ডিত ভিটা অডিটরিয়াম দর্শন করে বিকেলেই ঢাকায় ফিরে আসা যাবে সড়কপথে যেতে কষ্ট হবে না তবে নৌপথে গেলে সময়ও বাচঁবে এবং যানজট এড়িয়ে নদী পথের সৌন্দর্য অবগাহন করে সাচ্ছন্দের সাথে পৌছানো যাবে সদর ঘাট থেকে মুন্সীগঞ্জগামী লঞ্চে ঘন্টার মধ্যেই পৌছে যাওয়া যাবে মুন্সীগঞ্জ লঞ্চ ঘাটে মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা হইতে রিক্সা / টেম্পু যোগে বজ্রযোগিনী ইউনিয়নের বজ্রযোগিনী গ্রামে অতীশ দীপঙ্করের পণ্ডিত ভিটা অবস্থিত রিক্সা ভাড়া ৪০-৫০ টাকা



অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান হলেন একজন প্রখ্যাত পণ্ডিত যিনি পাল সাম্রজ্যের আমলে একজন বৌদ্ধ ভিক্ষু এবং বৌদ্ধধর্মপ্রচারক ছিলেন

 জন্ম

মহামহোপাধ্যায় সতীশ্চন্দ্র বিদ্যাভূষণ রাহুল সাংকৃত্যায়নের মতানুসারে পালযুগে মগধের পূর্ব সীমান্তবর্তী প্রদেশ অঙ্গদেশের পূর্ব প্রান্তের সামন্তরাজ্য সহোর, যা অধুনা ভাগলপুর নামে পরিচিত, তার রাজধানী বিক্রমপুরীতে সামন্ত রাজা কল্যাণশ্রীর ঔরসে রাণী প্রভাবতী দেবীর গর্ভে ৯৮২ খ্রিস্টাব্দে অতীশ দীপঙ্করের জন্ম হয় [] কিন্তু কিছু ঐতিহাসিকের মতে তিনি বর্তমানে বাংলাদেশের মুন্সিগঞ্জ জেলার অন্তর্ভুক্ত বিক্রমপুর পরগনার বজ্রযোগিনী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন

শৈশব

ছোটবেলায় তাঁর নাম ছিল আদিনাথ চন্দ্রগর্ভ তিন ভাইয়ের মধ্যে অতীশ ছিলেন দ্বিতীয় তার অপর দুই ভাইয়ের নাম ছিল পদ্মগর্ভ শ্রীগর্ভ অতীশ খুব অল্প বয়সে বিয়ে করেন কথিত আছে তার পাঁচ স্ত্রীর গর্ভে মোট ৯টি পুত্র সন্তান জন্মগ্রহণ করেন[] তবে পুন্যশ্রী নামে একটি পুত্রের নামই শুধু জানা যায়



শিক্ষা

প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন মায়ের কাছে তিন বছর বয়সে সংস্কৃত ভাষায় পড়তে শেখা ১০ বছর নাগাদ বৌদ্ধ অবৌদ্ধ শাস্ত্রের পার্থক্য বুঝতে পারার বিরল প্রতিভা প্রদর্শন করেন তিনি মহাবৈয়াকরণ বৌদ্ধ পণ্ডিত জেত্রির পরামর্শ অনুযায়ী তিনি নালন্দায় শাস্ত্র শিক্ষা করতে যান

১২ বছর বয়সে নালন্দায় আচার্য বোধিভদ্র তাঁকে শ্রমণ রূপে দীক্ষা দেন এবং তখন থেকে তাঁর নাম হয় দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান ১২ থেকে ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত তিনি বোধিভদ্রের গুরুদেব অবধূতিপাদের নিকট সর্ব শাস্ত্রে পান্ডিত্য অর্জন করেন ১৮ থেকে ২১ বছর বয়স পর্যন্ত তিনি বিক্রমশীলা বিহারের উত্তর দ্বারের দ্বারপন্ডিত নাঙপাদের নিকট তন্ত্র শিক্ষা করেন এরপর মগধের ওদন্তপুরী বিহারে মহা সাংঘিক আচার্য শীলরক্ষিতের কাছে উপসম্পদা দীক্ষা গ্রহণ করেনধর্মীয় জ্ঞানার্জনের জন্য তিনি পশ্চিম ভারতের কৃষ্ণগিরি বিহারে গমন করেন এবং সেখানে প্রখ্যাত পন্ডিত রাহুল গুপ্তের শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন বৌদ্ধ শাস্ত্রের আধ্যাত্নিক গুহ্যাবিদ্যায় শিক্ষা গ্রহণ করেগুহ্যজ্ঞানবজ্র  উপাধিতে ভূষিত হন

দীপঙ্কর ১০১১ খ্রিস্টাব্দে শতাধিক শিষ্যসহ মালয়দেশের সুবর্ণদ্বীপে (বর্তমানে ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপ) গমন করেন এবং আচার্য ধর্মপালের কাছে দীর্ঘ ১২ বছর বৌদ্ধ দর্শনশাস্ত্রের বিভিন্ন বিষয়ের উপর অধ্যয়ন করে স্বদেশে ফিরে আসার পর তিনি বিক্রমশীলা বিহারে অধ্যাপনার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন

তিব্বত যাত্রা
তিব্বতের সম্রাট ল্হ-লামা-য়েশো কয়েক জন দূতের হাতে প্রচুর স্বর্ণ উপঢৌকন দিয়ে দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞানকে তিব্বত ভ্রমনের আমন্ত্রন জানালে দীপঙ্কর সবিনয়ে তা প্রত্যাখ্যান করেন এতে নিরাশ না হয়ে সম্রাট সীমান্ত অঞ্চলে সোনা সংগ্রহের জন্য গেলে গরলোগ অঞ্চলের অধিপতি তাঁকে বন্দী করেন প্রচুর সোনা মুক্তিপণ হিসেবে দাবী করেন সম্রাট তাঁর পুত্র লহা-লামা-চং-ছুপ- কে মুক্তিপণ দিতে বারণ করেন এবং অর্থ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞানকে তিব্বতে আনানোর জন্য ব্যয় করতে বলেন লহা-লামা-চং-ছুপ- সম্রাট হয়ে গুং-থং-পা নামে এক বৌদ্ধ উপাসককে আরো কয়েক জন অনুগামীকে দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞানকে তিব্বতে আনানোর দায়িত্ব দেন এরা নেপালের পথে বিক্রমশীলা বিহারে উপস্থিত হন এবং দীপঙ্করের সাথে সাক্ষাৎ করে সমস্ত সোনা নিবেদন করে ভূতপূর্ব সম্রাট ল্হ-লামা-য়েশোর বন্দী হওয়ার কাহিনী তাঁর শেষ ইচ্ছার কথা ব্যক্ত করলে দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান অভিভূত হন আঠারো মাস পরে ১০৪০ খৃস্টাব্দে বিহারের সমস্ত দায়িত্বভার লাঘব করে দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান তিব্বত যাত্রার জন্য প্রস্তুত হন তিনি দোভাষী সহ বারো জন সহযাত্রী নিয়ে প্রথমে বুদ্ধগয়া হয়ে নেপালের রাজধানীতে উপস্থিত হন এবং নেপালরাজের আগ্রহে এক বছর সেখানে কাটান এরপর নেপাল অতিক্রম করে থুঙ বিহারে এলে তাঁর দোভাষী ভিক্ষু গ্য-চোন-সেঙ অসুস্থ হয়ে মারা যান ১০৪২ খৃস্টাব্দে তিব্বতে পশ্চিম প্রান্তের ডংরী প্রদেশে পৌছন সেখানে পৌছলে লহা-লামা-চং-ছুপ- এক রাজকীয় সংবর্ধনার আয়োজন করে তাঁকে থোলিং বিহারে নিয়ে যান এখানে দীপঙ্কর তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ বোধিপথপ্রদীপ রচনা করেন ১০৪৪ খৃস্টাব্দে তিনি পুরঙে, ১০৪৭ খৃস্টাব্দে সম-য়ে বৌদ্ধ বিহার ১০৫০ খৃস্টাব্দে বে--বাতে উপস্থিত হন
তিব্বতে বৌদ্ধ ধর্মের প্রসার

দীপঙ্কর তিব্বতের বিভিন্ন অংশে ভ্রমণ করেন এবং বৌদ্ধ ধর্মের ব্যাপক সংস্কার সাধন করেন তিনি তিব্বতী বৌদ্ধধর্মে প্রবিষ্ট তান্ত্রিক পন্থার অপসারণের চেষ্টা করে বিশুদ্ধ মহাযান মতবাদের প্রচার করেন তিনি তিব্বতে কদম-পা নামে এক লামা সম্প্রদায়ের সৃষ্টি করেন

রচনা
দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান দুই শতাধিক গ্রন্থ রচনা, অনুবাদ সম্পাদনা করেন তিব্বতের ধর্ম, রাজনীতি, জীবনী, স্তোত্রনামাসহ তাঞ্জুর নামে বিশাল এক শাস্ত্রগ্রন্থ সংকলন করেন বৌদ্ধ শাস্ত্র, চিকিৎসা বিদ্যা এবং কারিগরি বিদ্যা বিষয়ে তিব্বতী ভাষায় অনেক গ্রন্থ রচনা করেন বলে তিব্বতীরা তাকে অতীশ উপাধীতে ভূষিত করে অতীশ দীপঙ্কর অনেক সংস্কৃত এবং পালি বই তিব্বতী ভাষায় অনুবাদ করেন দীপঙ্করের রচিত গ্রন্থগলির মধ্যে বোধিপথপ্রদীপ, চর্যা-সংগ্রহপ্রদীপ, সত্যদ্বয়াবতার, মধ্যমোপদেশ, সংগ্রহগর্ভ, হৃদয়-নিশ্চিন্ত, বোধিসত্ত্ব-মণ্যাবলী, বোধিসত্ত্ব-কর্মাদিমার্গাবতার, শরণাগতাদেশ, মহযান-পথ-সাধন-বর্ণ-সংগ্রহ, শুভার্থ-সমুচ্চয়োপদেশ, দশ-কুশল-কর্মোপদেশ, কর্ম-বিভঙ্গ, সমাধি-সম্ভব-পরিবর্ত, লোকোত্তর-সপ্তকবিধি, গুহ্য-ক্রিয়া-কর্ম, চিত্তোৎপাদ-সম্বর-বিধি-কর্ম, শিক্ষাসমুচ্চয়-অভিসময় বিমল-রত্ন-লেখনা উল্লেখযোগ্য[] বিখ্যাত পন্ডিত হরপ্রসাদ শাস্ত্রী এবং ইতালির বিখ্যাত গবেষক টাকি দীপঙ্করের অনেকগুলো বই আবিস্কার করেন
মৃত্যু
তিব্বতে বৌদ্ধ ধর্মে সংস্কারের মতো শ্রমসাধ্য কাজ করতে করতে দীপঙ্করের স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটলে ১০৫৪ খৃস্টাব্দে ৭৩ বছর বয়সে তিব্বতের লাসা নগরের কাছে চে-থঙের দ্রোলমা লাখাং তারা মন্দিরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন


বার আউলিয়ার মাজার

কিভাবে যাওয়া যায়:

ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলা মুন্সীগঞ্জ মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার মহাকালী ইউনিয়নের কেওয়ার গ্রামে বার আউলিয়ার মাজারটি অবস্থিত সড়কপথে ঢাকা থেকে মুন্সীগঞ্জের দূরুত্ব মাত্র ২৩ কিলোমিটার তবে এই মাজারে আসার জন্য আরো ০৯ (প্রায়) কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব দিকে আসতে হবে ঢাকা হতে সকালে এসে মাজার জিয়ারত করে বিকেলেই ঢাকায় ফিরে আসা যাবে সড়কপথে যেতে কষ্ট হবে না তবে নৌপথে গেলে সময়ও বাচঁবে এবং যানজট এড়িয়ে নদী পথের সৌন্দর্য অবগাহন করে স্বাচ্ছন্দের সাথে পৌছানো যাবে সদর ঘাট থেকে মুন্সীগঞ্জগামী লঞ্চে ঘন্টার মধ্যেই পৌছে যাওয়া যাবে মুন্সীগঞ্জ লঞ্চ ঘাটে মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা হইতে রিক্সায় মহাখালী ইউনিয়নের কেওয়ার গ্রামে বার আউলিয়ার মাজার অবস্থিত ভাড়া ৩৫-৪০ টাকা

কিছু কথা:

বার আউলিয়ার মাজার মুন্সীগঞ্জ জেলার সদর উপজেলাধীন মহাকালী ইউনিয়নের কেওয়ার গ্রামের অন্তর্গত তেতুল তলায় পবিত্র বার আউলিয়াদের মাজার শরীফ অবস্থিত প্রায় ১০০০ বছর পূর্বে হিজরী ৪২১ সনে ৯৭৪ খ্রিঃ সুদূর আরব দেশ হতে পবিত্র ইসলাম ধর্ম প্রচার করার জন্য মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সঃ) এর আনসার মুজাহিদ হিসেবে আওলিয়াগণ বাংলাদেশের এই স্থানে আগমন করেন পূর্বে এই স্থানটি কালীদাস সাগর ছিল পরবর্তীতে জঙ্গলাপূর্ন পতিত ভূমিতে পরিনত হলে ১২ জন আউলিয়া এই স্থানটিকে দ্বীন ইসলাম প্রচারের কেন্দ্র হিসাবে ইমারত, দীঘি এবাদতখানা প্রতিষ্ঠিত করেন এবং এখানে তারা ওফাৎ গ্রহণ করেন

বার আউলিয়ার মাজারঃ

বার আউলিয়া মাজারটি পঞ্চগড় জেলার আটোয়ারী উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের বার আউলিয়া মৌজার প্রায় ৪৭.৭৩ একর জমিতে অবস্থিত উক্ত স্থানে ০১টি মাদরাসা ১টি এতিম খানা আছে ০২টি প্রতিষ্ঠান চলে মাজারের জমি হতে উৎপাদিত ফসলের আয় হতে জানা যায় মধ্যপ্রাচ্য হতে ১২ জন আউলিয়া

*হেমায়েত আলী শাহ (রঃ)

*নিয়ামত উল্লাহ শাহ (রঃ)

*কেরামত আলী শাহ (রঃ)

*আজহার আলী শাহ (রঃ)

*হাকিম আলী শাহ (রঃ)

*মনছুর আলী শাহ (রঃ)

*মমিনুল শাহ (রঃ)
*শেখ গরীবুল্লাহ (রঃ)
*আমজাদ আলী মোল্লা (রঃ)
*ফরিজ উদ্দিন আখতার (রঃ)
* শাহ মোক্তার আলী (রঃ)
*শাহ অলিউল্লাহ (রঃ)
ইসলাম ধর্ম প্রচারের জন্য উক্ত স্থানে এসে বসবাস শুরু করেন তাঁরা ইন্তেকাল করলে উক্ত স্থানে তাঁদের সমাহিত করা হয় ১২ জন আউলিয়াকে সমাহিত করায় এবং তাঁদের মাজার থাকায় এই স্থানের নাম হয় বার আউলিয়া পরবর্তীতে জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে পঞ্চগড় জেলা পরিষদের পৃষ্ঠপোষকতায়বার আউলিয়া মাজারটি পাকা করা হয়
মাজার প্রাঙ্গণে জেলা পরিষদ কর্তৃক নির্মিত একটি ডাক বাংলো রয়েছে প্রতি বৈশাখমাসের শেষ বৃহস্পতিবার এখানে ওরস মোবারক অনুষ্ঠিত হয় দেশের বিভিন্ন স্থান হতে অগনিত ভক্তের পদচারণায় মুখরিত থাকে ওরস মোবারকের দিনটি
বার আউলিয়া মাজার শরীফের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা
উপজেলা সদর হতে কিঃমিঃ উত্তর-পূর্বে মির্জাপুর ইউনিয়নের বার আউলিয়া গ্রামের বিস্তীর্ণ ভূমিতে অবস্থিত বার আউলিয়া মাজার শরীফ বার আউলিয়া ওলীদের আগমনের ইতিহাস বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেলেও ওলীদের ইতিহাস রহস্যাবৃত এঁদের লিখিত কোন ইতিহাস আজও পাওয়া যায়নি বার জন ওলী সূফী-সাধক চট্রগ্রামের শহর প্রান্তে প্রথমে এসে আস্তানা স্থাপন করেন সেই জায়গাটি আজও বার আউলিয়া নামে প্রসিদ্ধ জানাগেছে, বার জন ওলী খাজা বাবার নির্দেশে চট্রগ্রাম সহ পূর্ববঙ্গের বিভিন্ন অঞ্চলে আস্তানা গড়ে তুলে ইসলাম প্রচার শুরু করেন পরে স্থল পথে রওয়ানা হয়ে ইসলাম প্রচার করতে করতে উত্তরবঙ্গের শেষ প্রান্ত এসে পৌছান এবং পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের বার আউলিয়ায় আস্তানা গড়ে তুলে ইসলাম প্রচার শুরু করেন আটোয়ারীর মাটিকে পুণ্য ভূমিতে পরিণত করে সময়ের বিবর্তনে ওলীদের এখানেই সমাহিত করা হয় গড়ে ওঠে বার আউলিয়া মাজার শরীফ তৎকালীন সময়ে স্থানীয় কিছু মানুষ খাদেমগণ বৈশাখ মাসের শেষ বৃহস্পতিবার খুব স্বল্প পরিসরে ওরস পালন করতেন বর্তমান সময়ের মতো লক্ষ লক্ষ লোকের সমাগম হতো না বার আউলিয়া মাজার সম্প্রসারণের বিষয়ে বাস্তব ইতিহাস রয়েছে ইতিহাসটি হলো- ১৯৯০ সালের দিকে পঞ্চগড় জেলার তৎকালীন জেলা প্রশাসক আবুল বাশার আহাম্মদ একদিন জীপ গাড়ীতে বার আউলিয়া মাজার রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন হঠাৎ তার জীপ বন্ধ হয়ে যায় অনেক চেষ্টার পরও জীপের ইঞ্জিন চালু না হওয়ায় স্থানীয় লোকজন মাজার শরীফ দেখিয়ে দেন তিনি তাৎক্ষণিক ওযু করে মাজার জিয়ারত করেন প্রার্থনা শেষে, গাড়ীতে বসলে বিনা ধাক্কায় গাড়ীর ইঞ্জিন চালু হয় ঐদিন রাতেই তিনি ওলীদের দ্বারা স্বপ্নে বার আউলিয়া মাজার উন্নয়নের নির্দেশনা পান এবং পরের দিন সকালে আবার মাজার জিয়ারত করতে আসেন সে সঙ্গে তার অসুস্থ দুই পুত্রের জন্য মানত করে মাজার উন্নয়নে এগিয়ে আসেন তাঁর আহবানে এলাকায় ব্যাপক সাড়া জাগে এবং প্রথমে তিনি একত্রে পাশাপাশি অবস্থিত দুজন ওলীর কবরের উপর একটি পাঁকা দালান নির্মাণ করেন এরপর উপজেলার নলপুখুরী গ্রামের মোঃ খলিলুর রহমান অবশিষ্ট দশ জন ওলীর কবরের প্রতিটির চার পার্শ্বে দেওয়াল নির্মাণ করেন তৎকালীন স্পীকার, আইন বিচার সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী মরহুম মির্জা গোলাম হাফিজ এর প্রচেষ্টায় প্রায় ৪৭ একর জমিতে মাজার কমপেক্স, মাজার, গোরস্তান, পুকুর, মসজিদ, মাদ্রসা ডাকবাংলা নির্মিত হয়
তারপর থেকে ক্রমান্বয়ে ওরস বিস্তৃতি লাভ করে ১৯৯৪ সাল থেকে জেলা প্রশাসকের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে বাৎসরিক ওরশ, মাজার ব্যবস্থাপনা, মাজার উন্নয়নসহ নানাবিধ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে
 

কিভাবে যাওয়া যায়:
পোস্তাগোলা থেকে সেবা পরিবহনের বাসে বালাসুর বাস স্ট্যান্ড এখান থেকে রিক্সা বা অটোতে এতিমখানা রোড ভাগ্যকুল জমিদার বাড়ী
কিছু কথা:
ভাগ্যকূল জমিদার বাড়ী "বিলের ধারে প্যারিস নগর"- অধ্যাপক হূমায়ুন আজাদ এভাবে বর্ণ্না করেছিলেন বিক্রমপুরের শেষ জমিদার যদুনাথ রায়ের বাড়ী কে এই জমিদার বাড়ীর পাশেই আড়িয়াল বিল আর এই বিলের ধারের প্রাসাদে থাকতেন যদুনাথ রায় শ্রীনগর উপজেলার ভাগ্যকূল গ্রামে তৎকালীন প্রভাবশালী জমিদার যদুনাথ রায় বাড়ীটি নির্মান করেন প্রায় ৫০০ শতাংশ জায়গার উপর বাড়অটি নির্মিত মূল সড়ক থেকে এক কিমি যাওয়ার পথে চোখে পড়ে এই বিশাল বাড়িটি জমিদার শ্রীনাথ রায়ের পুত্র যদুনাথ রায় ভাগ্যকুলে দ্বিতল বিশিস্ট দুইটি ভবন নির্মান করেন শ্রীনাথের রায়ের মূল জমিদার পদ্মার বুকে বিলীন হয়ে গেলেও টিকে আছে যদুনাথের বাড়ী স্থানীয় মানুষদের কাছে এটি বাবু বাড়ী নামে পরিচিত এই কমপ্লেক্সে জমিদার বাড়ী ছাড়াও আছে একটি বড় দিঘী আর দূর্গা মন্দির লক্ষী নারায়ন মন্দির বর্তমানে এই কমপ্লেক্সে তৈরি করা হয়েছে বিক্রমপুর জাদুঘর
ভাগ্যকুলের জমিদাররা ব্রিটিশ আমলে উপমহাদেশে প্রসিদ্ধ ছিলেন জমিদারদের মধ্যে হরলাল রায়, রাজা শ্রীনাথ রায় প্রিয়নাথ রায়ের নাম উল্লেখযোগ্য ব্রিটিশের তাঁবেদারি করায় তাঁরা রাজা উপাধি পেয়েছিলেন তাঁদের মতো ধনী বাঙালি পরিবার সে সময়ে কমই ছিল জমিদারদের প্রায় সবাই উচ্চ শিক্ষিত ছিলেন ঢাকা, কলকাতা এবং ইংল্যান্ডে তাঁরা পড়াশোনা করেছেন জমিদারদের কীর্তির বেশির ভাগই পদ্মা কেড়ে নিয়েছে জমিদার যদুনাথ রায়ের বাড়িটিই যা টিকে আছে




যা যা দেখবেনঃ
এই জমিদার বাড়ীর - কি.মি দূরেই আছে জগদীস চন্দ্র বসুর বসত ভিটা ছাড়া খুব কাছেই আছে মাওয়া রিসোর্ট এই ছাড়া ঘুরে আসতে পারেন পাশের শ্যাম সিদ্ধির গ্রামেও দেখে আসতে পারেন আড়িয়াল বিল আর শ্যাম সিদ্ধির মঠ নবাবগঞ্জ দিয়ে আসলে দেখে আসতে পারেন ভাগ্যকূলের অন্য জমিদার বাড়ী গুলো কোকিলপ্যারী জমিদার বাড়ী, তেলিবাড়ী, উকিল বাড়ী এই সবই ভাগ্যকূল জমিদারদের ছিল

 
https://goo.gl/LRFBWh
see the nex
          


0 Comments