বাহারি রকমের ভাপা পিঠা
বাংলাদেশে এলাকা অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন এবং আলাদা রকম পিঠা তৈরি হয়ে থাকে। গ্রামাঞ্চলে সাধারণত নতুন ধান উঠার পর থেকেই পিঠা তৈরির আয়োজন করা হয়। শীতের সময় পিঠার বাহারি উপস্থাপন ও আধিক্য দেখা যায়।
তবে এসকল পিঠার মধ্যে ভাপা পিঠা নিঃসন্দেহে একটা গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে।
ভাপা পিঠা
শীতে ভাপা পিঠার
কদর বেড়ে যায় বহুগুণে। খেঁজুর
গুঁড় ও নারকেল মেশানো
ভাপা পিঠার জুড়ি মেলা
ভার। এই
পিঠা না খেলে যেন
শীতের দিন কাটেই না!আর তাইতো রাস্তার
ধারে শীতকাল এলে ভ্রাম্যমান
পিঠর দোকানে ধোয়া উঠা
ভাপা পিঠা খেতে মানুষের
সমাগম চোখে পড়ে।
ভাপা পিঠা রেসিপি-
ঘরে বসেই খুব
সহজে ভাপা পিঠা বানানোর
নিয়ম নিয়ে আজ আমরা
আলোচনা করব ।
প্রাথমিক উপকরণঃ
·
চালের
গুঁড়া ১ কেজি
·
নারিকেল
১ টা ( কোরানো )
·
গুঁড়
কুচানো ( ২৫০ গ্রাম )
·
লবণ
( পরিমাণমত )
·
পানি
( পরিমাণমত )
অন্যান্য উপকরণঃ
·
২
টুকরা সাদা পাতলা নরম
কাপড়ের টুকরা
·
ছোট্ট
ঢাকনা
·
পিঠা
বানানোর জন্য ছোট গোল
বাটি
·
পিঠা
ভাপানোর জন্য ঢাকনা সহ
বিশেষ পাত্র অথবা ভাপা
পিঠার মাটির হাড়ি
·
চালনি
ভাপা পিঠার জন্য চালের গুঁড়া তৈরি করবেন যেভাবেঃ
·
আতপ
চাল ভালো করে ধুয়ে
পানিতে ভিজিয়ে রাখুন ১০
মিনিট।
·
পানি
ঝরিয়ে একটি সুতি কাপড়
কয়েক ভাঁজ করে উপরে
বিছিয়ে দিন।
·
ঘণ্টা
খানেক পর চাল ঝরঝরে
হয়ে গেলে মেশিনে ভেঙে
নিতে পারেন। পাটায়
বেটেও নেওয়া যায়।
·
গুঁড়া
তৈরি হলে একটি শুকনা
সুতি কাপড়ের উপর ছড়িয়ে
শুকিয়ে নিন আরেকবার।
সারা বছর ডিপফ্রিজে রেখে
সংরক্ষণ করতে পারবেন এই
চালের গুঁড়া।
·
চাইলে
কয়েক ধরনের চালের গুঁড়া
এক সঙ্গে ব্যবহার করে
বানাতে পারেন ভাপা পিঠা।
·
সেক্ষেত্রে
আড়াই কেজি আতপ চাল,
পৌনে ১ কেজি পোলাওয়ের
চাল ও আধা কেজি
ভাতের চাল একসঙ্গে গুঁড়া
করে নিন।
প্রস্তুত প্রণালীঃ
১. একটি পাত্রে
চালের গুঁড়া , লবণ ও অল্প
অল্প পানি দিয়ে ঝরঝরে
করে ভালো ভাবে মাখতে
হবে যেন দলা পাকিয়ে
না যায় , খেয়াল রাখবেন
ঝরঝরে হতে হবে ।
২. এইবার এই
চালের গুঁড়া চালনিতে হাত
দিয়ে ঘষে ঘষে চালতে
হবে । ঝরঝরে
সুজির দানার মত বের
হবে ।
৩. কোরানো নারিকেলের
অর্ধেকটা চেলে নেয়া চালের
গুঁড়ার সাথে মাখতে হবে
।
৪. এইবার হাঁড়ির
অর্ধেকটা পানিতে ভরে জ্বাল
দিয়ে পানি ফুটে ভাপ
ওঠা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে ।
ভাপা পিঠার জন্য বাজারে
বিশেষ এক ধরনের হাড়ি
পাওয়া যায় , সেটিও ব্যবাহার
করতে পারেন । এই
হাঁড়িটির ঢাকনার ঠিক মাঝখানে
একটা ফুটো থাকে ।
হাড়ি কিনারায় বাতাস চলাচল আটকে
দেয়া হয় তাই ভাপটা
ফুটো দিয়েই বের হয়
।
৫. এখন পিঠার
জন্য ছোট বাটিতে এক
ফোটা তেল মেখে কিছু
মাখানো চালের গুঁড়া দিয়ে
তার উপর গুঁড় ছিটিয়ে
দিতে হবে । এবং
এর উপর আবার চালের
গুঁড়া দিয়ে ঢেকে দিতে
হবে । আলতো
হাতে চেপে সমান করে
ভাপা পিঠার আকার তৈরি
করে নিতে হবে ।
৬. এবার বাটিটা
ভেজা পাতলা কাপড় দিয়ে
ঢেকে গরম পানির হাঁড়ির
উপর উপুড় করে বসিয়ে
দিতে হবে । এবার
বাটিটা আস্তে করে সরিয়ে
নিতে হবে । খেয়াল
করতে হবে যেন পিঠা
ভেঙ্গে না যায় ।
৭. কাপড়ের প্রান্ত
গুলি মুড়ে এক জায়গায়
করে বড় ঢাকনা দিয়ে
ঢেকে দিতে হবে, যেন
ভাপটা পিঠার গায়ে লাগে
। ৫/৭
মিনিট ভাপে সেদ্ধ হলে
ঢাকনা সরিয়ে আঙ্গুল দিয়ে
চেপে দেখতে হবে নরম
হয়েছে কিনা । নরম
হলে বুঝতে হবে পিঠা
পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত ।
তারপর পিঠাটিতে নারিকেলের গুঁড়া ছড়িয়ে গরম
গরম পরিবেশন করুন।
প্রেসার
কুকারে ভাপা পিঠা রেসিপি
প্রেসার কুকারের ভাপে মাত্র দেড় থেকে দুই
মিনিটের মধ্যেই তৈরি করে ফেলা যায় ভাপা পিঠা। বাসায় ভাপা পিঠা তৈরি করাকে যারা ঝুকি
মনে করেন, তারা এই পদ্ধতিতে বানিয়ে দেখতে পারেন।
প্রাথমিক উপকরণঃ
·
চালের
গুঁড়া ১ কেজি
·
নারিকেল
১ টা ( কোরানো )
·
গুঁড়
কুচানো ( ২৫০ গ্রাম )
·
লবণ
( পরিমাণমত )
·
পানি
( পরিমাণমত )
অন্যান্য উপকরণঃ
·
২
টুকরা সাদা পাতলা নরম
কাপড়ের টুকরা
·
ছোট্ট
ঢাকনা
·
পিঠা
বানানোর জন্য ছোট গোল
বাটি
·
পিঠা
ভাপানোর জন্য ঢাকনা সহ
বিশেষ পাত্র অথবা ভাপা
পিঠার মাটির হাড়ি
·
চালনি
ভাপা পিঠার জন্য চালের গুঁড়া তৈরি করবেন যেভাবেঃ
·
আতপ
চাল ভালো করে ধুয়ে
পানিতে ভিজিয়ে রাখুন ১০
মিনিট।
·
পানি
ঝরিয়ে একটি সুতি কাপড়
কয়েক ভাঁজ করে উপরে
বিছিয়ে দিন।
·
ঘণ্টা
খানেক পর চাল ঝরঝরে
হয়ে গেলে মেশিনে ভেঙে
নিতে পারেন। পাটায়
বেটেও নেওয়া যায়।
·
গুঁড়া
তৈরি হলে একটি শুকনা
সুতি কাপড়ের উপর ছড়িয়ে
শুকিয়ে নিন আরেকবার।
সারা বছর ডিপফ্রিজে রেখে
সংরক্ষণ করতে পারবেন এই
চালের গুঁড়া।
·
চাইলে
কয়েক ধরনের চালের গুঁড়া
এক সঙ্গে ব্যবহার করে
বানাতে পারেন ভাপা পিঠা।
·
সেক্ষেত্রে
আড়াই কেজি আতপ চাল,
পৌনে ১ কেজি পোলাওয়ের
চাল ও আধা কেজি
ভাতের চাল একসঙ্গে গুঁড়া
করে নিন।
প্রস্তুত প্রণালীঃ
১. একটি পাত্রে চালের গুঁড়া , লবণ ও অল্প
অল্প পানি দিয়ে ঝরঝরে করে ভালো ভাবে মাখতে হবে যেন দলা পাকিয়ে না যায় , খেয়াল রাখবেন
ঝরঝরে হতে হবে ।
২. এইবার এই চালের গুঁড়া চালনিতে হাত দিয়ে
ঘষে ঘষে চালতে হবে । ঝরঝরে সুজির দানার মত বের হবে ।
3. পিঠা বসানোর জন্য
পছন্দ মতো আকারের বাটি
নিন। কেকের
মোল্ডের ভেতরেও তৈরি করা
যায় পিঠা। বাটিতে
প্রথমে চালের গুঁড়া ছড়িয়ে
উপরে গুড় দিন।
4. দুইভাবে কাটা নারকেল ব্যবহার
করতে পারেন। নারকেল
কোড়ানো এবং স্লাইস।
গুড়ের পরিমাণ হবে স্বাদ
অনুযায়ী। উপরে
নারকেল কোড়ানো দিয়ে আবারও
চালের গুঁড়া দিয়ে ঢেকে
দিন। এবার
একদম উপরে কয়েক স্লাইস
নারকেল দিন।
5. পাতলা
সুতি সাদা কাপড় পানিতে
ভিজিয়ে নিংড়ে নিন।
ভেজা কাপড়ের উপর বাটি
উল্টো করে ধরে সাবধানে
পিঠা নামিয়ে নিন।
কাপড়ের উপরের অংশ মুড়ে
নিন পিঠাসহ।
6. একটি বয়ামের উপর
হাতলওয়ালা ফানেল বসান।
ফানেলের ভেতরের অংশ সমান
হলে পিঠা দেখতে ভালো
লাগবে। এবার
ফানেলের ভেতরে কাপড়সহ পিঠা
রেখে দিন।
7. প্রেসার কুকারে এক বোতল
পানি দিয়ে ঢাকনা আটকে
চুলায় বসিয়ে দিন উচ্চতাপে। বলক
ওঠার আগে সিটি বের
হওয়ার অংশ থেকে ক্যাপ
খুলে পিঠাসহ ফানেল বসিয়ে
দিন। দেড়
থেকে দুই মিনিটের মধ্যেই
হয়ে যাবে মজাদার ভাপা
পিঠা!
8. পিঠা
হয়ে গেলে ফানেল থেকে
কাপড় উঠিয়ে প্লেটে নিয়ে
নিন। পরিবেশন
করুন গরম গরম।
অতিরিক্ত পিঠা রয়ে গেলে
মুখবন্ধ বাটিতে রেখে দিন
নরমাল ফ্রিজে। খাওয়ার
আগে বের করে সামান্য
পানি ছিটিয়ে মাইক্রোওয়েভে গরম
করে নিন।
শাহি ভাপা পিঠার রেসিপি
উপকরণঃ
·
2 কাপ সেদ্ধ চালের গুঁড়া
·
2 কাপ পোলাওর চালের গুঁড়া
·
1.5 কাপ খেজুরের গুড়
·
2 কাপ নারকেল কোরানো
·
1 কাপ দুধের ক্ষীর
·
1 কাপ মালাই
·
0.5 কাপ পেস্তাবাদাম কুচি
·
2 টেবিল চামচ কিশমিশ
প্রস্তুত প্রণালীঃ
পিঠার হাঁড়িতে বাষ্প করতে হবে। চালের গুঁড়ায় স্বাদমতো লবণ ও পরিমাণমতো কুসুম গরম পানি এমনভাবে মেশাতে হবে যেন চালের গুঁড়া দলা না বাঁধে। চালের গুঁড়া বাঁশের চালনিতে চেলে নিতে হবে। গুঁড়ায় অর্ধেক নারকেল কোরানো মেশাতে হবে। একটি বাটিতে অল্প কিছু চালের গুঁড়া, কিছু নারকেল মাখানো চালের গুঁড়া, কিছু গুড় দিয়ে এর ওপর আবার নারকেল মাখানো চালের গুঁড়া দিয়ে দুধের ক্ষীর, পেস্তাবাদাম, কিশমিশ দিয়ে আবার কিছু চালের গুঁড়া মিশিয়ে এটি পাতলা ভেজা কাপড় দিয়ে ধরে গরম পিঠার হাঁড়ির মুখে রেখে বাটি উল্টে দিন। এরপর তা ঢেকে দিয়ে ১০-১২ মিনিট পর কাপড়সহ পিঠা তুলে কাপড় থেকে ছাড়িয়ে রাখুন। পিঠার ওপর মালাই পেস্তাবাদাম কুচি দিয়ে গরম গরম পরিবেশন করতে হবে। এভাবে সব পিঠা করতে হবে।
খেজুর
রসের ভাপা পিঠা-
উপকরনঃ
·
ঘন
খেজুরের রস আধা কাপ,
·
পাতলা
খেজুরের রস ২ কাপ,
·
মিহি
কুরানো নারকেল ১ কাপ
,
·
সেদ্ধ
চালের গুড়া ২ কাপ,
·
আতপ
চালের গুড়া আধা কাপ,
·
পানি
১ কেজি,
·
পাতলা
কাপর ২ টা,
·
একটি
ভাপা পিঠার হাড়ি ও
পিঠা বানানোর বাটি।
প্রস্তত প্রণালীঃ
সেদ্ধ
ও আতপ চালের গুড়া
লবন দিয়ে আস্তে আস্তে
মাখাতে হবে সাথে ঘন
রস দিয়ে মাখতে হবে
। যাতে পুরো
মিইক্সরন ঝরজরে থাকে। খেয়াল রাখতে হবে
যেন চাকা না হয়। তারপর
একটা মোটা চালনিতে মিক্সরন
চালে নিতে হবে হাল্কা
হাতে নারকেল মিশাতে হবে।হারি
তে পানি ফুটে উঠলে
বাটিতে হাল্কা হাতে চেপে
পিঠা বসাতে হবে।
কাপরে বাটি পেচিয়ে ফুটন্ত
পানির মুখে দিতে হবে.৫-৬ মিনিট
পর নামিয়ে খেজুরের রসে
ভিজিয়ে খেতে হবে।
0 Comments