কম খরচে ঘুরে আসুন ঢাকার আশেপাশে ঢাকা শহরের মানুষ, আমরা সবাই খুব ব্যস্ত থাকি। সময় পেলেই পরিবার নিয়ে ঘুরে আসতে সবাই চাই। কিন্তু একদিনের মধ্যে ঢাকার আশেপাশে কোথায় ঘুরতে যাওয়া যায়, তা আমরা অনেকেই জানিনা। তাই ঘুরতে যেতেও পারিনা। আসুন জেনে নেই ঢাকার আশেপাশে ঘুরতে যাওয়ার কিছু জায়গার নাম।
নদী পথ পার হয়ে ছোট্ট একটি গ্রাম। তবে
গ্রাম হলেও পুরোটাই গোলাপের বাগান দিয়ে পরিপূর্ণ । এখানে
গেলে আপনার মনে হবে যেন বিশাল একটি গোলাপের বাগানে ভেতর আপনি ঘুরছেন। সরু
পথ দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে দেখবেন রাস্তার দুপাশ গোলাপের বাগান দিয়ে ঘেরা।
কিভাবে গোলাপ গ্রাম যাওয়া যায়?
আপনি ঢাকার যেখানে থাকেন না কেনো সবার প্রথমে আপনাকে বাইক নিয়ে মিরপুর দিয়াবাড়ি বটতলা ঘাট আসতে হবে। সেখান
থেকে আপনি আপনার বাইক বোটে করে নিয়ে গোলাপ গ্রাম যেতে পারবেন। মিরপুর
দিয়াবাড়ি বটতলা ঘাট থেকে সাহদুল্লাহপুর ঘাটের উদ্দেশ্যে ৩০ মিনিট পরপর ইঞ্জিনচালিত বোট ছাড়ে। সাহদুল্লাহপুর
যেতে যেতে ৪৫ মিনিট- ১ ঘণ্টা লাগবে। কিন্তু
যদি আপনি বোটে করে না যেতে চান তাহলে,
উত্তরার হাউজ বিল্ডিং এলাকার নর্থ টাওয়ারের কাছে এসে সেখান থেকে দিয়াবাড়ি আসতে হবে। সেখান
থেকে মেইনরোডে এগিয়ে বিরুলিয়া ব্রিজ পর্যন্ত গিয়ে চলে আসুন সাদুল্লাহপুর গোলাপ গ্রামে।
২/ পানাম ও মেঘনার পারঃ
পানাম সিটি ঢাকা শহর থেকে একদম আলাদা এবং অন্য রকম। পুরনো
বাড়িগুলো দেখে দিন পার হয়ে যাবে। পৃথিবীর
১০০ টি ধ্বংস প্রায় ঐতিহাসিক শহরের একটি পানাম নগর। ঈসা
খাঁ এর আমলে বাংলার রাজধানী পানামনগর। এখানে
কয়েক শতাব্দী পুরনো অনেক ভবন রয়েছে, যা বাংলার বার ভূইয়াঁদের ইতিহাসের সাথে সম্পর্কিত।
ওখান থেকে কাছেই মেঘনা নদী। নদীর
ওপারে গেলেই দেখবেন কাশফুলে ঘেরা বিস্তৃত মাঠ দেখতে পাবেন। চাইলে
পানাম ঘুরা শেষে সেখানেও ঘুরে আসতে পারেন।
ঢাকার অদূরে ২৭কি.মি দক্ষিণ-পূর্বে নারায়নগঞ্জ এর খুব কাছে সোনারগাঁতে অবস্থিত এই নগর।ঢাকা
থেকে যাতায়াত ব্যবস্থাও সহজ।গুলিস্থান
থেকে বাইক নিয়ে চলে আসবেন ‘মোগরাপারা’। সেখান
থেকে চলে যাবেন পানামনগরীতে।
৩/ বালিয়াটি জমিদার বাড়িঃ
বালিয়াটি জমিদার বাড়ি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জমিদারবাড়িগুলোর একটি। ঢাকা
জেলা সদর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটি গ্রামে অবস্থিত।মোট
৭ টি স্থাপনা নিয়ে এই জমিদার বাড়ি অবস্থিত। জমিদার
বাড়ির পুরটাই মনোরম পরিবেশে ঘেরা।
কিভাবে বালিয়াটি জমিদার বাড়ি যাওয়া যায়?
ঢাকার গাবতলী থেকে মানিকগঞ্জ এর রাস্তা দিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। সাটুরিয়া
পৌঁছে সেখান থেকে যেতে হবে জমিদার বাড়ির দিকে।
বালিয়াটি জমিদার বাড়ি রোববার পূর্ণদিবস আর সোমবার অর্ধদিবস বন্ধ থাকে। অন্যান্য
সরকারি ছুটির দিনগুলোতেও বন্ধ থাকে।
জমিদার বাড়িতে প্রবেশের জন্য টিকেটের মূল্য জন প্রতি ১০টাকা।
টাঙ্গাইলে ঘুরার মতন অনেক জায়গা আছে যা আপনি এক দিনে ঘুরে শেষ করতে পারবেন না। তবে
তার মধ্যে মহেরা জমিদার বাড়ি সবচেয়ে সুন্দর। এটি
তিনটি স্থাপনা নিয়ে তৈরি। বাড়ির
ভেতরের দিকে বিশাল খাঁচায় বিভিন্ন রকম পাখি পালা হয়। তিনটি
স্থাপনার প্রতিটাতে অসাধারণ কারুকার্য করা। এসব
কারুকার্য দেখলেই মন ভরে যাবে।
টাঙ্গাইলের
জমিদার বাড়ি দেখতে হলে খুব সকালে বাসা থেকে বের হতে হবে। কারণ
যেতে প্রায় ৩-৪ ঘণ্টা
লাগবে। মহেরা
জমিদার বাড়ির বর্তমান নাম মহেরা পুলিশ ট্রেইনিং সেন্টার। ঢাকা
থেকে আপনাদের সবার প্রথমে যেতে হবে নাটিয়া পাড়া বাস স্ট্যান্ডে। সেখান
থেকে আপনি যেতে পারবেন মহেরা জমিদার বাড়িতে। জমিদার
বাড়ি ঢুকতে টিকেট কিনতে হবে,জন প্রতি ২০টাকা।
৫/ মৈনট ঘাট
ঢাকার খুব কাছেই পদ্মা নদীর পাড় নিয়ে ঢাকার নবাবগঞ্জের দোহার উপজেলায় মৈনট ঘাট অবস্থিত। এখানে
আসলেই মুগ্ধ হবেন। কারণ
পদ্মা নদীর উত্তাল জলরাশি আপনাকে সমুদ্রের মতো দেখাবে।
নদীর পাড়টায় বালুর কারণে কিছুটা বিচের মতো দেখায়। খালি
পায়ে হেঁটে আরও ভালো লাগবে আপনার। মৈনট
ঘাট জায়গাটা আসলেই দারুণ মনে হবে। অভিজ্ঞতাটা
কিছুটা সমুদ্র দেখার মতই। খুব
ভোরবেলা আসলে আরও বেশি আনন্দ করে দেখতে পারবেন ঘাটের আশেপাশের পরিবেশ। ভোরে
জেলেরা এখানে মাছ ধরে এবং বাজার বসে। চাইলে
স্পিডবোট বা ট্রলার নিয়ে ঘুরে দেখতে পারেন। এখানে
সব থেকে মজা পাবেন বর্ষার সময়। এছাড়াও
আশেপাশে উকিলবাড়ি, জজবাড়ি আছে। সেখানে
ঘুরে আসতে পারেন। দোহারের
মৈনট ঘাট গিয়ে দেখা পাবেন পদ্মা নদীর। পদ্মা
পারের বিস্তৃত প্রান্তর সময় কাটনোর জন্য এক দারুন জায়গা। মৈনট
ঘাটে যাওয়ার গুলিস্থান থেকে জন্য 'যমুনা ডিলাক্স' বাস পাবেন। ভাড়া
৯০ টাকা, যেতে সময় লাগে দুই ঘণ্টার মত।
– গুলিস্তানের
গোলাপ শাহের মাজারের সামনে থেকে সরাসরি মৈনট ঘাটের উদ্দেশ্যে বাস ছাড়ে। ভাড়া
৯০-১০০। দেড়
থেকে আড়াই ঘণ্টার মধ্যে পৌছায় যাবেন। ফেরার
সময়ও বাসেই ফিরতে পারবেন।
– এখানে রাতে থাকার মতো আশেপাশে কোন ব্যবস্থা নেই। দিনে
আসে দিনেই ফিরতে হবে।
– মৈনট ঘাটে দুটি ভালো ভাতের হোটেল আছে। একটি
আতাহার চৌধুরীর হোটেল, আরেকটি জুলহাস ভূঁইয়ার।
– কার্তিকপুর
বাজারে শিকদার ফাস্টফুড নামক একটা খাবারের দোকান আছে। এছাড়াও
আরো কিছু ভাতের হোটেলও আছে।
৬/ বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কঃ
বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কটি গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার মাওনা ইউনিয়নে প্রায় ৩,৬৯০ একর
জায়গা জুড়ে গড়ে তোলা হয়েছে। এই
পার্কে প্রাকৃতিক পরিবেশে বন্য প্রাণীদের বিচরণ দেখতে সারা বছরই দর্শনার্থীদের ভিড় লেগে থাকে। এছাড়াও
এখানে রয়েছে পাখি শালা, প্রজাপতি সাফারি, জিরাফ ফিডিং স্পট, অর্কিড হাউজ, শকুন ও পেঁচা কর্নার,
এগ ওয়ার্ল্ড, বোটিং, লেইক জোন, আইল্যান্ড, প্রকৃতিবীক্ষণ কেন্দ্র, ফ্যান্সি কার্প গার্ডেন আরো অনেক বিলুপ্ত প্রায় প্রাণীর সমারোহ।
আপনাকে সবার প্রথমে আসতে হবে গাজীপুরের বাঘের বাজার। সেখান
থেকে খুব সহজেই আপনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে যেতে পারবেন।
শালবন বৌদ্ধবিহার বাংলাদেশের প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শনগুলোর মধ্যে অন্যতম এবং কুমিল্লা জেলার লালমাই-ময়নামতির অসংখ্য এবং চমৎকার সব প্রাচীনস্থাপনাগুলোর একটি। দেববংশের
চতুর্থ রাজা শ্রীভবদেব এ বৌদ্ধ বিহারটি
নির্মাণ করেন।
কিভাবে শালবন বিহার যাওয়া যায়?
শালবন বিহার যেতে প্রথমে কুমিল্লা শহরে যাবেন। কুমিল্লা
শহর থেকে ৮ কি. মি.
দূরে কোট বাড়িতে শালবন বিহার অবস্থিত।
খোলামেলা পরিবেশে স্নিগ্ধ প্রকৃতির ছোঁয়া পেতে ঘুরে আসতে পারেন কিশোরগঞ্জের নিকলী হাওর থেকে । ঢাকা
থেকে বাইক নিয়ে যেতে পারেন কিশোরগঞ্জ শহরে। সেখান
থেকে নিকলি ঘাট । ঘাট
থেকে নৌকা ভাড়া করে ঘুরে দেখুন হাওর । মনে
রাখবেন, বর্ষার শেষ দিকে হাওর ভ্রমনের উপযুক্ত সময় । বাইক
নিয়ে গেলে হাওরের পাশে বাইক রেখে আপনি ঘুরে আসতে পারবেন। তবে
নিকলী হাওর যেতে চাইলে খুব সকালে রওনা ঢাকা থেকে রওনা হউন।
৯/ বেলাই বিলঃ
গাজিপুরের বেলাইবিল মনোরম একটি জায়গা। চেলাই
নদীর সাথেই বেলাই বিল। এখানে
ইঞ্জিনচালিত আর ডিঙ্গি নৌকা দুটোই পাওয়া যায়। যেটাতে
ভালো লাগে উঠে পড়ুন। সারাদিনের
জন্য ভাড়া করে নিতে পারেন এবং ইঞ্জিনচালিত নৌকা নিলে নিজেরাই চালিয়ে ঘুরতে পারেন। বিকেলে
এই বিলের চারপাশে অপূর্ব দৃশ্য তৈরি হয়। বিলের
চারপাশে শাপলার ছড়াছড়ি। শুধু
চারিদিক তাকিয়ে থাকবেন। আবার
কিছুক্ষণ পরপরই বাতাসের ঝাপটা লাগবে গায়ে। বেশি
সময় নিয়ে গেলে অবশ্যই খাবার নিয়ে যাবেন। যাওয়ার
সময় নদীর পাড় ঘুরে দেখতে পারেন।
গাজীপুর সদর পর্যন্ত যাওয়ার পর, সেখান নেমে টেম্পুতে কানাইয়া বাজার যাবেন। ভাড়া
নিবে ১০ টাকা করে। রিকশাতেও
যেতে পারেন।কানাইয়া
বাজারে নেমেই সামনে ব্রিজ আছে,ব্রিজ পার হয়েই নদীতে বাধা নৌকা ঠিক করে উঠে পড়ুন।
এছাড়াও নদীর পাশে ‘ভাওয়ালপরগণা’ (শ্মশান ঘাটবা শ্মশান বাড়ি) আছে। চাইলে
নদীর পাশেই এই শ্মশান বাড়িটি দেখে আসতে পারেন।
১০/
আড়াইহাজার মেঘনার চর:
ঢাকার কাছে আড়াইহাজার চর এলাকা অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠছে খুব অল্প সময়ের মধ্যে। বিস্তীর্ণ
এলাকায় এই রকম মনোরম পরিবেশ আর কোথাও পাবেন না এই যান্ত্রিক নগরীর আশেপাশে। সারাদিনের
জন্য ঘুরতে আসতে পারেন এখানে।
নদীর তীরে বাইক রেখে ট্রলারে সন্ধ্যার আগে দিয়ে ঘুরে দেখতে পারেন চারপাশ। ঢাকার
কাছে মেঘনা নদীর মাঝখানে এই বিশাল বালির চর। তার
মধ্যে অর্ধেকের বেশিই কাশবন। এখানে
বালি অনেক শক্ত তাই কোন চোরাবালির ভয় নেই। ভাটার
সময় এখানে ঘুরতে যাওয়া বেশি সুবিধার। এ
সময় ১০-১৫ ফিট বালির চরথাকে। দেখতে
পারবেন কাশবন, খোলা আকাশে পাখির মেলা আর পানির
স্রোতের মধুর শব্দ।
কিভাবে আড়াইহাজার মেঘনার চর যাওয়া যায়?
১১/
মানিকগঞ্জের হরিরামপুর কিংবা ঝিটকাঃ
ঢাকার কাছে সরিষা ফুলের রাজ্য মানিকনগর। কয়েকজন
মিলে বাইক নিয়ে চলে যেতে পারেন এখানে। তবে
আপনাকে অবশ্যই সরিষা ফুলের সময় যেতে হবে।
কিভাবে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর যাওয়া যায়?
প্রত্নস্থলটি
রাজধানী ঢাকার গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট থেকে ২৪ কিলোমিটার দূরে সাভার উপজেলার অন্তর্গত সাভার পৌরসভার মজিদপুরে (সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ড হতে পূর্ব দিকে) অবস্থিত। ১৯৯০-১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দে রাজা হরিশচন্দ্রের ঢিবি উৎখননের ফলে অনাবৃত হয় মাঝারি আকারের একটি নিবেদনস্তূপ এবং দক্ষিণে একটি বৌদ্ধ বিহারের ভগ্নপ্রায় অবকাঠামো। খ্রিস্ট্রীয়
সপ্তম শতকে এখানে বৌদ্ধ ধর্ম সভ্যতা সংশ্লিষ্ট একটি কেন্দ্র ছিল বলে বোঝা যায়। হরিশ্চন্দ্র
রাজার প্রাসাদ-ঢিবির উৎখননে অনাবৃত হওয়া বিহারটির মধ্যে একাধিক পুনর্নির্মাণ এবং একাধিক মেঝের চিহ্ন লক্ষ করা যায়।
কিভাবে রাজা হরিশচন্দ্রের ঢিবি যাওয়ার যায়?
জিনজিরা প্রাসাদ একটি ঐতিহাসিক পুরাকীর্তি। যার
অবস্থান ঢাকা শহরের বুড়িগঙ্গা নদীর ওপারে কয়েক’শ গজ দূরে। ১৬২০-২১ খ্রিস্টাব্দে জিনজিরা প্রাসাদ ‘নওঘরা’ নির্মাণ করেছিলেন তৎকালীন সুবেদার নওয়াব ইব্রাহিম খাঁ। আজ
থেকে প্রায় ৪০০ বছর আগে শহর থেকে জিনজিরার মধ্যে চলাচলের জন্য একটি কাঠের পুল ছিল। পলাশীর
যুদ্ধে সর্বস্বান্ত সিরাজদ্দৌলার পরিবার পরিজনকে জরাজীর্ণ জিনজিরা প্রাসাদে প্রেরণ করা হয়েছিল।
১৪/
ষাইট্টা বটগাছঃ
সে অনেক দিন আগের কথা, আজ থেকে ৫০০ বছর আগে ধামরাই উপজেলার যাদবপুর ইউনিয়নের সাইট্টা গ্রামে দেবীদাস বংশের পূর্বপুরুষ তাদের জমির ওপর একটি বট ও একটি পাকুড়
গাছ রোপণ করেছিলেন। তৎকালীন
সময়ের সনাতন ধর্ম বিশ্বাস অনুসারে বটগাছকে মহিলা আর পাকুড়-গাছ পুরুষ ধরা হত।
কিভাবে ষাইট্টা বটগাছ যাওয়া যায়?
১৫/
সোনারগাঁও লোকশিল্প জাদুঘরঃ
সোনারগাঁও জাদুঘর ঢাকার অদূরে নারায়নগঞ্জ জেলার পানাম নগরে অবস্থিত একটি অন্যতম দর্শনীয় স্থান। এখানে
শীতকালে মাসব্যাপী বসে লোকশিল্প মেলা। প্রতি
শুক্রবার থেকে বুধবার সকাল ১০.০০ থেকে ৫.০০ পর্যন্ত
জাদুঘরের গেট খোলা থাকে। টিকেটের
মুল্য ও কম, জনপ্রতি
২০ টাকা মাত্র।
আপনি কি ইতিহাস পছন্দ করেন। আগ্রহ
আছে প্রত্নতাত্ত্বিক বিষয়ে, তবে ঘুরে আসতে পারেন উয়ারী-বটেশ্বর থেকে। নরসিংদী
জেলার বেলাব উপজেলা থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার পশ্চিমে অবিস্থত উয়ারী এবং বটেশ্বর গ্রাম। এটি
বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন জনপদ। অসম
রাজার গড় নামে এটি সমাধিক পরিচিত। এখানে
প্রায় তিন হাজার পূর্বের প্রাচীন শিলালিপি মূদ্রাসহ সভ্যতার অনেক নিদর্শন পাওয়া গেছে। এখানে
পর্যটকদের জন্য রেষ্ট হাউজ রয়েছে। এখানে
প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে শুরু করে তাম্র প্রসার যুগ, আদি-ঐতিহাসিক যুগ, প্রাক মধ্যযুগের সভ্যতার নিদর্শন দেখতে পাওয়া যায়। মাটির
একটি ঘরে ব্যক্তিগত উদ্যোগে তৈরি হয়েছে একটি প্রত্নসংগ্রহশালা ও গ্রন্থাগার।
আর এই সংগ্রহশালায় রক্ষিত আছে খ্রীষ্টপূর্বসময়ের মূল্যবান কিছু প্রত্নতাত্ত্বিকনিদর্শন।
নরসিংদী কিভাবে যাবেন
কোথায় থাকবেন
নরসিংদীর উয়ারী বটেশ্বর এ বিরাট ধানক্ষেতের
পাশে একটি সরকারি গেস্ট হাউস আছে। এটির
বৈশিষ্ট্য হলো ২য় তলায় বিশাল রুমটির সামনে বিরাট একটি খোলা ছাদ। অসাধারণ
একটি জায়গা। এই
গেস্ট হাউজটিতে বুকিং দেয়া একদম সোজা, ভাড়াও কম। বাজার
ও রান্নার দায়িত্ব অনায়াসে দেয়া যায় এর কেয়ারটেকারের ওপর।
নান্দনিক সৌন্দর্য ও কারুকার্য খচিতময়
লক্ষণ সাহার এই জমিদার বাড়ি। বাড়ির
বাহিরের দিক থেকে তাকালেই চোখ জুড়িয়ে যায়। লক্ষণ
সাহার বাড়ি, সুদান সাহার বাড়ি ও আশেপাশের অন্যান্য
বাড়িগুলোর কারুকাজ অত্যন্ত সুনিপুন নির্মানশৈলীতে তৈরী।নিখুঁত
সুন্দর্যের এই ভবনগুলো শত বছর পরও ঐতিহ্যপ্রেমী ও ভ্রমণ পিপাসু
পর্যটকদের মুগ্ধ করে তোলে। উকিল
বাড়ি নামে পরিচিত নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ডাংগা বাজার থেকে মাত্র ১০ মিনিট এর দূরত্বে অবস্থিত লক্ষণ সাহার জমিদার বাড়ি। মোঘল
আমলে নির্মিত কারুকার্যখচিত অনন্য সাধারণ এই জমিদার বাড়ির মালিকানায় আছে একজন উকিল জনাব আহাম্মদ আলি।
সাভারের পরে আশুলিয়া এমন একটি সুন্দর জায়গা যেটিকে অনেকেই ঢাকার সমুদ্র সৈকত বলে আখ্যা দিয়ে থাকেন। সমুদ্র
সৈকতের আবহাওয়া পাওয়া যাবে এই জায়গাটিতে। বিশেষ
করে বর্ষাকালে দিগন্ত বিস্তৃত পানি আর পানির ঢেউ আপনাকে ভুলিয়ে দেবে মনের সকল কষ্ট। শরৎকালে
আকাশের উপরে মেঘের খেলা আর নিচে ছলছলে পানি আপনার মনকে করে তুলবে আনন্দিত।
আপনি মন ভরে উপলব্ধি করতে পারবেন সৌন্দর্যের মোহনীয়তা। আপনি
চাইলে এই আশুলিয়াতে নৌকা ভ্রমণও করতে পারবেন। নৌকা
ভ্রমণে আপনার মন আরও অনেক বেশি সতেজ হয়ে পড়বে। দেখবেন
মন কখন যে ভালো হয়ে গেছে আপনি নিজেও জানেন না।
১৯/
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ঃ
কি অবাক মনে হচ্ছে ? কিন্তু এটি একদিনের ভ্রমনের জন্য সেরা একটি জায়গা। এই
বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের মধ্যে আপনি সম্পূর্ণভাবে একটা সবুজে ঘেরা প্রাকৃতিক পরিবেশ পেয়ে থাকবেন। এই
বিশ্ববিদ্যালয়টি এমনিতেই শীতের মৌসুমে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এখানে আসা শীতের পাখিগুলোর জন্য।
সাইবেরিয়া ও অন্যান্য দেশ
থেকে আসা এই শীতের পাখিগুলোকে দেখতে প্রতি শুক্রবারেই ক্যাম্পাসে ভিড় করে বহু সংখ্যক মানুষ। এছাড়া
গরমের মৌসুমেও একটুখানি হিমেল হাওয়া পেতে ভিড় করে ঢাকাবাসীরা। সবুজে
ঘেরা এই ক্যাম্পাসটি এমনিতেই অনেক বেশি শীতল থাকে। তাই
আপনার যদি কোনো কারণে মন খারাপ হয়ে থাকে তাহলে এই ক্যাম্পাসটিতে ঘুরে আসতে পারেন। দেখবেন
সবুজের ছোঁয়ায় এবং ছাত্রছাত্রীদের তারুণ্যতা দেখে আপনার মন নিমেষেই ভালো হয়ে যাবে।
২০/
মায়াদ্বীপঃ
নারায়নগঞ্জ
জেলার বারদী ইউনিয়নের মায়াদ্বীপ হতে পারে একটা বিকেল কাটাবার দারুন জায়গা। মায়াদ্বীপ
হলো মেঘনা নদীর বুকে ভেসে ওঠা একটি দারুন সুন্দর চর এর নাম। মুল
ভূখন্ড থেকে কয়েক কিলোমিটার দুরের বিচ্ছিন্ন এ দ্বীপে মানুষজন
সংগ্রাম করে বাচে। ঐতিহাসিক
সোনারগাঁয়ের ঐতিহ্যবাহী বারদী ইউনিয়নের অন্তর্গত নুনেরটেক একটি গ্রাম, যা মেঘনা নদী দ্বারা সোনারগাঁয়ের মূল ভূ-খণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন।
নদীপথে সোনারগাঁ থেকে যার দূরত্ব প্রায় চার থেকে পাঁচ কিলোমিটার। আজ
থেকে প্রায় শত বছর আগে মেঘনার বুক চিরে জেগে ওঠা চরের নাম রেখেছিল স্থানীয়রা নুনেরটেক। সেই
নুনেরটেকের কোলেই রয়েছে একটি সবুজ প্রান্তর একটি গ্রাম নাম তার মায়াদ্বীপ। একটি
বিকেল অনায়াসেই কাটিয়ে দাওয়া যায় দ্বীপটিতে বসে মেঘনার ঠান্ডা বাতাস আর ঢেউ দেখে। মায়াদ্বীপ
এর পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া মেঘনার শাখা নদীর নীল জল দেখলে লাফিয়ে পরতে ইচ্ছে করবে। তাই
যে কোন এক বন্ধের দিন চলে যান পরিবারসহ। কিছুটা
সময় কাটিয়ে আসুন প্রকৃতির মাঝে।
কিভাবে মায়াদ্বীপ যাওয়া যায়?
২১/
জিন্দা পার্কঃ
নারায়ণগঞ্জ
জেলার দাউদপুর ইউনিয়নে ১৫০ একর জায়গা নিয়ে এই জিন্দা পার্ক টি গড়ে উঠেছে। দশ
হাজারের বেশি গাছ, ৫টি জলধার ও অসংখ্য পাখি
রয়েছে। এছাড়া
রয়েছে ক্যান্টিন , লাইব্রেরি, চিড়িয়াখানা এছাড়া রয়েছে ৮ টি সুসজ্জিত
নৌবহর।
ঢাকা থেকে ৪০ কি.মি. দূরে মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজং নামক স্থানে পদ্মা নদীতে চড়ের উপর এই রিসোর্টটি অবস্থিত। পদ্মা
নদীর পাড়ে অবস্থিত বলেও জায়গাটি অতি মনোরম আর সুন্দর। বর্ষা
ঋতুর সময় গেলে আপনার বেশি ভালো লাগবে।
পদ্মা নদীর টাটকা ইলিশের তৈরি বিভিন্ন ধরনের খাবার খেতে চাইলে যেতে পারেন পদ্মা রিসোর্টে। এছাড়া
আরও রয়েছে টাটকা শাকসবজি, গরু, মুরগি ও হাসের মাংস। এছাড়া
মৌসুমি ফলমূল তো রয়েছেই। সকালের
নাস্তার জন্য জনপ্রতি খরচ পড়ে ১০০ টাকা এবং দুপুর ও রাতের খাবারের
জন্য জনপ্রতি খরচ পড়ে ৩০০ টাকার মতো।
কিভাবেপদ্মারিসোর্ট
যাওয়া যায় ?
২৩/ জল জঙ্গলের কাব্য রিসোর্টঃ
টঙ্গীর পুবাইলের পাইলট বাড়ির কথা হয়তো অনেকে জানেন। প্রাকৃতিক
এক ভূমিকে অবিকৃত রেখে আরো প্রাকৃতিক করা হয়েছে ডিজাইনারের নিপুণ ছোয়ায়। অসাধারন
সুন্দর জায়গা পূবাইলের জল জঙ্গলের কাব্য। এটি
একটি প্রাকৃতিক রিসোর্ট এর নাম। রিসোর্টটি
পূবাইলে এক সাবেক পাইলট তৈরি করেছেন। তবে
রিসোর্টে আধুনিক কিছু নাই। পাইলট
ভদ্রলোক খুব বেশি পরিবর্তন করতে চায়নি গ্রামটিকে। প্রকৃতিকে
খুব বেশি পরিবর্তন না করে বিশাল এক জায়গা নিয়ে তৈরি করা হয়েছে রিসোর্ট। বিশাল
একটি বিল, পুকুর আর বন-জঙ্গল আছে এখানে। যে
কেউ চাইলে একটা দিন এখানে কাটিয়ে ঘুরে আসতে পারেন। খুবই
অন্যরকম পরিবেশ নিয়ে তৈরি এই রিসোর্ট।
এক জোসনা রাতে আগে থেকে থবর দিয়ে চলে যান সেখানে। প্রাকৃতিক
গাছপালা আর শান্ত বিলের পারে বসে কাটিয়ে দিন একটা দিন।
কিভাবে জল জঙ্গলের কাব্য রিসোর্টে যাওয়া যায়?
মহাখালী থেকে নরসিংদী বা কালিগঞ্জগামী যে কোন বাসে উঠুন। ১
ঘণ্টা পর পুবাইল কলেজ গেট এলাকায় নেমে পড়ুন। ভাড়া
নেবে ৪০ টাকা। এরপর
একটা ব্যাটারিচালিত রিক্সায় করে পাইলট বাড়ি। গেলে
এসে ফোন করুন, গেট খুলে দেবে। তবে
অবশ্যই আগে বুকিং থাকতে হবে।
এখানে জনপ্রতি নেয়া হয় ২০০০ টাকা নাস্তা, দুপুর ও রাতের খাবার
সহ। শুধু
দুপুর ও রাতে খাবার
সহ ১৫০০ টাকা।
যমুনা রিসোর্ট টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জ জেলার
মাঝে যমুনা সেতুর কাছেই অবস্থিত । পর্যটকদের
থাকার ব্যবস্থা ছাড়াও ভিতরে রয়েছে সুইমিং পুল, খেলাধুলার ব্যবস্থা, জিম ও অন্যান্য সুবিধা
রয়েছে । কিন্তু
খরচ পড়বে জনপ্রতি ৪০০০ টাকা করে ।
২৫/ ছুটি রিসোর্টঃ
গাজীপুর জেলাতে যে কয়টি রিসোর্ট রয়েছে ছুটি রিসোর্ট তার মধ্যে জনপ্রিয়। ঢাকার
আশে পাশের রিসোর্ট গুলির মধ্যে অন্যতম এ রিসোর্ট।
এই রিসোর্টটি প্রায় ৫০ বিঘা জমির ওপর গড়ে উঠেছে। এটি
রিসোর্ট এবং পিকনিক কর্নার দুটি অংশে বিভক্ত। রিসোর্টের
গা ঘেঁষে গভীর জঙ্গল। ভেতরে
দুটো বড় মাঠ, অসংখ্য গাছ, ঝোপঝাড়। এর
চারপাশ ঘিরে আছে একটি বিশাল দিঘি। তাতে
লাল পদ্ম ফুটে থাকে। দিঘীতে
ভ্রমণের জন্য আছে নৌকার ব্যবস্থা।
২৬/ ভাওয়াল রিসোর্টঃ
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত গাজীপুরের বরৈপাড়ার মির্জাপুর ইউনিয়নের নলজানী গ্রামে সুবিশাল ৩৫ একর জমির উপর নান্দনিক এই রিসোর্টটি অবস্থিত। ভাওয়াল
রিসোর্ট এর প্রধান আকর্ষণ বললে প্রথমেই যার কথা আসবে সেটি এর সুবিশাল সুইমিং পুল! পুরো রিসোর্টটির মাঝ দিয়ে এত সুন্দর ভাবে তৈরী করা হয়েছে এই সুইমিং পুল যেখানে সারাদিন কাটিয়ে দেয়া যাবে।
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার রাজবাড়ি এলকায় শিল্পীদম্পতি তৌকির-বিপাশা গড়ে তুলেছেন নক্ষত্রবাড়ি রিসোর্ট। প্রায়
২৫ বিঘার জায়গাজুড়ে তৈরি এই রিসোর্ট।
দিঘি, কৃত্রিম ঝরনা, সভাকক্ষ, সুইমিংপুলসহ নানান সুবিধা রয়েছে। প্রকৃতিপ্রেমী
ও ভ্রমণপিপাসুদের কাছেও এটি অতি জনপ্রিয় নাম। এর
বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো, পুকুরের পানির ওপর কাঠ-বাঁশের সমন্বয়ে নির্মিত ১১টি কটেজ।
২৮/ স্প্রিং ভ্যালি রিসোর্ট গাজীপুর:
রাজধানী ঢাকার খুব কাছে গাজীপুরের সালনায় গড়ে তোলা হয়েছে স্প্রিং ভ্যালি রিসোর্ট। পরিবারের
সদস্যদের নিয়ে সেখানে আনন্দঘন সময় কাটিয়ে আসতে পারেন যে কোনো দিন। যেতে
পারেন বন্ধুবান্ধবকে সঙ্গে নিয়ে পিকনিকে। নিজে
না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না এটা একটা রিসোর্ট নাকি স্বর্গভূমি। গ্রামীণ
সৌন্দর্যের ১২ বিঘা জমির উপর এই রিসোর্টটি পরিচালনা করছে ট্রিপসিলো। এই
রিসোর্টে রয়েছে বিশাল এক সুইমিংপুল।
স্প্রিং ভ্যালি রিসোর্টের খরচঃ
২৯/নুহাশ পল্লীঃ
ঢাকার অদূরে গাজীপুরে অবস্থিত। বিশিষ্ট্য
সাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত প্রাকৃতিক নৈসর্গ। নুহাশ
চলচিত্রের শুটিংস্পট ও পারিবারিক বিনোদন
কেন্দ্র এটি। গজারি
আর শাল গাছের জংগলের মধ্যে দুর্গ আকৃতির দরজা দিয়ে ভেতরে ঢুকেই সবুজের সমরোহ দেখে চোখ আর মন দুই জুড়িয়ে যাবে। সবুজের
মাঝে লাল সুরকি বিছানো রাস্তা, তার একপাশে একটু দূরে দুরে দুটো কটেজ। এর
পাশে জবা ফুলের গাছে ঘেরা খুব সুন্দর সুইমিং পুল আছে। বড়
বড় গ্লাসের জানালা ওয়ালা কটেজের রুম গুলো বেশ সুন্দর করে গোছানো। সারা
বাড়ি জুড়ে হুমায়ুন আহমেদের বর্তমান সংসার জীবনের জীবনের নানা চিহ্ন ছড়ানো। এখানে
একটি ঘরে হুমায়ুন আহমেদের এ পর্যন্ত যত
বই বের হয়েছে, তার সবগুলোর একটি সংগ্রহ রক্ষিত আছে। বইপ্রেমিদের
জন্য লোভনীয় খবর হলেও এই ঘরে সবার প্রবেশাধিকার নেই। দুই
কটজের মাঝে রয়েছে ছোট্ট একটি ছায়া ঘেরা পদ্ম পুকুর।
নুহাশ পল্লী প্রধান ফটক পেরোলেই চোখে পরবে কাঁচা সবুজ গালিচা খুব যত্ন করে কাটা দুবা ঘাসগুলো দেখে আপনি চমকে যাবেন।এত
গাঢ় সবুজ সবসময় চোখে পড়েনা। শুরুতেই
ডান পাশে একটি সুদৃশ্য স্ট্যাচু রয়েছে। অত্যন্ত
দৃষ্টিনন্দন স্ট্যচু তে একজন মা তার ছেলে কে নিয়ে দাড়িয়ে আছে। বিরাট
সবুজ মাঠের এক পাশ থেকে অন্য পাশ পর্যন্ত লম্বা খাঁচায় রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। মাঠের
দুই পাশে স্থানে স্থানে রয়েছে ছোট ছোট জলাধার। সেখানে
পদ্ম, শাপলা সহ রয়েছে আরো অনেক জলজ ফুল। একটু
এগোলেই ডান পাশে মাটির তৈরী একটি বাড়ি রয়েছ। দেখতে
মাটির মনে হলেও ঘর টি পাকা আর পাকা ঘরের দেয়ালে মাটি মেখে মাটির ঘরের রুপ দেয়া হয়েছে।অত্যন্ত
চমৎকার এই বড়ি টি লতা জাতীয় ফুলগাছে বেষ্টিত। মাঠের
মাঝখানে একটি বড় গাছের উপর ছোট ছোট ঘর তৈরী করা হয়েছে। স্যুটিং
এর জন্য বিশেষ ভাবে তৈরী ঘরগুলো আবাক করবে আপনাকে। হুমায়ুন
আহমেদ পরিচালিত প্রায় সকল নাটক সিনেমার অন্যতম স্যুটিং স্পট এটি।
নুহাশ পল্লীর অত্যন্ত সৌন্দর্যবহুল আর একটি স্থান “দিঘি লীলাবতী”, যার অবস্থান ঔষধী উদ্যানের পুর্ব পাশে। একটি
দিঘিকে নারিকেল গাছ দিয়ে সাজানো হয়েছে। রয়েছে
সানকাধানো ঘাট। পুকুরের
মাঝখানে একটি দ্বিপে অনেকগুলো নরিকেল গাছ আছে।নরিকেল
গাছের নিচে কাঠের মাচা পাতা আছে। মৃদু
বাতাসে নারিকেল গাছের নিচের এই মাচায় একটু সময় না কাটিয়ে আপনি যেতে পারবেন না ।
এখানে আছে বৃষ্টি বিলাস, ভুত বিলাস নামের বাড়ি, ট্রি হাউজ, বিভিন্ন ভাস্কর্য্য, প্রায় ৩০০ প্রজাতির বিভিন্ন গাছের বাগান। আর
নুহাশ পল্লীর লিচু তলায় হুমায়ূন আহমেদ এর সমাধিস্থল।
কিভাবে নুহাশ পল্লী যাওয়া যায়?
নুহাশ পল্লী যেতে আপনাকে যেতে হবে গাজীপুর জেলা সদর। সেখান
থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরত্বে পিরুজালী গ্রামে অবস্থিত এই নুহাশ পল্লী।
প্রথমে গুলিস্তান থেকে প্রভাতী-বনশ্রী বাসে হোতা পাড়াবাজারে নেমে সেখান থেকে ছোট টেম্পুতে করে পৌঁছে যাবেন নুহাশ পল্লী। এছাড়া
নিজস্ব গাড়ি বা মাইক্রো ভাড়া করে যেতে পারেন। এপ্রিল
থেকে নভেম্বর নুহাশপল্লী দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকে।
১২ বছরের উপরে জন প্রতি টিকেট লাগবে ২০০ টাকা।
৩০/ ড্রিম হলিডে পার্কঃ
নরসিংদী জেলার পাঁচদোনার চৈতাবাতে প্রায় ৬০ একর জমির উপর নির্মাণ করা হয়েছে ড্রিম হলিডে পার্ক। পার্কটিতে
বিভিন্ন ধরনের আকর্ষণীয় রাইড ছাড়াও অস্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ইমু পাখি, মায়াবি স্পট, কৃত্রিম অভয়্যারণ্য, ডুপ্লেক্স কটেজ এবং কৃত্রিম পর্বত যা এখানে আগত দর্শনার্থীদের নজর কাড়ে। এছাড়াও
এই পার্কে রয়েছে ওয়াটার পুল যেখানে কান পাতলে সমুদ্রের গর্জন অনুভব করা যায়।
৩১/ রাজেন্দ্র_ইকো রিসোর্টঃ
গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের বিপরীত দিকের বড় সড়ক থেকে ডানের গলিপথ ধরে সবুজের অরণ্যে হারিয়ে
যাবেন আপনি। ভবানীপুর
বাজার পেরিয়ে চিকন রাস্তা ধরে আরও কিছুটা দূরে এই রিসোর্ট। পথের
দুই পাশে ঘন শালবন। যতদূর
চোখ যায়, শুধুই গাছ আর গাছ। পুকুরপাড়ের
গাছে মাছরাঙা পাখি শিকারের আশায় বসে। পুকুরের
তীর ঘেঁষে বকের হাঁটাহাঁটি। অনেক
রকম পাখি দেখে মনে হতে পারে, হয়তো কোনো গহীন জঙ্গলে এসে পড়েছেন। সত্যিই
গহীন অরণ্য। রাস্তার
দুই পাশে দূরের শালবন ছাড়াও খেজুরগাছ, বটগাছ। রাস্তার
পাশে আদিবাসীদের কিছু বাড়িঘর। যাওয়ার
আগে ফোনে যোগাযোগ করে যেতে পারেন।
৩২/ রিভার প্যালেসঃ
ময়মনসিংহ শহর পার হয়ে মুক্তাকাছার দিকে এই অসাধারণ রিসোর্টটি অবস্থিত। মুক্তাকাছার
দিক থেকে আরও তিন মাইল সামনে গেলে হাতের ডানে ব্রহ্মপুত্র নদী তীরে গড়ে উঠেছে রিভার প্যালেস নামে এই রিসোর্ট। মূলত
এটি একটি ডাকবাংলোর মতো। রিসোর্টটি
চমৎকারভাবে সাজানো গুছানো। এর
বারান্দায় বসে নদী দেখেই পুরো একটি বিকেল কাটিয়ে দেয়া যায়। চাইলে
বসতে পারেন রিসোর্টের পেছনের নদী তীরে।
কিভাবে রিভার প্যালেস যাওয়া যায়?
ঢাকা থেকে নিজের সুবিধা মতো বাসে ময়মনসিংহ পর্যন্ত যাবেন। তারপর
বাস ষ্ট্যান্ড থেকে কাচিঝুলি
পর্যন্ত যাবেন। এরপর
মুক্তাকাছা উপজেলা হতে রিসোর্ট পর্যন্ত চলে যাবেন। রিসোর্ট
ভাড়া ১০০০, ১৫০০ এবং ২০০০ টাকা। চাইলে
আপনি খাওয়া দাওয়া রিভার প্যালেসেই সেরে
নিতে পারেন।
৩৩/ ম্যাজিক পারাডাইসঃ
বিখ্যাত ওয়াল্ট ডিজনির আদলে তৈরি করা হয়েছে এই ড্রিম হলিডে পার্কটি। প্রথম
দেখাতে মনে হবে বাংলাদেশের বাইরে কোথাও চলে এসেছেন। ছুটির
দিনে বাচ্চাদের নিয়ে একদিনের ভ্রমন করার আদর্শ জায়গা হতে পারে এটি। ৬০
একর জমির মধ্যে ওয়াটার বাম্পার কার, রাইডার ট্রেন, বাইসাইকেল,রকিং হর্স, স্পীডবোর্ড, সোয়ানবোট ,নাগেট ক্যাসেল, এয়ার বাইসাইকেল কৃত্রিম পর্বত, সমুদ্রের কৃত্রিম ঢেউ ইত্যাদি রয়েছে।
৩৪/ আপন ভুবন রিসোর্টঃ
ঢাকার পাশেই গাজীপুর জেলার পুবাইল কলেজ গেটে অবস্থিত তেমনি একটি বেসরকারি বিনোদন পর্যটন কেন্দ্র আপন ভুবন রিসোর্ট। টঙ্গী
থেকে এর দূরত্ব ৮ কিলোমিটার।
পরিবারের সবাইকে নিয়ে কিংবা অফিস বা সংগঠনের দিনব্যাপী পিকনিক বা বনভোজনে এখানে আসা যেতে পারে খুব সহজে। এই
রিসোর্টের অন্যতম আকর্ষণ হলো জলাশয়ের ওপর নির্মিত অপরূপ সৌন্দর্যমণ্ডিত ঝুলন্ত সাঁকো আর এর পিলার ও বেলকনিতে খোঁদাই
করা বিভিন্ন কারুকাজ- যা আগত দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে। বিশাল
এক জলাশয়ের মাঝখানে ঝুলন্ত সাঁকো থাকায় দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করে বেশি।বিস্তীর্ণ
এলাকাজুড়ে সবুজের সমারোহ আপনাকে মুগ্ধ করবেই।
৩৫/
ফ্যান্টাসি কিংডম:
বাংলাদেশের
প্রথম থিম পার্কের নাম “ফ্যান্টাসি কিংডম”। প্রায়
২০ একর জায়গার ওপর স্থাপিত এটি। ফ্যান্টাসি
কিংডম পার্কটি কয়েকটি ভাগে বিভক্ত। ওয়াটার
কিংডম, ফ্যান্টাসি কিংডম, রিসোর্ট আটলান্টিকা, এক্সট্রিম রেসিং (গো-কার্ট) ও হেরিটেজ কর্নার।
ফ্যান্টাসি
কিংডমে প্রায় প্রত্যেকটা কর্ণারে ঢুকতে হলে টিকিটের টাকা গুনতে হয়। প্রবেশ
পথেই প্রত্যেকটা কর্নার আলাদা করে দেওয়া আছে। কিন্তু
হেরিটেজ কর্নারের জন্য আলাদা করে টিকিট কাটা লাগে না। সারা
বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে আছে ঐতিহ্যবাহী কিছু নিদর্শন। সেই
স্থাপনাগুলোর হুবহু নকল বানানো হয়েছে এই জায়গাটায়। রেপ্লিকাগুলো
হলো সংসদ ভবন, জাতীয় স্মৃতিসৌধ, লালবাগ কেল্লা, ষাট গম্বুজ মসজিদ, চুনাখোলা মসজিদ, কান্তজীর মন্দির, সীতাকোট বিহার, পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার, পুঠিয়া রাজবাড়ি, গ্রিক মেমোরিয়াল ও আহসান মঞ্জিলের। প্রতিটি
রেপ্লিকার সামনে লেখা রয়েছে সেগুলোর বর্ণনা ও ইতিহাস।
হেরিটেজ পার্কটি মূলত তৈরি করা হয়েছে স্কুল-কলেজ থেকে পিকনিকে আসা ছাত্র-ছাত্রী আর বিদেশি পর্যটকদের জন্য। যেন
তারা বাংলাদেশের ঐতিহ্য সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারে। এগুলো
ছাড়াও বাঙালির ঐতিহ্য ধারণ করে এমন সব জিনিস রাখা হয়েছে এখানটায়। পালকি,
গরুর গাড়ি, রিকশা।
ফ্যান্টাসি কিংডম কর্নারে রাইডসের মধ্যে রয়েছে জিপ অ্যারাউন্ড, জায়ান্ট ফেরিস হুইল, জায়ান্ট স্প্যানিশ, ম্যাজিক কার্পেট, জুজু ট্রেন, সান্তা মারিয়া, কফি কাপ, বাম্পার কার্ট, বাম্পার বোট, প্যাডল বোট, রোলার কোস্টার, ইজি ডিজি। এছাড়াও আছে ওয়াটার রোলার কোস্টার। এটায় সবচেয়ে মজা লাগে উপর থেকে নিচে পড়ার পর যখন পানির ঝাপটা লাগে তখন। তিনটা স্লাইড এতে। প্রথমটা একতলা সমান উচ্চতা, দ্বিতীয়টা দুইতলা, তৃতীয়টা তিনতলা।
ওয়াটার কিংডমে প্রবেশ করার আগেই মাটির নিচ দিয়ে রয়েছে আকর্ষণীয় ও মনোমুগ্ধকর ভার্চুয়াল অ্যাকোয়ারিয়াম টানেল। এটা পার হয়েই প্রবেশ করতে হয় ওয়াটার কিংডমে। অম্বুরাজ্যে বেড়ানোর মজাদার আর রোমাঞ্চকর সব রাইড নিয়ে সাজানো হয়েছে ওয়াটার কিংডম। মজার মজার ১১টি রাইড ছাড়াও রয়েছে বেড়ানোর মতো অনেক জায়গা। কৃত্রিম সমুদ্র সৈকত; ওখানটায় আর্টিফিশিয়াল নারকেল গাছের সারির ছবি দিয়ে বীচের আবহ আনার চেষ্টা করা হয়েছে।
ওয়েবপুল; এখানটায় সমুদ্রের মতো নীল পানি দিয়ে কৃত্রিম সমুদ্র বানানো হয়েছে। কিছুক্ষণ
পর পর ঝাঁকি দেওয়া হয় পানিতে, ফলে স্থির পানিতেই ঢেউ উৎপন্ন হয়, তীরে এসে ঢেউ আছড়ে পড়ে। কৃত্রিম
গুহা আছে, গুহায় বুক সমান পানি থাকে। ঝর্ণা
আছে। আছে
বিশাল উঁচু জায়গা থেকে আঁকাবাঁকা পথ পেরিয়ে জল ভর্তি পুলে পড়ার জন্য স্লাইড ওয়ার্ল্ড, টিউব স্লাইড, পরিবারের সবাই মিলে আনন্দ করা যাবে ফ্যামিলি পুলে। এ
ছাড়া লেজি রিভার, ওয়াটার ফল, ডুম স্লাইড, লস্ট কিংডম, প্লে জোন, ড্যান্সিং জোনের মতো মজার সব রাইডও আছে এখানে। ওয়াটার
ফল, ওয়াটার ওয়ার্ল্ড, মাল্টিস্পাইড, ডুম স্পাইড, স্পাইড ওয়ার্ল্ড, ফ্যামিলি পুল, টিউব স্পাইড, লেজি রিভার, লস্ট কিংডমসহ মজাদার সব রাইডস।
ওয়াটার কিংডমে ঢোকার জন্য এক্সট্রা ২০০ টাকা লাগে।
এ ছাড়া ফ্যান্টাসি কিংডম থিম পার্কে বুমার কার, সান অ্যান্ড মুন, স্পিডি ওয়ে, ইগলু হাউসসহ বিভিন্ন ধরনের রাইডস উপভোগ করার সুযোগ রয়েছে।
ইগলু হাউজটা হলো বরফের রাজ্যে এস্কিমোরা নিজেদের জন্য যেরকম গম্বুজের মতো বাড়ি বানায়, সেরকম। ভিতরের
পরিবেশটায় ঠাণ্ডা আবহাওয়ার আমেজ রাখা হয়েছে। ভিতরে
কৃত্রিম গাঢ় কুয়াশা, তুষারফল হচ্ছে। আছে
পেঙ্গুইন, মেরু ভাল্লুকের প্রতিকৃতি। ভিতরে
গান চলতে থাকে। সবাই
মিলে ওখানে যেমন খুশি তেমন নাচে।
বিশেষ বিশেষ দিনে বা উৎসব উপলক্ষে ফ্যান্টাসি কিংডমে কনসার্ট, গেম শো, ফ্যাশন শো, ডিজে শো, র্যাফল ড্র,
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বিভিন্ন প্রতিযোগিতাসহ নানা আয়োজন করা হয়ে থাকে।
ফ্যান্টাসি কিংডমে খাওয়া দাওয়া করার জন্যে বেশ কিছু ভালো রেস্টুরেন্ট রয়েছে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু হলো আশুলিয়া ক্যাসেল রেষ্টুরেন্ট, ওয়াটার টাওয়ার ক্যাফে, রোলার কোস্টার স্টেশন।
খোলা ও বন্ধের সময়সূচী
পার্কটি সপ্তাহের ৭দিনই খোলা থাকে। সাধারণ দিনগুলোতে সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এবং সরকারী ছুটির দিনগুলোতে এটি সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকে।
টিকেটের মূল্য ও প্যাকেজ
ফ্যান্টাসি
কিংডমে প্রবেশ মূল্য ও রাইড মিলিয়ে
বিভিন্ন প্যাকেজ রয়েছে। একমাত্র
কোলের বাচ্চা ছাড়া সকলের টিকেট সংগ্রহ করতে হয়। বয়স্কদের
জন্য প্রবেশ ও ২টি রাইড
২২০ টাকা, তিন ফুটের নিচে বাচ্চাদের প্রবেশ ও ২টি রাইড
১২০ টাকা, বয়স্কদের প্রবেশ ও সব রাইড
৩৯০ টাকা, বাচ্চাদের প্রবেশ ও সব রাইড
২০০ টাকা এবং ৪ জনের প্রবেশ,
সব রাইড এবং লাঞ্চ/ডিনারের প্যাকেজ ১,৬০০ টাকা। স্কুলের
ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আছে বিশেষ আয়োজন।
কীভাবে যাবেন
মতিঝিল থেকে মঞ্জিল পরিবহন, হুইল লাইন্স ওয়াটার কিংডম মগবাজার, মহাখালি, উত্তরা, আব্দুল্লাহপুর ও আশুলিয়া হয়ে। আর
হানিফ মেট্রো সার্ভিস যায় মতিঝিল থেকে ছেড়ে শাহবাগ, শুক্রাবাদ, আসাদগেট, শ্যামলি, গাবতলি, সাভার, নবীনগর হয়ে। ভাড়া
৪০-৫০ টাকা।
36/শ্রীফলতলী জমিদার বাড়িঃ
ঢাকার কাছেই জমিদারবাড়িটির অবস্থান। কঠিন
বাংলা শব্দ শ্রীফলতলী লোকমুখে চলতে চলতে হয়ে গেছে ছিবলতলী।
একটা বিশাল এলাকা নিয়ে তৈরি করা হয়েছিল জমিদারবাড়ি। বিখ্যাত
তালিবাবাদ পরগণার শ্রীফলতলীর নয় আনা অংশের মালিকানা নিয়ে গঠিত হয় এটি। কিন্তু
বর্তমানে সেই বিশালত্বের অনেকখানিই কমে গেছে বর্তমান স্থানীয় বাসিন্দাদের দৌরাত্ম্যে। দোকানপাট
বসিয়ে অনেকটাই দখল করে নেওয়া হয়েছে এখন। যেটুকু
বাকি আছে, তার জন্য বর্তমানকালে একটা প্রবেশদ্বার স্থাপন করা আছে। শ্রীফলতলী
জমিদার বাড়ির কাছেই আছে তার নানাবাড়ি, দাদাবাড়ি। সেসব
বাড়িও দেখতে খুব সুন্দর দেখাচ্ছিল বাইরে থেকে। তবে
সেখানে ঢোকার পথ বন্ধ। জমিদার
বাড়ির দুটি তরফ। বড়
তরফ ও ছোট তরফ। দুই
তরফের মাঝখানে মসজিদ। বড়
দরজায় ভেতরে প্রবেশ করে বাম পাশে তাকালেই পাওয়া যাবে এই জমিদারদের বিস্তারিত বংশলতিকা। দাদা
দাদী আর নানীর দিকের উভয় বংশলতিকাই বিস্তারিত দেওয়া আছে এখানে। ডান
পাশে রহিম নেওয়াজ খান চৌধুরী এবং সৈয়দ মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরীর কর্মযজ্ঞের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া আছে ছবিসহ। সবই
টাইলসের উপর আঁকা। জমিদার
বাড়ির দুই তরফের মধ্যে ছোট তরফের অবস্থা এখন বেশ ভালো। এখানে
যারা বসবাস করছেন, তারা ছোট তরফকে পশ্চিম তরফ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। মূল
জমিদার বাড়ির পুরোটাই উঁচু পাঁচিল দিয়ে ঘেরা। আমার
দেখা বেশিরভাগ জমিদার বাড়িরই বেহাল দশা হলেও এটি রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কিছু
জায়গায় নতুন রেলিং লাগানো হয়েছে। তবে
পুরোনো বাড়িটির মরে যাওয়া সোনালি রঙ চমৎকার দেখাচ্ছিল। দেড়তলা
বাড়ির একধারে একতলা ছাদ দেওয়া। পুরনো
ছাদের রেলিংগুলোও খুব ভালো দেখায়।
কীভাবে যাবেন
ঢাকা মহাখালি থেকে টাঙ্গাইলের যে কোনো বাসে কালিয়াকৈর বাজারে নামা যায়। গাবতলি
সাভার রোড ধরে আসলেও অনেক বাস আছে। গুলিস্থান
থেকে প্রভাতী-বনশ্রী পরিবহন কালিয়াকৈর আসে। সদরঘাট/গুলিস্থান থেকে আজমেরী পরিবহন চন্দ্রা পর্যন্ত আসা যাবে। পরে
বাস বা টেম্পুতে কালিয়াকৈর। মিরপুর
থেকে তিতাস পরিবহনে গাবতলি হয়ে চন্দ্রা। সাইনবোর্ড
থেকে ঠিকানা বাসে চড়েও চন্দ্রা যাওয়া যাবে। তারপর
অন্য বাস বা টেম্পুতে কালিয়াকৈর।
কিন্তু এগুলো লোকাল বাস। সবচেয়ে
ভালো উত্তরবঙ্গের কোনো বাসে কালিয়াকৈর নেমে পড়লে। সেক্ষেত্রে
আগে থেকে ভাড়া মিটিয়ে নেওয়া উচিৎ। ভাড়া
৬০/৭০ টাকার বেশি হবে না। সবচেয়ে
ভালো রুট হলো মহাখালি থেকে টাঙ্গাইলের বাসে কালিয়াকৈর। কালিয়াকৈর
বাজার এসে তারপর রিকশায় ২০/২৫ টাকা ভাড়া।
শালবন বৌদ্ধবিহার বাংলাদেশের প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শনগুলোর মধ্যে অন্যতম এবং
কুমিল্লা জেলার লালমাই-ময়নামতির অসংখ্য এবং চমৎকার সব প্রাচীনস্থাপনাগুলোর একটি। দেববংশের
চতুর্থ রাজা শ্রীভবদেব এ বৌদ্ধ বিহারটি
নির্মাণ করেন।
কীভাবে যাবেন
প্রথমে কুমিল্লা শহরে যাবেন। কুমিল্লা
শহর থেকে ৮ কি. মি.
দূরে কোট বাড়িতে শালবন বিহার অবস্থিত ।
ঢাকা থেকে কুমিল্লা পর্যন্ত বাসে যেতে ২-৩ ঘণ্টা
লাগবে। কুমিল্লা
এসে চলে যান টমটম ব্রীজ সিএনজি স্ট্যান্ডে। সেখানে
সিএনজি করে কোটবাড়িতে এবং সেখান থেকে অটোরিকশা বা রিকশায় করে যেতে হবে শালবন বিহার।একটু
সময় বের করে বন্ধুদের অথবা পরিবার নিয়ে ঘুরে আসুন এসব জায়গায়।
৩৮/ জল জঙ্গলের কাব্য, পূবাইলে
অসাধারন সুন্দর জায়গা পূবাইলের জল জঙ্গলের কাব্য যা একটি প্রাকৃতিক রিসোর্ট এর নাম। রিসোর্টটি
পূবাইলে এক সাবেক পাইলট তৈরি করেছেন। তবে
রিসোর্টে আধুনিক কিছু নাই বললেই চলে। পাইলট
ভদ্রলোক খুব বেশি পরিবর্তন করতে চায়নি গ্রামটিকে। প্রকৃতিকে
খুব বেশি পরিবর্তন না করে বিশাল এক জায়গা নিয়ে তৈরি করা হয়েছে রিসোর্ট। বিশাল
একটি বিল, পুকুর আর বন-জঙ্গল আছে এখানে। যে
কেউ চাইলে একটা দিন এখানে কাটিয়ে ঘুরে আসতে পারেন। খুবই
অন্যরকম পরিবেশ নিয়ে তৈরি এই রিসোর্ট।
নরসিংদী, ভৈরব বা কালিগঞ্জ এর বাসে পূবাইল কলেজ গেট নেমে পড়ুন। বামে
রাস্তায় ব্যাটারী চালিত রিক্সায় করে প্রায় তিন মাইল গেলেই পাইলট বাড়ি বা জল জঙ্গলের কাব্য। খরচটা
একটু বেশী। তবে
খাবার সেই খরচের ভেতরেই থাকবে। সারাদিনের
জন্য জনপ্রতি ১৫০০ টাকা (সকালের নাস্তা, দুপুরের খাবার আর বিকেলে স্ন্যাক্স)। এক
দিন এবং একরাতের জন্য ৩০০০ টাকা জন প্রতি। শিশু,
কাজের লোক ও ড্রাইভারদের জন্য
৬০০ টাকা জন প্রতি।
কোথায়
খাবেন:
নাস্তায় চিতই পিঠা, গুড়, লুচি, মাংশ, ভাজি, মুড়ি এবং চা। দুপুরের
খাবার হিসেবে ১০/১২ রকম দেশী আইটেম। মোটা
চালের ভাত, পোলাও, মুরগির ঝোল, ছোট মাছ আর টক দিয়ে কচুমুখির ঝোল, দেশী রুই মাছ, ডাল, সবজি এবং কয়েক রকমের সুস্বাদু ভর্তা। খাবারের
আয়োজনের ত্রুটি রাখেন নি এখানকার কর্তৃপক্ষ।
৩৯/রাণীগঞ্জ
রাণীগঞ্জ হতে পারে ডে ট্রিপের জন্য আদর্শ একটি জায়গা। কাপাসিয়ে
ব্রিজ এর ডান পাশ দিয়ে একটি রাস্তা ধরে মাইল দশেক গেলেই রানীগন্জ। জায়গাটি
শীতলক্ষা নদীর তীরে অবস্থিত। এ
নদীতে রয়েছে সুন্তর একটি দ্বীপ। তাছাড়া
নদীতে নৌকা ভাড়া করে ঘোরা যাঢয়। নদীর
ওপারের বাজারে পাওয়া যায় তাজা মাছ যা কোন রেষ্টুরেন্টে দিয়ে রান্না করে খাওয়া যায়।
কীভাবে যাবেন:
মহাখালি আইসিডিডিআর বি এর াপজিট পেট্রল পাম্প থেকে ঘন্টায় ঘন্টায় রানীগন্জ এর বাস ছাড়ে। ভাড়া
৮০ টাকার মতো। সময়
লাগবে ঘন্টা দুয়েক। কাপাসিয়ার
পর রাস্তা গাছ পালায় ছাওয়া অসাধারন এক রাস্তা।
৪০/ধনবাড়ি রয়্যাল রিসোর্ট, টাংগাইল
টাংগাইলের ধনবাড়িতে একটা পুরনো রাজবাড়ি আছে যা এখন রিসোর্ট হিসেবে চালু হয়েছে। নাম
ধনবাড়ি রয়্যাল রিসোর্ট। এখনকার
মুল Palace এর ভাড়া বেশী তাই সেখানে না থেকে কাচারী বাড়িটা ভাড়া নিন আর সামনে বিশাল মাঠে বসে ১ টা রাত
কাটান উপভোগ করুন।
কীভাবে যাবেন:
ঢাকার মহাখালী থেকে সরাসরি ধনবাড়ির বাস ছাড়ে। সময়
নেবে ৪ ঘণ্টা আর
ভাড়া সম্ভবত ২০০ টাকা। রয়্যাল
রিসোর্ট এর ভাড়া ২০০০ টাকা থেকে শুরু।
৪১/রিভার প্যালেস, ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহ শহর পার হয়ে মুক্তাকাছার দিকে মাইল তিনেক গেলে হাতের ডানে খাগডহরে ব্রহ্মপুত্র নদী তীরে গড়ে উঠেছে River Palace নামে অনিন্দ্য সুন্দর এক রিসোর্ট। এ
রিসোর্ট এর বারান্দায় বা পেছনের নদী তীরে বসে একটা রাত নয় গোটা জীবনটাই পার করে দেয়া যায়।
কীভাবে যাবেন:
ময়মনসিংহ পর্যন্ত বাসে। বাস
স্ট্যান্ড থেকে কাচিঝুলি পর্যন্ত যাবেন রিক্সায়। এরপর
মুক্তাকাছার ম্যাক্সিতে উঠে বসবেন। রিসোর্ট
ভাড়া ১০০০, ১৫০০ এবং ২০০০ টাকা। এখানে
খেতে গেলে ওনাদের মেনু থেকে বেছে দিলে সেভাবে রান্না করে দেয়। জনপ্রতি
৩০০-৩৫০ টাকা লাগে খেতে।
৪২/সাদুল্লাপুর, সাভার
সাভার উপজেলায় অবস্থিত। বর্ষাকালে
মিরপুর সিন্নিরটেক ল্যান্ডিং স্টেশন থেকে নৌকা নিয়ে যেতে পারেন আধা ঘণ্টা পরে এটি সাদুল্যাপুর গ্রামে পৌঁছাতে হবে. এই গ্রামে অনেক ফুলের বাগান পাবেন। এই
এলাকা থেকে প্রতিদিন অনেক গুলো ফুলের ট্রাক ঢাকা আসে। ডে
ট্রিপের জন্য আদর্শ একটি জায়গা। তবে,
এখন বিরুলিয়া ব্রিজ হয়ে যাওয়ায় সরাসরি মিরপুর বা উত্তরা থেকে আকারান বাজার হয়ে সাদুল্লাপুর ফুলের ক্ষেতে যেতে পারবেন।
৪৩/কলাকোপা বান্দুরা
বাংলার ইতিহাস ঐতিহ্যের বিশাল ভাণ্ডার কলাকোপা বান্দুরা হতে পারে ডে আউটের জন্য আদর্শ একটি স্থান। ঢাকা
থেকে মাত্র ৩৫ কিমি: দুরের ইছামতী নদী তীরে গড়ে ওঠা প্রায় ২০০ বছরের সমৃদ্ধ এ জনপদটি এককোণ
ভীড় ভাট্টা থেকে দূরে। তাই
চলুন যে কোন এক সকালে।
কীভাবে যাবেন:
গুলিস্তান মাজারের কাছ থেকে কলাকোপা বান্দুরাগামী বাস এন. মল্লিক ছাড়ে প্রতি ঘন্টায়। এখান
থেকে বাসে চেপে ঘন্টা দুয়েক পরে পৌছে যাবেন কলাকোপা বান্দুরা।
৪৪/
বেলাই বিল, গাজীপুর
গাজীপুরের চিলাই নদী এবং সংলগ্ন বেলাই বিল হতে পারে ১ টা দিন
কাটাবার আদর্শ জায়গা। বিশাল
জলাভূমিতে নৌকায় করে সারাটা দিন পার করুন আর দেখুন জেলেদের মাছ ধরা। সকালে
ও এবং বিকেলে তাজা মাছ পাওয়া যায় এখানটায়। আসার
সময় কিনে নিয়ে আসুন।
কানাইয়া বাজারের পাশেই চিলাই নদী। এখানে
একটা নৌকা ভাড়া করে নিন। ছোট
নৌকা হলে সারাদিন নেবে ৫/৬ শ
টাকা। আর
বড় নৌকা ২০০০ টাকা। রাতে
নৌকাতেই থাকতে পারেন। এটা
করলে বাজার কমিটিকে জানিয়ে রাখবেন আগেভাগে।
কিভাবে যাবেন:
মতিঝিল বা মহাখালী থেকে গাজীপুরগামী বিআরটিসি বা গাজীপুর পরিবহনের বাসে উঠুন। নামবেন
গাজীপুর শিববাড়ি মোড় এ। একটু
হেটে সামনে গিয়ে কানাইয়া বাজার যাবার টেম্পুতে উঠুন। ৩০
মিনিট পর কানাইয়া বাজারে নামুন। ভাড়া
নেবে ১০ টাকা।
0 Comments