ভোজনরসিক মানুষের জীবনে ডেজার্ট অন্যতম
একটি আইটেম যা ছাড়া
খাবার যেন জমেই না। আজ
আমাদের আয়োজন বেশ কিছু
ডেজার্ট আইটেম নিয়ে যা
সারা বিশ্ব জুড়ে বিখ্যাত।
১. স্মোরস কেক ইন
এ জার
স্মোর
কথাটি এসেছে আসলে “সাম
মোর” (Some more>
s’more)থেকে। এটি
আমেরিকা এবং কানাডার খুবই
জনপ্রিয় একটি আয়োজন।
১০ই আগস্ট ন্যাশনাল স্মোরস
ডে পালিত হয়ে থাকে। ১৯২০
সালে ক্যাম্পফায়ার স্মোর’স কোম্পানির
একটি রেসিপি বই থেকে
এই রেসিপি পাওয়া যায়
যার নাম ছিল গ্রাহাম
ক্র্যাকারস স্যান্ডুইচ। গ্রাহাম
ক্র্যাকারস একধরনের বিস্কুট যা সারা বিশ্বের
বিভিন্ন দেশে এখনও চিজ
কেক তৈরিতে খুব বেশি
ব্যবহৃত হয়।
যা যা লাগবে–দেড়
কাপ বিস্কুট গুড়া,২০০ গ্রাম
মাখন,এক চিমটি লবণ,৩৫০ ডিগ্রি তাপমাত্রায়
ওভেন গরম করে নিন। বিস্কুট
গুড়া, মাখন এবং লবণ
একসাথে মেশান যতক্ষণ না
পুরো মাখন গলে মিশ্রণটিকে
নরম করে। একটি
বয়ামে হালকা করে মাখন
বা তেল ব্রাশ করে
নিন। এরপর
চামচের সাহায্যে বয়ামে মিশ্রণটি চেপে
চেপে বসিয়ে দিন।২ কাপ ময়দা,এক-চতুর্থাংশ কোকোয়া
পাউডার,দেড় চা চামচ
বেকিং সোডা,পৌনে এক
কাপ গুড়ের চিনি (ব্রাউন
সুগার),১টি ডিম,১
চা চামচ ভ্যানিলা এসেন্স,আধা কাপ দুধ,আধা কাপ দুধের
সর,আধা কাপ গলানো
মাখন,২ টেবিল চামচ
টক দই (ঘন),এক
ব্যাগ মার্শম্যালো
একটি পাত্রে ডিম এবং
চিনি ফেটে ঘন মিশ্রণ
তৈরি করুন। তাতে
একে একে দুধ, সর,
মাখন, ভ্যানিলা এসেন্স মেশান।
এরপর শুকনো উপাদানগুলো এক
এক করে ঢেলে দিন। একদম
মিশে না যাওয়া পর্যন্ত
নাড়তে থাকুন। এবার
যে বয়ামে আগের অংশ
সংরক্ষণ করেছেন তাতে চামচের
সাহায্যে এই মিশ্রণ একটু
একটু করে ঢালুন।
বয়ামের অর্ধেক অংশ পর্যন্ত
ভরে গেলে আর ঢালবেন
না। এবার
তাতে দেড় কাপ পানি
দিন। মুখ
খোলা রেখেই ৩০ মিনিট
বেক করুন।কেক
গরম থাকা অবস্থায় এর
উপর মার্শম্যালো ছড়িয়ে দিন।
এরপর ১ থেকে দেড়
মিনিট ওভেনে রাখুন যেন
মার্শম্যালো গলে গিয়ে ছড়িয়ে
পড়ে।ব্যাস,
হয়ে গেলো চমৎকার একটি
ডেজার্ট!
২. মেয়ার লেমন বারস
আগেই বলে নিই, মেয়ার
লেবু আসলে একধরনের হাইব্রিড
জাতের লেবু। এই
লেবু সাধারণত চীনে পাওয়া যায়। এর
স্বাদ অন্যান্য লেবুর চেয়ে ভিন্ন,
একটু মিষ্টি। এটি
আকারে বড় হয় এবং
এর খোসা পাতলা হয়ে
থাকে। মেয়ার
লেবু দেখতে কমলালেবুর মতো। বিংশ
শতাব্দীতে ফ্র্যাঙ্ক মেয়ার প্রথম এই
লেবু আবিষ্কার করেন এবং নিজ
নামানুসারে নামকরণ করেন।
ধরে নেয়া হয়, এই
লেমন বারের উৎপত্তিও চীন
থেকেই হয়েছে, যদিও এর
তেমন কোনো ইতিহাস পাওয়া
যায় না।তবে
এই লেবু হাতের কাছে
না পেলেও অন্য লেবু
দিয়ে এই মিষ্টান্ন তৈরি
করা সম্ভব।
যা যা লাগবে–সোয়া
এক কাপ ময়দা,আধা
কাপ মিহি দানার চিনি,আধা কাপ মোটা
দানার চিনি,এক চিমটি
লবণ,৮ টেবিল চামচ
মাখন (ফ্রিজে রেখে শক্ত
করা এবং ৮ টুকরা
করা),৯ ইঞ্চি চতুর্ভুজ
আকারের পাত্রে দুটি অ্যালুমিনিয়াম
ফয়েল পেপার বিছিয়ে দিন। ময়দা,
চিনি, লবণ ফুড প্রসেসরে
নিয়ে দুই সেকেন্ড ধরে
মেশান। এরপর
মাখন দিয়ে আরও আট
থেকে দশ সেকেন্ড মেশান। মিশ্রণটি
পাত্রে ঢেলে দিন।
৩০ মিনিট ফ্রিজে রাখুন,৭টি ডিমের কুসুম,২টি ডিম,এক
কাপ চিনি (কেক এর
জন্য),৩ কাপ লেবুর
রস,৩ টেবিল চামচ
ঘন দুধের সর,আধা
চামচ লবণ,৪ টেবিল
চামচ মাখন (ফ্রিজে রেখে
শক্ত করা এবং ৪
টুকরা করা),
৩৫০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায়
ওভেন গরম করে নিন। একটি
পাত্রে ডিমের কুসুম, চিনি,
ডিম এবং লেবুর রস
একসাথে মিশিয়ে ফোম বানিয়ে
নিন। এতে
মাখন যোগ করে ১৬০
ডিগ্রি তাপমাত্রায় ৬ মিনিট ধরে
নাড়তে থাকুন। তারপর
একটি স্টিলের পাত্রে মিশ্রণটি নিয়ে
ঠাণ্ডা করুন। ঠাণ্ডা
হয়ে গেলে সর যোগ
করুন এবং পুরো মিশ্রণটি
চতুর্ভুজ পাত্রটিতে ঢেলে দিন।
১০ মিনিট বেক করুন। পরিবেশনের
আগে চিনি ছড়িয়ে দিন
(ঐচ্ছিক)।
৩. বাটারফিংগার চিজকেক বারস
বাটারফিঙ্গার
একধরনের চকলেট যা ১৯২৩
সালে প্রথম শিকাগোতে তৈরি
হয়। মূলত
এই চকলেট থেকেই এই
কেক তৈরি করা হয়,
তবে হাতের কাছে এই
চকলেট না পেলে অন্য
চকলেট দিয়ে আপনি রেসিপিটি
বানিয়ে নিতে পারবেন।
উপকরণ
আধা কাপ মাখন (গলানো),আধা কাপ ব্রাউন
সুগার,১টি ডিম,আধা
চামচ ভ্যানিলা এসেন্স,পৌনে এক
কাপ ময়দা এবং ২
টেবিল চামচ ময়দা (আলাদা
করে রাখা),দেড় কাপ
চকলেট চিপস এবং এর
থেকে আধা কাপ আলাদা
করে রাখা,৫টি বাটারফিঙ্গার
বা অন্য কোনো চকলেট
বার,৮ আউন্স ক্রিম
চিজ,আধা কাপ সাদা
চিনি,কেক তৈরির প্যানের
চারপাশে এক ইঞ্চি জায়গা
জুড়ে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল পেপার বসান। ওভেন
৩৭৫ ডিগ্রি তাপমাত্রায় গরম
করুন।চকলেট
চিপস লেয়ার,মাখনের সাথে
ব্রাউন সুগার, ডিম এবং
ভ্যানিলা মিশিয়ে নিন।
এতে ময়দা এবং চকলেট
চিপস এক কাপ যোগ
করুন। মিশ্রণটি
প্যানে ঢেলে দিন।চিজকেক,ক্রিম চিজ,
সাদা চিনি, একটি ডিম
এবং একটু ভ্যানিলা এসেন্স
একসাথে ব্লেন্ড করুন।
সবশেষে
চকলেট চিপস লেয়ার প্যানে
ঢেলে দিন। চকলেট
বার এক এক করে
বসিয়ে দিন। চিজকেক
ব্লেণ্ড করা অংশটুকু উপরে
ঢেলে দিন। আধা
কাপ চকলেট চিপস উপরে
ছড়িয়ে দিন। ৩৭৫
ডিগ্রি তাপমাত্রায় ৩০ থেকে ৪০
মিনিট বেক করুন।
এরপর উপভোগ করুন নরম
মজাদার এবং খুবই সুস্বাদু
বাটারফিংগার চিজকেক বারস।
৪. বাটারস্কচ পিনাট বাটার কেক
যা যা লাগবে
৪০০ গ্রাম মাখন,১
কৌটা পিনাট বাটার,১
টেবিল চামচ ভ্যানিলা এসেন্স,৪টি ডিম,৩
কাপ ব্রাউন সুগার,আড়াই
কাপ ময়দা,১ টেবিল
চামচ বেকিং পাউডার,১
টেবিল চামচ বেকিং সোডা,আধা টেবিল চামচ
লবণ,এক কাপ ঘোল
ঘোল ছাড়া বাকি সব
তরল উপাদান এবং শুকনা
উপাদান আলাদা করে মেশান। তারপর
দুটি উপাদান একসাথে মেশান। এবার
পৌনে এক কাপ কেক
মিক্স এবং আধা কাপ
ঘোল এভাবে পালা করে
নিয়ে পুরো মিশ্রণটি একটি
পাত্রে নিন। ৩৫০
ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় ২৫/৩৫ মিনিট
বেক করুন।আপনি
চাইলে এর উপরে পিনাট
বাটার এবং পিনাট বিস্কুটের
একটি লেয়ার দিতে পারেন। পছন্দমত
সাজিয়ে নিন আপনার তৈরি
করা মুখরোচক এই কেক।
৫. মিন্ট ওরিও কেক
নাম শুনেই জিভে জল
চলে আসছে, তাই না?
সত্যিই খুবই মজার একটি
কেক এটি। চকলেট
এবং মিন্টের কম্বিনেশনে তৈরি এই কেকটি
দেখতেও দারুন। চলুন
তবে দেখে আসি কী
কী লাগবে এই কেক
তৈরিতে।
২০০ গ্রাম মাখন,৫
আউন্স ডার্ক চকলেট,১
কাপ টক দই,১
কাপ চিনি,৩টি ডিম,১ কাপ ময়দা,আধা কাপ কোকোয়া
পাউডার,দেড় চা চামচ
বেকিং সোডা,আধা চামচ
লবণ,১ চা চামচ
বেকিং পাউডার,আরও যা
যা লাগবে,মিন্টের ফ্রস্টিং
(রেসিপি নীচে দ্রষ্টব্য),এক
প্যাকেট মিন্ট ওরিও বিস্কিট,
৩৫০ ডিগ্রি তাপে ওভেন
গরম করে নিন।
দুটি ৯ ইঞ্চি আকারের
কেক প্যান নিন।
টক দই, মাখন এবং
চকলেট একসাথে মিশিয়ে নিন। এর
জন্য আপনাকে হালকা তাপ
দিতে হবে। এতে
ডার্ক চকলেট গলে মিশে
যাবে। আলাদা
পাত্রে ডিম, চিনি এবং
ভ্যানিলা মেশান। ভালোভাবে
মিশে গেলে চকলেট মিশ্রণটির
সাথে মিশিয়ে নিন।
একে একে বাকি উপকরণগুলো
মিশিয়ে দিন। দুটি
আলাদা প্যানে সমান দুই
ভাগে কেক মিশ্রণটি ছড়িয়ে
দিন। ১৫
মিনিট বেক করুন।কেক তৈরি হয়ে
গেলে সম্পূর্ণ ঠাণ্ডা করে নিন। ওরিও
বিস্কিট হাতে ভেঙ্গে ছোট
ছোট টুকরা করে নিন। মিন্টের
ফ্রস্টিং দিয়ে তারপর ওরিও
বিস্কিট ছড়িয়ে দিন।
মিন্টের
ফ্রস্টিং রেসিপি
৮ আউন্স ক্রিম চিজ,২ কাপ মাখন,২ টেবিল চামচ
পুদিনার নির্যাস,৩ ফোটা সবুজ
ফুড কালারিং,৩ কাপ মিহিদানার
চিনি,
প্রথমে
চিজ এবং মাখন ভালমত
ফেটে নিন। এরপর
এতে আধা কাপ করে
চিনি মেশান এবং ফেটে
নিন। পুদিনার
ফ্লেভার এবং ফুড কালারিং
মিশিয়ে ফেটতে থাকুন যতক্ষণ
না ঘন ক্রিমি হয়ে
আসে।আপনি
চাইলে পরিবেশনের আগে কেকের উপর
আরও চকলেট ছড়িয়ে দিতে
পারেন। ফ্রিজে
ঠাণ্ডা করে তারপর পরিবেশন
করুন।
0 Comments