শরীরচর্চা কতক্ষণ ও কীভাবে করবেন


ব্যায়ামঃ
মানুষের জীবনে শরীরের উপর সব কিছুই নির্ভর করে। শরীর ভাল না থাকলে মনও ভাল থাকে না, আর মন ভাল না থাকলে কোন কাজও সঠিকভাবে করা যায় না। আর তাই শরীরটাকে ফিট রাখতে দরকার শরীরচর্চা বা ব্যায়ামের।

সুস্থভাবে বাঁচার জন্য নিয়মিত শরীরচর্চা করা উচিত। তবে কখন করতে হবে আর কখন করা যাবে না, অনেকেই জানেন না। বিষয়ে শরীর চর্চাবিদেরা বলেন, শরীর সুস্থ রাখতে ব্যায়াম করা জরুরি। তবে ব্যায়ামের সময় নিয়ে অনেকেই পড়েন বিপত্তিতে। কেউ হয়তো ইচ্ছা থাকলেও সময় করে উঠতে পারেন না। আবার যখন সময় পান তখন ব্যায়াম করা ঠিক হবে কি না বুঝে উঠতে পারেন না। শুধু নিয়মিত ব্যায়াম করলেই যে শরীর সুস্থ থাকবে, সেটাও না।

কোন সময়ে ব্যায়াম করা ভালো, আর কখন ব্যায়াম করা ঠিক নয় সে বিষয়ে

কখন শরীরচর্চা করবেন : সারাদিন ব্যস্ত থাকি ব্যায়াম করার সময় নেই। শরীরচর্চা করতে আপনাকে জিমে বা পার্কে যেতেই হবে এমন কোনো কথা নেই। আপনি যে কোনো সময় যে কোনো জায়গায় ব্যায়াম করতে পারেন। হাঁটা হল সবচেয়ে সহজ উপকারী শরীরচর্চা।

সকালে বা সন্ধ্যায় পার্কে গিয়ে বা ওয়াকওয়েতে হাঁটা সবচেয়ে ভালো। আপনি যদি বাসার কিলোমিটার আগেই বাস থেকে নেমে পড়েন এবং এই রাস্তাটুকু হেঁটে যান তবে কী আপনার দিনের হাঁটা হাঁটতে বাড়তি সময় বের করতে হয়? অনেক যুবক ছেলেমেয়ে ঢাকার রাস্তায় সাইকেল চালাচ্ছেন। এদের অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল পড়ুয়া অনেকে চাকরিজীবী। বড় বড় পদের অনেক কর্মকর্তাকে দেখা যায় যিনি কিনা সাইকেল চালিয়ে অফিসে যান!

শরীরচর্চা যখন ক্ষতির কারণ : 
সব কিছুরই ভালো মন্দ দিক থাকবে। শরীরচর্চাও এর ব্যতিক্রম নয়। শরীরচর্চা করতে গিয়ে হরহামেশাই অনেকে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে থাকেন। দেখা যায় জিম বা ব্যায়ামাগারে গিয়ে ভারি ব্যায়াম করতে গিয়ে এরা শরীরের ঘাড়, কোমর, পা হাঁটুতে আঘাত প্রাপ্ত হয়েছেন। অনেক ব্যায়ামাগারেই প্রশিক্ষিত ট্রেইনার নেই। শরীরের ধরন অনুযায়ী ব্যায়াম না করলে উল্টো ফলই হবে।

অনেকের ধারণা জিমে গিয়ে খুব করে কয়েকদিন ব্যায়াম করলেই শরীর ফিট হয়ে যাবে। এটি ভ্রান্ত ধারণা। যারা অভিনয়, মডেলিং বা শরীর গঠন প্রতিযোগিতায় যেতে চান কেবল তাদেরই জন্য ব্যায়ামাগার বা জিম এক্সারসাইজ মানানসই। অনেকে শরীর গঠনের জন্য নানা ধরনের অনুমোদনহীন খাদ্য বা স্টেরয়েড গ্রহণ করেন যা একেবারেই ভুল কাজ। এতে শরীরে মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে।

ব্যথার রোগীরা কি ব্যায়াম করবেন
ব্যথার রোগীদের অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বৈজ্ঞানিক ব্যায়াম করতে হবে। যাকে আমরা Therapeutie Exercise বলি। শরীরের বিশেষ বিশেষ অংশের জন্য বিশেষ ব্যায়াম আছে যা কেবল চিকিৎসকেরই ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী করতে হবে। ধরুন হাঁটু ব্যথার রোগীরা যদি খুব বেশি হাঁটেন তবে হাঁটু ব্যথা বেড়ে যেতে পারে, এক্ষেত্রে রোগী সাঁতার কাটতে পারেন বা স্ট্যাটিক সাইক্লিং করতে পারেন।

কতক্ষণ ব্যায়াম করবেন : 
৩০ মিনিট করে সপ্তাহে দিন ব্যায়ামই শরীর সুস্থ রাখার জন্য যথেষ্ট। তবে শরীরের গঠন রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য আরও বেশি সময় ব্যায়াম করা যেতে পারে। যেমন একজন ডায়াবেটিক রোগী সপ্তাহে দিন ঘণ্টা করে হাঁটলে সুস্থ থাকেন। যারা ওজন কমাতে চান তাদের উচিত প্রতিদিন ৪০-৪৫ মিনিট হাঁটা। এই হাঁটা কিন্তু ঢিমেতালে হাঁটা নয়। এমন গতিতে হাঁটতে হবে যাতে শরীর ঘেমে ওঠে, গতি হবে ঘণ্টায় - কিলোমিটার।

হাঁটার হিসাব যেভাবে রাখবেন : 
টেকনোলজি আমাদের জীবনকে যেমন স্থবির করে দিয়েছে তেমনি দিয়েছে অনেক সুবিধা। দুই থেকে পাঁচ হাজার টাকা খরচ করে একটি ফিটনেস ট্রাকার বা স্মার্ট ওয়াচ কিনে নিলেই সেই সব হিসাব রাখবে। দিন শেষে দেখে নিতে পারবেন আপনি কত স্টেপ হেঁটেছেন এবং শরীরের কত ক্যালরি খরচ করেছেন।

সেরাজেন, সুস্থতা হাঁটাহাঁটি : 
শোনা যায় ডায়াবেটিক রোগী সেরাজেন মেশিনে হিট নিলেই তার ঘণ্টা হাঁটার কাজ হয়ে যায়। এটা একেবারেই ভিত্তিহীন। শরীরচর্চা কেবলমাত্র হাঁটা, সাঁতার, খেলাধুলা বা ব্যায়ামাগারের ব্যায়ামের মাধ্যমেই হতে পারে, অন্যভাবে নয়

0 Comments