ত্বকের লাবণ্য ও উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে হারবাল ফেসপ্যাক


হারবাল  ফেসপ্যাক
গরম পরতে পরতেই হাজারো একটা সান স্ক্রিন লোশান এসে হাজির মার্কেটে ভাবছেন হয়তো সেরা একটা বেছে নিলেই সান ট্যান থেকে মুক্তি? কিন্তু না সূর্যের রশ্মি ক্রিম ভেদ করেও আমাদের ত্বক খারাপ করে সহজেই নিজেকে সবাই সুন্দর ও লাবণ্যময়ী দেখতে চান।তাই মাসে এক থেকে দুবার ফেসিয়াল করা মাস্ট অথচ পার্লার-এ যাবার সময় নেই, তাই তো? কোন চিন্তা নেই। না না, ভাববেন না যে পার্লার যেতে বলবো!  ঘরে বসে ৩০ মিনিটে নিজেই করে নিতে পারেন হারবাল ফেসিয়াল
নিজেকে সুন্দর করে গড়ে তুলতে পার্লার দরকার হয় না। ঘরেই প্রয়োজনীয় যত্ন নিয়ে আপনি হয়ে উঠতে পারেন সবার থেকে আলাদা। সান ট্যান তো থাকবে না, আর পরবে না। তাছাড়া ত্বক হারানো উজ্জ্বলতা ফিরে পাবে।
শুধুমাত্র ১ ঘণ্টা সময় দিন নিজেকে। চলুন তবে দেখে নেই কিভাবে আমরা ঘরে বসে হারবাল ফেসিয়াল করতে পারি।
কীভাবে বাড়িতেই করে নিতে পারবেন হারবাল  ফেসিয়াল:
হারবাল ফেসিয়াল কি?
আমাদের প্রকৃতি রহস্যে পরিপূরণ প্রাচিনকাল থেকেই রূপচর্চায় প্রাকৃতিক অমূল্য উপাদানগুলি ব্যবহার হয়ে এসেছে আর এই প্রাকৃতিকই এক অন্যতম উপাদান হল হারবাল হারবাল ফেসিয়াল হল সেই উপাদান যা আমাদের ত্বককে আসধারন ফল দেয় যা যে কোন নামীদামী ফেসিয়ালের থেকে প্রাপ্ত উজ্জ্বলতাকে ফিকে করে দেয় এবং এতে আপনার ত্বকে কোনরকম ক্ষতি করে না আপনাকে নিজের পছন্দের যে কোন হারবাল ফেসিয়াল এর কোন ফেসিয়াল কিট বেছেনিন নিজেদের স্কিন টাইপ এবং নিজেদের ত্বকের সমস্যা অনুযায়ী অথবা আপনি বাড়িতে বসেই করে নিতে পারেন হারবাল ফেসিয়াল তৈরি হয় বিভিন্ন প্রাকিতিক উপাদান দিয়ে যেমন-পেঁপে, নিম, টোমাটো, এছারাও বিভিন্ন ফল জেমন-আম, তরমুজ ইত্যাদি
হারবাল ফেসিয়ালের উপকারিতা
হারবাল ফেসিয়াল প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি করা হয়, যার কোন সাইড এফেক্ট নেই এটি ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা যেমন- অতিরিক্ত তৈলাক্ত, বিবর্ণ ভাব, ট্যান দূর করে ত্বক নরমাল রাখতে সাহায্য করে এবং আর্দ্রতা বজায় রাখে
যেভাবে ব্যবহার করবেন
প্রস্তুতিপর্ব
সবার আগে ত্বককে হারবাল  ফেসিয়ালের জন্য প্রস্তুত করে নেওয়া দরকার। তার জন্য ত্বকের গভীর থেকে সমস্ত ধুলোময়লা আর দূষিত পদার্থ বের করে দিতে হবে।
প্রথমেই,
চুল একটা হেয়ার ব্যান্ড দিয়ে চুল পেছনের দিকে টেনে বেঁধে নিন। যাতে চুলের কারণে কোন অসুবিধা না হয়। এরপর আস্তে আস্তে প্রতিটি ধাপ শুরু করুন।
ধাপ 1: ক্লেনজ়িং
হারবাল ফেসিয়ালের প্রথম ধাপটা হল ক্লিনজিং। প্রথমে মুখ পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। এরপর মুখ গলায় ক্লিনজিং মিল্ক দিয়ে ভালভাবে ম্যাসেজ করুন। মিনিট ম্যাসেজ করার পর অতিরিক্ত ক্লিনজিং মিল্ক মুছে ফেলুন। বাজারের পণ্য ব্যবহার করতে না চাইলে প্রথমে আপনার মুখ পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিন এখন আলু কুচি দিয়ে মিনিট ধরে আপনার মুখে আলতোভাবে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ঘষতে থাকুন আলু সালফার, পটাশিয়াম ফসফরাস-এর মতো মিনারেল- সমৃদ্ধ, যা ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী এটি আপনার মুখের ময়লা দূর করবে এবং মুখের তামাটে বর্ণ দূর করবে এখন একটি টিস্যু পেপার ঠাণ্ডা পানিতে ভিজিয়ে মুখ মুছে ফেলুন
ধাপ ২: স্ক্রাবিং
এবার, ঘরোয়া স্ক্রাব দিয়ে ত্বক স্ক্রাবিং করতে করতে হবে। ত্বকের মৃত কোষ তুলার জন্য স্ক্রাবিং খুব জরুরী। সার্কুলার মোশনে ত্বক ম্যাসেজ করুন - মিনিট। এরপর পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। এখন চটকানো পেঁপে নিন এবং তার সাথে এক টেবিল চামচ আটা/ময়দা মেশান এবং এই মিশ্রণটি ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে মুখে ঘষুন এবং এভাবে মিনিট ঘষতে থাকুন পেঁপে ভিটামিন , এবং সি-তে সমৃদ্ধ, যা ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখে মিশ্রণটি মিনিট মুখে রাখুন তারপর আবার টিস্যু পেপার ঠাণ্ডা পানিতে ভিজিয়ে মুখ মুছে ফেলুন
ধাপ ৩:ম্যাসেজিং
এবার ত্বক ভালো করে ম্যাসেজ করতে হবে, যা ফেসিয়াল ম্যাসেজ হিসেবে পরিচিত।
প্রথমে দু গাল সার্কুলার মোশনে ম্যাসেজ করুন। হাতের আঙ্গুলের সাহায্যে ত্বকে হালকা করে চাপ দিয়ে থাকুন। মিউজিক স্টাইলে ম্যাসেজ করুন (পদ্ধতি সঠিকভাবে জানা না থাকলে ইউটিউবে সার্চ করে নিতে পারেন)
চোখের চারপাশ ক্লক স্টাইলে ম্যাসেজ করুন। আঙ্গুলের সাহায্যে নিচ থেকে উপরে উপর থেকে নিচে আস্তে আস্তে ম্যাসেজিং করুন।
কপালে সার্কুলার মোশনে দু থেকে তিন মিনিট আস্তে আস্তে ম্যাসেজ করুন।
ধাপ ৪: স্টিম
এবার, আপনার মুখে গরম পানির ভাপ নিতে হবে। হট স্টিম আপনার ত্বকের লোমকূপ গুলো খুলে দিবে। এবং আপনি পাবেন ফ্রেশ অনুভূতি। একটি পাত্রে গরম পানি নিয়ে তার ভাপ মুখে নিন। চাইলে কয়েক ফোঁটা ল্যাভেন্ডার অয়েল বা যেকোন এসেন্সিয়াল অয়েল এতে যোগ করতে পারবেন। এতে আপনি আরো বেশি রিল্যাক্সড অনুভুত করবেন।
ধাপ ৫: ব্ল্যাকহেডস পরিষ্কারকরণ
একটা ব্ল্যাকহেডস পরিষ্কারক যন্ত্রের সাহায্যে ব্ল্যাকহেডসগুলো পরিষ্কার করে নিন। যেহেতু লোমকূপ খোলা আছে তাই যন্ত্রের হালকা চাপেই উঠে আসবে ব্ল্যাকহেডস।
ধাপ 6 : টোনিং
অনেকেই ভেবে থাকে এর হয়ত প্রয়োজন নেই। কিন্তু ধারণা ভুল। যেহেতু স্টিমের মাধ্যমে লোমের গোড়া খোলা হয়েছে টোনিং- তা বন্ধ করা জরুরি, নয়তো খোলা পোর দিয়ে ময়লা ঢুকে ব্রণ সৃষ্টি করতে পারে। বাজারের টোনারে অনীহা থাকলে এবার গ্রিন টি ব্যাগ এক বাটি পানিতে গরম করুন এবং এর ভাপ নিন আপনার মুখে এটি আপনার রন্ধ্র খুলে, যে ময়লা আছে তা বের করে দিতে সাহায্য করবে এবং ব্ল্যাকহেডস দূর করবে এবার একটি বরফ নিয়ে মিনিট ধরে ঘুরিয়ে ঘষুন মুখে বরফ মুখের রন্ধ্র আবার বন্ধ করে দিবে
ধাপ ৭: ফেসপ্যাক
1.   মধু চামচ, চালের গুঁড়ো টেবিল চামচ, ৩ চামচ চালের গুঁড়ো, ২ কাপ কমলালেবুর রস,  / কাপ পেঁপে, ৩ টে স্ট্রবেরি, গ্রিন টি পরিমাণমতো, কলা কাপ, বাদাম তেল চামচ, বরফের টুকরো
স্ট্রবেরি, চালের গুঁড়ো এবং মধু মিশিয়ে ফেস প্যাক তৈরি করে নিন এবার প্যাকটি মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট বাদে পরিষ্কার জলে ধুয়ে ফেলুন এতে ত্বকের অতিরিক্ত ময়লা এবং তৈলাক্ত ভাব দূর হবে এবং ত্বক হয়ে উঠবে উজ্জ্বল প্যাক উঠিয়ে ঠাণ্ডা জলে পরিষ্কার করার পর ময়শ্চারাইজার ক্রিম লাগিয়ে নিন তফাৎটা নিজেই বুঝতে পারবেন
2. এবার মাস্ক লাগানোর পালা। চটকানো স্ট্রবেরি নিন এবং তার সাথে আটা/ময়দা এবং মধু মিশিয়ে নিন এবং এই মিশ্রণটি আপনার মুখে লাগান এবং ১৫ মিনিট রাখুন। শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সর্বশেষে আপনি চাইলে ময়েশ্চারাইজার লাগাতে পারেন। তবে এটা লাগাবেন যদি আপনার ত্বকে শুষ্কতা অনুভূত হয়। অন্যথায় লাগানোর প্রয়োজন নেই।
জেনে নিলেন কিভাবে হারবাল ফেসিয়াল করতে হয় বাসায় বসেই। প্রতি মাসে একবার করে নিতে পারেন এই ফেসিয়াল আর আনতে পারেন ত্বকের উজ্জ্বল্য


ধাপ ৮ : ময়েশ্চারাইজিং
সব শেষে ভালো একটি ময়েশ্চারাইজার দিয়ে ত্বকের আর্দ্রতায় তালা লাগিয়ে দিন ময়শ্চারাইজিং করার জন্য আপনাকে প্রথমে মধু এবং দুধ, কমলালেবুর রস এবং কলা ভালোভাবে পেস্ট করে মুখে লাগিয়ে মাসাজ করুন আপনি চাইলে বাদামের তেল যোগ করতে পারেন- মিনিট রেখে ঠাণ্ডা জলে পরিষ্কার করে নিন
সবাই ভালো থাকুন , নিত্য নতুন টিপস পেতে আমাদের সাথেই থাকুন

0 Comments