ত্বকের যত্নে অ্যালোভেরা ফেসিয়াল এর নিয়ম ও কয়েকটি ফেইস প্যাক

 সহজে ব্রণ দূর করবে অ্যালোভেরা ফেসপ্যাক
ব্রণ যে কোনো ধরণের ত্বকেই হতে পারে। তবে সবচাইতে বেশি যন্ত্রণা করে তৈলাক্ত ত্বকে। এই ব্রণের সমস্যা দূর করার জন্য কত কিছুই না করেছেন আপনি। কত ক্রিম মেখেছেন, পার্লারে গিয়েছন। কিন্তু তাতেও কি ব্রণ দূর হয়েছে? হয়নি। বরং এত গুলো টাকা বেরিয়ে গেছে পকেট থেকে। আজ তাই আমরা নিয়ে এলাম ব্রণ দূর করার দারুণ এক পদ্ধতি। এতে টাকা আপনার মোটেও খরচ হবে না। কিন্তু খুব সহজেই দূর হবে ব্রণের উপদ্রব,ত্বক হবে উজ্জ্বল সুন্দর

কীভাবে বাড়িতেই করে নিতে পারবেন অ্যালোভেরা ফেসিয়াল:
ত্বকের সুরক্ষা ত্বকের নানান ধরণের সমস্যা সমাধানের অন্যতম কার্যকরী একটি উপাদান হচ্ছে অ্যালোভেরা। অনেক প্রাচীনকাল থেকেই রূপচর্চায় পাকাপোক্তভাবে স্থান করে নিয়েছে অ্যালোভেরা। অ্যালোভেরা পাতার জেল রুক্ষ, শুষ্ক, তৈলাক্ত সকল ধরনের ত্বকের সুরক্ষায় কাজ করে। তাই আজকে আপনাদের ত্বকে ব্রণের সমস্যা সমাধানে রইলো অ্যালোভেরা জেলের তৈরি কিছু ফেসপ্যাক। ব্রণের চিকিৎসায় অ্যালোভেরা অন্যতম সেরা উপাদান। যে কোনো পার্লারেও ব্রণের সমস্যায় অ্যালোভেরা ফেসিয়াল করতেই বলা হয়। এখন আর কষ্ট করে পার্লার যেতে হবে না, অ্যালোভেরা ফেসপ্যাক দিয়ে নিজেই করে নিন পার্লারের ফেসিয়াল। ব্রণ যে কোনো ধরণের ত্বকেই হতে পারে। তবে সবচাইতে বেশি যন্ত্রণা করে তৈলাক্ত ত্বকে। এই ব্রণের সমস্যা দূর করার জন্য কত কিছুই না করেছেন আপনি। কত ক্রিম মেখেছেন, পার্লারে গিয়েছন। কিন্তু তাতেও কি ব্রণ দূর হয়েছে? হয়নি। বরং এত গুলো টাকা বেরিয়ে গেছে পকেট থেকে। আজ তাই আমরা নিয়ে এলাম ব্রণ দূর করার দারুণ এক পদ্ধতি। এতে টাকা আপনার মোটেও খরচ হবে না। কিন্তু খুব সহজেই দূর হবে ব্রণের উপদ্রব,ত্বক হবে উজ্জ্বল সুন্দর
অ্যালোভেরা পাতা থেকে জেল বের করার নিয়মঃ


বাসায় অ্যালোভেরা পাতা থেকে খুব সহজেই জেল বের করে নিতে পারেন। প্রতিবার তাজা পাতা ব্যবহার করলে ফলাফল বেশি পাওয়া যাবে কিন্তু প্রয়োজনে এটা সংরক্ষণ করে রাখতে পারেন পরবর্তীতে ব্যবহারের জন্য

একটি অ্যালোভেরা পাতা নিয়ে এর গোড়ার দিকের অংশ কেটে নিন। এরপর কাটা অংশটি নিচের দিকে ধরে রাখুন
এতে করে পাতা থেকে হলদেটে একটি রস বের হবে। এই রসটি পুরোপুরি বের না হওয়া পর্যন্ত এভাবেই রাখুন পাতাটি। এই হলদেটে রসটি ফেলে দিন
হলদেটে রস পড়া বন্ধ হলে পাতাটি ভালো করে ধুয়ে নিন। এরপর পাতার দুইদিকের কাঁটা ভরা অংশ কেটে ফেলে দিন
কাঁটা ফেলে দেবার পর পাতার সবুজ অংশ চেঁছে ফেলে দিন ভেতরের স্বচ্ছ জেলের মত অংশ সংরক্ষণ করুন। এটাই অ্যালোভেরা জেল, যা আপনি ফেসপ্যাকে ব্যবহার করতে পারবেন

যেভাবে ব্যবহার করবেন
প্রস্তুতিপর্ব


সবার আগে ত্বককে অ্যালোভেরা  ফেসিয়ালের জন্য প্রস্তুত করে নেওয়া দরকার। তার জন্য ত্বকের গভীর থেকে সমস্ত ধুলোময়লা আর দূষিত পদার্থ বের করে দিতে হবে।
প্রথমেই,
চুল একটা হেয়ার ব্যান্ড দিয়ে চুল পেছনের দিকে টেনে বেঁধে নিন। যাতে চুলের কারণে কোন অসুবিধা না হয়। এরপর আস্তে আস্তে প্রতিটি ধাপ শুরু করুন।
ধাপ 1: ক্লেনজ়িং
অ্যালোভেরা ফেসিয়ালের প্রথম ধাপটা হল ক্লিনজিং। প্রথমে মুখ পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। এরপর মুখ গলায় ক্লিনজিং মিল্ক দিয়ে ভালভাবে ম্যাসেজ করুন। মিনিট ম্যাসেজ করার পর অতিরিক্ত ক্লিনজিং মিল্ক মুছে ফেলুন। বাজারের পণ্য ব্যবহার করতে না চাইলে তৈলাক্ত ত্বকের অধিকারীরা শসা শুষ্ক ত্বক হলে কাঁচা দুধ দিয়ে কাজটি সেরে নিতে পারেন।
ধাপ ২: স্ক্রাবিং
এবার, ঘরোয়া স্ক্রাব দিয়ে ত্বক স্ক্রাবিং করতে করতে হবে। ত্বকের মৃত কোষ তুলার জন্য স্ক্রাবিং খুব জরুরী। সার্কুলার মোশনে ত্বক ম্যাসেজ করুন - মিনিট। এরপর পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। আপনি নিজেই ঘরোয়া কিছু উপাদান দিয়ে ফেসিয়াল স্ক্রাব তৈরী করতে পারবেন।
ধাপ ৩:ম্যাসেজিং
এবার ত্বক ভালো করে ম্যাসেজ করতে হবে, যা ফেসিয়াল ম্যাসেজ হিসেবে পরিচিত।
প্রথমে দু গাল সার্কুলার মোশনে ম্যাসেজ করুন। হাতের আঙ্গুলের সাহায্যে ত্বকে হালকা করে চাপ দিয়ে থাকুন। মিউজিক স্টাইলে ম্যাসেজ করুন (পদ্ধতি সঠিকভাবে জানা না থাকলে ইউটিউবে সার্চ করে নিতে পারেন)
চোখের চারপাশ ক্লক স্টাইলে ম্যাসেজ করুন। আঙ্গুলের সাহায্যে নিচ থেকে উপরে উপর থেকে নিচে আস্তে আস্তে ম্যাসেজিং করুন।
কপালে সার্কুলার মোশনে দু থেকে তিন মিনিট আস্তে আস্তে ম্যাসেজ করুন।
ধাপ ৪: স্টিম
এবার, আপনার মুখে গরম পানির ভাপ নিতে হবে। হট স্টিম আপনার ত্বকের লোমকূপ গুলো খুলে দিবে। এবং আপনি পাবেন ফ্রেশ অনুভূতি। একটি পাত্রে গরম পানি নিয়ে তার ভাপ মুখে নিন। চাইলে কয়েক ফোঁটা ল্যাভেন্ডার অয়েল বা যেকোন এসেন্সিয়াল অয়েল এতে যোগ করতে পারবেন। এতে আপনি আরো বেশি রিল্যাক্সড অনুভুত করবেন।
ধাপ ৫: ব্ল্যাকহেডস পরিষ্কারকরণ
একটা ব্ল্যাকহেডস পরিষ্কারক যন্ত্রের সাহায্যে ব্ল্যাকহেডসগুলো পরিষ্কার করে নিন। যেহেতু লোমকূপ খোলা আছে তাই যন্ত্রের হালকা চাপেই উঠে আসবে ব্ল্যাকহেডস।
ধাপ 6 : টোনিং
অনেকেই ভেবে থাকে এর হয়ত প্রয়োজন নেই। কিন্তু ধারণা ভুল। যেহেতু স্টিমের মাধ্যমে লোমের গোড়া খোলা হয়েছে টোনিং- তা বন্ধ করা জরুরি, নয়তো খোলা পোর দিয়ে ময়লা ঢুকে ব্রণ সৃষ্টি করতে পারে। বাজারের টোনারে অনীহা থাকলে গোলাপ জল লাগিয়ে নিন
ধাপ ৭: ফেসপ্যাক
ব্রণ দূর করার জন্য আপনার নিত্যদিনের সাধারণ ফেসপ্যাকেই অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে নিতে পারেন। যদি ব্রণের পরিমাণ খুব বেশি না হয় তাহলে মুলতানি মাটি, চন্দন, গোলাপ জল অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে ফেস প্যাক তৈরি করুন মুখে মাখুন। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন। ব্রনে খুব জ্বালাপোড়া ব্যথা থাকলে অ্যালোভেরা জেল ফ্রিজে জমিয়ে বরফ তৈরি করে নিন সেই বরফ আক্রান্ত জায়গায় ঘষুন। আরাম মিলবে। ব্রণও সারবে
১) অ্যালোভেরা ও নিমপাতা
ত্বকের প্রদাহ কমানোর পাশাপাশি স্কিনের শুষ্কতা দূর করতে এবং ত্বককে প্রাণোচ্ছল বানাতে অ্যালোভেরার উপকারিতা অসীম। অ্যালোভেরা নিম পাতাএই ২টি উপাদান মিলিয়ে বানিয়ে ফেলুন একটি পেস্ট। তরপর সেটি মুখে লাগিয়ে নিন। প্রসঙ্গত, ভালো করে মুখটা ধুয়ে নিয়ে ফেইস মাস্কটি লাগাবেন। নচেৎ ভাল ফল পাবেন না
২) অ্যালোভেরা ও হলুদ
দুধ, হলুদ এবং অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে বানানো এই ফেইস মাস্কটি উজ্জ্বল এবং নরম ত্বক পেতে আপনাকে সাহায্য করবে। প্রসঙ্গত, হলুদে এমন কিছু উপাদান থাকে, যা ব্রণের প্রকোপ কমায়। অপরদিকে, অ্যালোভেরা ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়। আর দুধ কী কাজে লাগে? কাঁচা দুধ ত্বকের পিএইচ লেভেল ঠিক রাখে। ফলে ত্বক নরম হয়
৩) গোলাপজল ও অ্যালোভেরার উপকারিতা
শুষ্ক ত্বককে স্বাভাবিক করতে এই ফেইস মাস্কটি দারুণ কাজে আসে। সেই সঙ্গে বলি রেখাব্রণ এবং কালো ছোপ আটকাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। প্রসঙ্গত, অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে কয়েক ড্রপ গোলাপ জল মিশিয়ে একটা পেস্ট বানিয়ে ফেলুন। তারপর সেটি মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিন। তারপর ঠান্ডা জল দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন মুখটা
৪) শসা ও অ্যালোভেরার উপকারিতা
যাদের ত্বক খুব স্পর্শকাতর, তারা এই ফেইস মাস্কটি ব্যবহার করতে পারেন। এটি বানাতে একটা অ্যালোভেরা পাতা থেকে সংগ্রহীত জেলের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা শসার রস মেশাতে হবে। যখন দেখবেন দুটি উপাদান ভালো মতন মিশে গেছে, তখন সেটি মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। প্রসঙ্গত, তৈলাক্ত ত্বক, ময়লা এবং ত্বকে জমতে থাকা নানা ক্ষতিকর উপাদানকে পরিষ্কার করে ফেলতে এই ফেইস মাস্কটি দারুণ কাজে দেয়
৫) লেবু ও অ্যালোভেরার উপকারিতা
আপনার কি ড্রাই স্কিন? তাহেল এই ফেইস মাস্কটি আপনার জন্য একেবারে পারফেক্ট! কারণ অ্যালোভেরা অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে পরিপূর্ণ, যা ব্রণ এবং চুলকানি কমায়। এখানেই শেষ নয় এই প্রাকৃতিক উপাদানটি লাগালে স্কিন আর্দ্র হয়। ফলে ত্বকের শুষ্কতা দূর হয়। কিভাবে বানাতে হবে এই ফেইস মাস্কটি? এটি বানানো খুব সহজ! পরিমাণমতো অ্যালোভেরা জেল নিয়ে তাতে এক ড্রপ লেবুর রস দিয়ে ভালো করে দুটি উপাদান মেশান। তারপর তা মুখে লাগিয়ে কম করে হলেও ২০ মিনিট রেখে দিন। সময় হয়ে গেলে ঠান্ডা জল দিয়ে মুখটা ধুয়ে ফেলুন
৬) অ্যালোভেরা ও মুলতানি মাটি
চামচ মুলতানি মাটির সঙ্গে চামচ অ্যালোভেরা জেল এবং পরিমাণমতো গোলাপজল মিশিয়ে বানানো পেস্ট মুখে লাগাতে শুরু করলে উজ্জ্বল ত্বক পাওয়ার স্বপ্ন পূরণ হতে সময় লাগে না। কারণ মুলতানি মাটি এবং অ্যালোভেরা জেল, এই দুটিতেই এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা ত্বকে প্রবেশ করে বিষাক্ত উপাদানদের বার করে দেয় ফলে ফর্সা এবং উজ্জ্বল ত্বকের অধিকারী হয়ে ওঠার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হতে সময় লাগে না
৭)  মধু ও অ্যালোভেরার উপকারিতা
যাদের তৈলাক্ত ত্বক তাদের জন্য এই ফেইস মাস্কটি দারুণ কার্যকরী। কারণ মধু এবং অ্যালোভেরা, উভয়ই ত্বকের অতিরিক্ত তেলাভাব কমায়, শুধু তাই নয় স্কিনের বন্ধ হয়ে যাওয়া ছিদ্রগুলোকেও খুলে দেয়। ফলে ময়লা ধুয়ে গিয়ে ত্বক সুন্দর হতে শুরু করে
এক্ষেত্রে এক চামচ মধুর সঙ্গে পরিমাণমতো অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে ফেলুন। তারপর সেই ফেইস মাস্কটি ধীরে ধীরে ম্যাসাজ করুন ত্বকে। প্রসঙ্গত, প্রতিদিন যদি এই ফেইস মাস্কটি মুখে লাগাতে পারেন তাহলে অল্পদিনেই দেখবেন ত্বক উজ্জ্বল হতে শুরু করেছে
) ওটমিল অ্যালোভেরার উপকারিতা
ত্বকের উপরি অংশে জমতে থাকা মৃত কোষদের পরিষ্কার করে ফেলতে এই ফেইস মাস্কটি কাজে লাগে। অ্যালোভেরা জেল, লেবুর রস এবং ওটমিল মিশিয়ে এই ফেইস মাস্কটি বানিয়ে ফেলুন। তরপর সেটি ধীরে ধীরে মুখে লাগান। কিছুক্ষণ রেখে ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন

ধাপ ৮ : ময়েশ্চারাইজিং
সব শেষে ভালো একটি ময়েশ্চারাইজার দিয়ে ত্বকের আর্দ্রতায় তালা লাগিয়ে দিন
সবাই ভালো থাকুন , নিত্য নতুন টিপস পেতে আমাদের সাথেই থাকুন

0 Comments