এ সময় অনেকের গলা ও ঘাড় কালো হয়ে যায়। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় রয়েছে আপনারই হাতে। সেজন্য ব্যবহার করতে পারেন অ্যালোভেরা জেল। সপ্তাহে অন্তত চার থেকে পাঁচ দিন অ্যালোভেরা গলা আর ঘাড়ের উন্মুক্ত স্থানে ঘষে লাগালে ত্বক উজ্জ্বল হবে। অ্যালোভেরা লাগিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে হবে। এরপর ত্বকে ময়েশ্চারাইজার লাগাতে হবে। এবার আসা যাক, ত্বকচর্চার বিষয়ে। ত্বকে ফুসকুড়ি, ব্রণ, র্যাশের ঝামেলা বেড়ে যায় শীত আসার এই সময়টাতে। এই সমস্যা সমাধানে কমলা, টমেটোর রস খুব উপকারী। প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর সময় মুখ, হাত ও পায়ে ময়েশ্চারাইজারযুক্ত ক্রিম লাগাতে হবে। এতে করে নখের ভঙ্গুরতা, ত্বকের শুষ্কতা দূর হবে।
এই সময়টাতে ত্বকের যতেœ যদি
বাড়তি কিছু করতে চান
তাহলে অবশ্যই আপনাকে ভিন্ন
চিন্তা করতে হবে।
আধা চামচ শসার রসের
সঙ্গে আধা চামচ দুধ
ও আধা চামচ মধু
মিশিয়ে ফ্রিজে রাখুন।
ঠা-া হলে ত্বকে
লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর
ধুয়ে ফেলুন। এই
প্যাকটি শুষ্ক ত্বকের জন্য
খুবই উপকারী। তবে
তৈলাক্ত ত্বকের জন্য শুধু
শসার রস বা শসা
কুচি ব্যবহার করুন। যাদের
ত্বক খুব তৈলাক্ত বা
ব্রণের সমস্যা আছে, তারা
আনারসের সঙ্গে সমপরিমাণ গোলাপজল
মিলিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।
চাইলে এর সঙ্গে বেসন
দিতে পারেন, তবে এটি
২০ মিনিটের বেশি রাখা ঠিক
হবে না। মুখ
পরিষ্কার করার জন্য কুসুম
গরম পানি ব্যবহার করতে
হবে। সপ্তাহে
তিন থেকে চার দিন
ব্যবহারে ত্বকে রোদের পোড়াভাব
চলে যাবে।
এ সময় বাতাসে অধিক
পরিমাণ ধুলোবালি উড়তে থাকে।
তাই ত্বকে ময়লা জমে
বেশি। ত্বকের
পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে সপ্তাহে
একদিন অন্তত স্ক্রাবিং করতে
হবে। এক্ষেত্রে
প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি স্ক্রাবই
বেশি ভালো। শসা
বা মাল্টার রসের সঙ্গে চালের
গুঁড়া মিশিয়ে স্ক্রাব তৈরি
করে নিন। ত্বক
স্বাভাবিক বা শুষ্ক হলে
দুধ আর মধু মেশাতে
পারেন। বেশি
শুষ্ক ত্বক হলে কয়েক
ফোঁটা লেবুর রস দিতে
হবে। স্বাভাবিক
ত্বকের জন্য কয়েক ফোঁটা
অলিভ অয়েল দিলে ভালো। এবার
নিজের হাতে তৈরি করা
স্ক্রাবটি শুধু মুখে নয়,
আপনার হাত, গলা ও
ঘাড়ে লাগিয়ে ২০ মিনিট
পর ধুয়ে ফেলতে হবে। যাদের
ত্বক সেনসেটিভ, তারা টক দই
দিয়ে স্ক্রাবিংয়ের কাজটা সেরে নিতে
পারেন। ত্বকের
উজ্জ্বলতা বাড়াতে দুধের সরও
খুব উপকারী। প্রতিদিন
কাজের ফাঁকে ১০ মিনিট
সময় নিয়ে ১ চামচ
দুধের সঙ্গে ময়দা বা
বেসন মিশিয়ে মুখ, গলা
আর হাতে লাগাতে পারেন। ১০
মিনিট পর উষ্ণ পানি
দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।যাদের বেশিরভাগ সময়
বাড়িতে থাকতে হয়, তারা
প্রতিদিনের কাজ শেষে এক
টুকরো লেবু ঘষে হাত
পরিষ্কার করে নেবেন।
দিনের কোনো এক সময়ে
হাত দুটো লেবু লাগিয়ে
কুসুম গরম পানিতে ১০
মিনিট ডুবিয়ে রেখে ব্রাশ
দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এর
পর পুরো হাতে লোশন
লাগাতে হবে। এতে
আপনার হাত পায়ের ত্বক
সুন্দর ও মসৃণ থাকবে।
ত্বকের
সঙ্গে এ সময় চুলের
যত্ন করাটাও জরুরি।
হাওয়া বদলের এই সময়
চুল রুক্ষ হয়ে যায়। প্রতিদিন
ডিমের সাদা অংশ মাথার
ত্বক ও চুলে ম্যাসাজ
করে ২০ মিনিট পর
ধুয়ে নিতে পারেন।
অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে মধু
মিশিয়ে ব্যবহার করলেও উপকার পাবেন। মিশ্রণটি
মাথার ত্বকে লাগিয়ে ২০
মিনিট রেখে ধুয়ে নিন। সপ্তাহে
দুই থেকে তিন দিন
নারকেলের দুধ, পাতি লেবুর
রস ও নিমপাতা বাটা
মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে চুলে
লাগিয়ে রাখুন। ১
ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করে
ফেলুন। শেষে
দুধ ও মধুর মিশ্রণ
দিয়ে চুল ধুয়ে নিন। চুলের
রুক্ষতা দূর করতে সপ্তাহে
তিন দিন চুলে তেল
লাগিয়ে এ প্যাকটি ব্যবহার
করুন। এক
চামচ নারকেল তেল, এক
চামচ ক্যাস্টর অয়েল, এক চামচ
ভিনেগার, এক চামচ শ্যাম্পু,
একটা পাকা কলা ও
এক চামচ মধু মিশিয়ে
প্যাক বানিয়ে চুলে লাগিয়ে
রাখুন ৪০ মিনিট।
এরপর পানি দিয়ে চুল
ধুয়ে ফেলুন।
হালকা
শীতে ত্বক সজীব রাখতে
খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনা জরুরি।
তেলে ভাজা খাবার পরিহার
করে মৌসুমি ফল, সবজি,
সালাদ ও স্যুপ রাখতে
হবে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায়।
এ ছাড়া পর্যাপ্ত ঘুম
আর বিশ্রামের ফলে ত্বক সজীব
থাকবে। নিয়মিত
যত্নে শীতের আগের এই
সময় আপনার ত্বক থাকবে
প্রাণবন্ত।
0 Comments