চোখের তলায় কৃষ্ণ
গহ্বর, ঘরোয়া উপায়ে সমাধান
চান?
তবে চোখ বেশি
কচলালে বা রোদে পুড়েও
হতে পারে এমন অবস্থা। এ
অস্বস্তি এড়াতে এমন ক্রিম
ব্যবহার করুন যাতে সয়া
বা সাইট্রাস আছে। এগুলো
ত্বক উজ্জ্বল হতে সাহায্য করে।
বেশিরভাগ সময়ই আমরা আমাদের
চোখের নিচের কালি ঢাকার
জন্য ফাউণ্ডেশন কিনে নিয়ে কাঁড়ি
কাঁড়ি টাকা খরচ করে
থাকি , কিন্তু কখনোও কি
আমরা আমাদের চোখের নিচের
কালি কেন জমে তার
কারণ খুঁজে বের করার
চেষ্টা করে থাকি ? আমাদের
চোখ এর নিচে যে
ত্বক অনেক বেশি স্পর্শকাতর
এবং এর নিচে অনেক
ছোট ছোট রক্তনালী বয়ে
গেছে যারা আস্তে আস্তে
বড় হতে থাকে এবং
চোখের নিচের ত্বক কালো
হতে থাকে। চোখের
নিচের অংশে ফ্লুইড জমা
হতে থাকার কারণে চোখের
নিচটা ফুলে যেতে থাকে
এবং চোখের নিচে কালি
পড়ে। এর
পিছনে অনেকগুলো কারণ আছে।
মানসিক চাপ বা দুশ্চিন্তা
চোখ এর নিচে
কালি পড়ার জন্য খুব
প্রচলিত একটি কারণ সেটি
হলো কোন কারণে খুব
বেশি চাপে থাকা বা
কোন ব্যাপার নিয়ে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা।
পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া
কেউ যদি দিনে
কমপক্ষে আট ঘণ্টা না
ঘুমাতে পারে , তবে তার
চোখ এর নিচে কালি
পড়ার সম্ভাবনা থাকে।৮
ঘন্টা সম্ভব না হলে
অন্ত ছয় ঘন্টা ঘুমানো
উচিত।
চোখ শুকিয়ে যাওয়া
শরীর থেকে অনেক
বেশি মাত্রায় জল বেরিয়ে গেলে
ত্বক শুষ্ক এবং শরীর
দূর্বল হয়ে যায়।
এর ফলে চোখের নিচে
কালি পড়ে। শরীর
থেকে তাই ঘামের মাধ্যমেও
অনেকটা জল বেরিয়ে জায়। তাই
পর্যাপ্ত পরিমাণ জল পান
করতে হবে।
আসুন দেখে কিভাবে
আমরা ঘরে বসেই প্রাকৃতিক
উপায়ে চোখের নিচের কালি
দূর করতে পারি ।
শসা
সতেজ শসা স্লাইস
করে কেটে আধ ঘণ্টা
ফ্রিজে রেখে ঠাণ্ডা করুন। দশ
মিনিট চোখের উপর রেখে
জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। দিনে
অন্তত দুবার, একটানা সাত
দিন। আবার
শসা আর লেবুর রস
সমান পরিমাণ মিশিয়ে মাখতে
পারেন ত্বকে। দিনে
একবার করে সাত দিন
মাখুন। স্বাভাবিক
রং ফিরে আসবে।
কাঁচা আলু
কাঁচা আলু ঠাণ্ডা
করে ব্লেন্ডারে পিষে পেস্ট তৈরি
করুন। পেস্ট
দাগের উপর মেখে ১০-১৫ মিনিট পর
ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে
ফেলুন। আলু
পেস্ট করতে ঝামেলা মনে
হলে শসার মত স্লাইস
করেও ব্যবহার করতে পারেন।
সপ্তাহ জুড়ে দিনে ১-২ বার ব্যবহার
করলেই চলবে।
গোলাপ জল
প্রাকৃতিক ভাবেই গোলাপ জল
স্কিন টোনার হিসেবে কাজ
করে। ছোট্ট
পরিস্কার কাপড়ের টুকরা বা
আই প্যাড গোলাপ জলে
ভিজিয়ে রাখুন কয়েক মিনিট। পুরো
ভিজলে চোখ বন্ধ করে
চোখের পাতার উপর রেখে
দিন ১০-১৫ মিনিট। দিনে
একবার করে ৭-১০
দিন ব্যবহার করলে চোখের স্বাভাবিক
রং ফেরত আসবে।
টমেটো
টমেটো চোখের নীচের
কালো দাগ দূর করতে
অনেক কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এর
সাথে সাথে আপনার ত্বককে
করবে কোমল লাবন্যময়।
১ চা চামচ টমেটোর
রস, ১ চাচামচ লেবুর
রস মিশিয়ে নিন।
এটি চোখের নিচে লাগান। ১০
মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এটি
দিনে ২ বার করা
চেষ্টা করুন। টমেটোর
রস , লেবুর রস আর
সাথে পুদিনা পাতা যোগ
করে তৈরি করে নিতে
পারেন দারুন একটি হেলথ
ড্রিংক। এটি
আপনার চোখের নীচের কালি
ভিতর থেকে দূর করতে
সাহায্য করবে।
ঠাণ্ডা চায়ের ব্যাগ
চায়ের ব্যাগ দিয়ে
ও চোখের নিচে কালি
দূর করা সম্ভব।
সবুজ বা কালো চায়ের
ব্যাগ ঠান্ডা করে নিন। আপনার
চোখের ওপর ঠান্ডা চায়ের
ব্যাগটি রাখুন। ১০/
১৫ মিনিট পর চায়ের
ব্যাগ সরিয়ে ফেলুন।
দিনে ২/৩ বার
করার চেষ্টা করুন।
ঠান্ডা দুধ
প্রতিদিন ঠাণ্ডা দুধ ব্যবহারে
আপানার চোখের নীচের কালো
দাগ দূর করে থাকে। তুলার
বল ঠাণ্ডা দুধে ভিজিয়ে
নিন। ভেজা
তুলার বল আপানার চোখে
ওপর রাখুন। ১০/১৫ মিনিট পর
তুলা সরিয়ে নিন।
এরপর পানি দিয়ে ধুয়ে
ফেলুন। এটি
প্রতিদিন করাতে আপানার চোখের
নীচের কালির দাগ করবে।
চামচ থেরাপি
বাসার রেফ্রিজারেটরে ২টি
চা চামচ রেখে ঠান্ডা
করুন । চামচ
যখন ঠাণ্ডা হয়ে যাবে
,তখন বিছানায় শুয়ে চোখের উপর
চামচ দুইটি রাখুন যতক্ষণ
না এটি সাধারন তাপমাত্রায়
আসে ।এটি
একই সাথে চোখের ক্লান্তি
ও চোখের নিচের কালি
দূর করে থাকে।
গরমে কিভাবে ত্বকের
যত্ন নেয়ার কয়েকটি
গুরুত্বপূর্ণ টিপস:
ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখার সহজ কয়েকটি টিপস
টিপস ১
ত্বকের তৈলাক্ত ভাব
দূর করতে সমপরিমাণ শশার
রস ও লেবুর রস
এক সাথে ভালো ভাবে
মিসিয়ে নিন। তুলার
সাহায্যে পুরো মুখে আলতো
ভাবে লাগিয়ে নিন।
মিশ্রণটি মুখে লাগানোর সাথে
সাথে যদি জ্বালা করে,
তবে দ্রুত ধুয়ে ফেলুন। লেবু
ত্বককে অতিরিক্ত শুষ্ক করে ফেলতে
পারে, সেক্ষেত্রে ত্বকের উপযোগী একটি
ময়েশ্চারাইজার মুখে লাগিয়ে নিন। লেবুর
রসে থাকে সাইট্রিক এসিড,
যা ত্বকের তেল সম্পূর্ণ
রূপে দূর করে এবং
ত্বককে শুষ্ক ও উজ্জ্বল
করে।তবে
বেশিক্ষণ লাগিয়ে রাখবেন না। এতে
ত্বক পুড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা
থেকে যায়।
টিপস ২
ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করার
জন্যে খুবই উপকারী একটি
উপাদান হল ডিম।এটি একই সঙ্গে
স্কিন ফার্মিং করতেও সাহায্য করে। একটা
ডিমের সাদা অংশ ভালোভাবে
ফেটিয়ে নিয়ে মুখে ও
গলায় লাগিয়ে রাখুন।
১৫ মিনিট মতো রেখে
ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে
ফেলুন।
টিপস ৩
মধু ত্বককে ময়েশ্চারাইজ
করার পাশাপাশি নানা রকম স্কিন
ইনফেকশন এবং ব্রণ কমাতে
সাহায্য করে । সারা
মুখে ও গলায় পাঁচ
থেকে দশ মিনিটের মতো
লাগিয়ে রেখে ঠান্ডা পানি
দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
ফেস প্যাকেও মধু ব্যবহার করতে
পারেন। চন্দনের
গুঁড়োর সঙ্গে লেবুররস ও
মধু মিশিয়ে সারা মুখে
ও গলায় লাগিয়ে রাখুন। শুকিয়ে
গেলে ঠান্ডা জল দিয়ে
ধুয়ে ফেলুন।
টিপস ৪
স্ট্রবেরিতে রযেছে ভিটামিন সি,
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং এক্সফোলিয়েন্টস্ ।যা আপনার ত্বকের
উজ্বলতা ধরে রাকতে সাহায্য
করে। শুধু
স্ট্রবেরি পেস্ট করেও মুখে
লাগাতে পারেন, আবার টক
দই ও মধুর সঙ্গে
মিশিয়েও লাগাতে পারেন।
নিমেষেই ফিরে পাবেন ত্বকের
উজ্জ্বলতা।
টিপস ৫
ক্লান্তিহীন ও উজ্জ্বল ত্বক
পাওয়ার জন্যে কলা খুবই
উপকারী একটি ফল।
কলার সঙ্গে মধু মিশিয়ে
সারা মুখে ও গলায়
১০ মিনিট লাগি রাখুন। এর
পর ঠান্ডা জল
দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
টিপস ৬
ত্বক উজ্জ্বল এবং
ফর্সা করার জন্য লেবুর
রস ও জৈব ঘাস
এক সাথে মিশ্রণ করে
নিয়ে এটা আপনার মুখে
এবং ঘাড়ে ১০ মিনিট
লাগিয়ে রাখুন এবং ধুয়ে
ফেলুন। এটা
প্রয়োগে আপনার মুখের ব্রণ
এবং কালো দাগ দূর
হবে এবং ত্বক পরিষ্কার
হবে।
টিপস ৭
প্রতিদিন কমপক্ষে ২ লিটার বিশুদ্ধ
জল পান করার অভ্যস
করুন। পর্যাপ্ত
পরিমাণে জল পানে ত্বকের
শুষ্ক ভাব দূর হয়
এবং ত্বক হয়ে উঠে
কোমল।
টিপস ৮
মুখে ব্রণ সমস্যা
থাকলে চা গাছের তেল
তুলার সাহায্যে ব্রণের উপরে কয়েক
ঘণ্টা পরপর প্রয়োগ করতে
থাকুন। প্রতি
রাতে ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে
ভিটামিন ই তেল আক্রান্ত
স্থানে ১ ঘণ্টার জন্য
প্রয়োগ করুন।তার
পর ঠান্ডা জল দিয়ে
ধুয়ে নিন।
টিপস ৯
অতি দ্রুত ত্বকের
গোলাপি আভা ফিরিয়ে আনতে
অলিভ, কোকোনাট এবং জুজুবা তেল
কয়েক ফোঁটা আপনার গালে
এবং ভ্রু এর হাড়ে
ধীরে ধীরে প্রয়োগ করুন।
টিপস ১০
ভাল ঘুম ত্বকের
জন্য উপকারী। তাই
ত্বকের যত্নে অবশ্যই সিল্ক
এর বালিশ ব্যবহার করুন। এতে
আপনার ঘুম পরিষ্কার হবে
এবং আপনার ত্বক প্রাণবন্ত
হয়ে উঠবে।
টিপস ১১
ত্বককে মসৃণ ও
কোমল রাখতে সামুদ্রিক কড
মাছের যকৃত দ্বারা তৈরি
তেল খুবি কার্যকরি একটি
উপাদান । এক্ষেত্রে
লেবুর রস এবং কড
লিভার তেল এর মিশ্রণ
তৈরি করে নিয়ে শরীরে
প্রয়োগ করতে পারেন।
টিপস ১২
সবুজ শাকসবজি ত্বকের
জন্য একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ
প্রাকৃতিক উপাদান। এটা
আপনি রান্না করে অথবা
রস বানিয়ে খেতে পারেন। যদি
রস বানিয়ে খেতে চান
তাহলে প্রতিদিন এক কাপ করে
নিয়মিত খাবেন।
গরমে
তৈলাক্ত ত্বকের যত্ন
যাদের ত্বক তৈলাক্ত,
তাদের ভোগান্তি যেন আরও বেশি। ঘামের
কারণে কমবেশি সবারই হয়
অস্বস্তি, আবার গরমে তৈলাক্ত
ত্বকে বাইরের ধুলা-ময়লা
আটকে গিয়েও সমস্যা হতে
পারে। ব্রণের
সমস্যায় ভোগেন অনেকেই।
আর মেক–আপের ব্যাপারেও
থাকতে হয় সতর্ক।
তৈলাক্ত ত্বকে প্রসাধনী ব্যবহার
এবং এ ধরনের ত্বকের
যত্ন প্রসঙ্গে পরামর্শ—
ত্বক
রাখুন পরিষ্কার
নিয়মিত মুখের ত্বক
পরিষ্কার করুন। ঘাম
ও মুখের তৈলাক্ত ভাবের
কারণে অস্বস্তি হয় বলে নিজের
সুবিধামতো সময়ে বারবার মুখ
ধুয়ে নিতে চেষ্টা করুন।
মুখ ধোয়ার জলে
দু-এক ফোঁটা গোলাপজল
মিশিয়ে নিতে পারেন, তাতে
সতেজ অনুভূতি পাবেন।
বাজারে যেসব ফেসওয়াশ
কিনতে পাওয়া যায়, তা
যদি আপনার ত্বকে মানিয়ে
যায়, তবে সেটি ব্যবহার
করতে পারেন।
দিনে অন্তত দুবার
স্নান করুন।
গরম জলে নিমপাতা
ডুবিয়ে রেখে সেই জলে
স্নান করতে পারেন, এতে
বিভিন্ন জীবাণুর সংক্রমণ থেকে বাঁচবেন।
নিমযুক্ত সাবানও ব্যবহার করতে
পারেন।
পাউডার ব্যবহার করলেও
তা দিন শেষে পরিষ্কার
করে ফেলবেন।
মেকআপ
হবে যেমন—
যে প্রসাধনীই ব্যবহার
করুন না কেন, তা
হতে হবে ওয়াটার-বেসড
বা পানিনির্ভর। অর্থাৎ
অয়েল-বেসড বা তেলের
প্রাধান্য বেশি এমন কোনো
প্রসাধনী ব্যবহার করা যাবে না।
ফাউন্ডেশন লাগাতে হবে খুব
কম। ফেসপাউডার
লাগালে কোনো ক্ষতি নেই।
এমন আইলাইনার লাগানো
উচিত, যেন তা ভিজে
গেলেও মুছে না যায়।
ত্বকের
ঘরোয়া যত্ন
মুলতানি মাটি, চন্দনের গুঁড়া,
কাগজিলেবুর রস এবং সর
তোলা দুধ বা টকদই
একত্রে মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে
রাখতে পারেন ১০-১৫
মিনিট। এতে
ত্বকের বাড়তি তেল ও
ময়লা বেরিয়ে যাবে।
তবে কাগজিলেবুর রস সরাসরি ব্যবহার
না করে এটিকে গোলাপজলের
সঙ্গে মিশিয়ে নিয়ে তারপর
ব্যবহার করুন। আর
চন্দনের পরিবর্তে চাইলে ভিজিয়ে রাখা
মসুরের ডাল বেটে নিয়ে
ব্যবহার করতে পারেন।
খাদ্যাভ্যাসে আনুন পরিবর্তন
সুষম খাদ্যাভ্যাস গড়ে
তুলুন। অতিরিক্ত
চর্বিজাতীয় খাবার খাবেন না। ভাজাপোড়া
কম খাবেন। ছোট
মাছ, শাকসবজি খাবার অভ্যাস গড়ে
তুলুন।
প্রচুর পানি পান
করুন।
সকালে ঘুম থেকে
উঠেই লেবুপানি পান করতে পারেন।
উঠতি বয়সীরা লেবুপানির
সঙ্গে একটু মধুও যোগ
করতে পারেন।
ফলের রসও পান
করতে পারেন।
ব্রণের সমস্যা?
ব্রণ সাধারণত একটি
নির্দিষ্ট বয়সসীমার মধ্যেই হয়ে থাকে। উঠতি
বয়সীদের মধ্যেই এ সমস্যা
বেশি দেখা যায়, তবে
কখনো কখনো ব্রণের সমস্যা
হতে পারে তরুণীদেরও।
ব্রণ প্রসঙ্গে অধ্যাপক হরষিত কুমার পাল
বলেন, ব্রণ থেকে দুই
ধরনের সমস্যা হতে পারে। একটি
হচ্ছে দাগ এবং অপরটি
হচ্ছে ক্ষত সৃষ্টি হওয়া। ব্রণের
দাগ প্রসঙ্গে তাঁর মতামত—
ব্রণ ভালো হয়ে
যাওয়ার পর ধীরে ধীরে
এমনিতেই দাগ চলে যায়।
এমনিতে দাগ না
চলে গেলে দাগ দূর
করার ক্রিম ব্যবহার করা
যেতে পারে।
অতিরিক্ত রোদ ও গরমে
ব্রণ বেশি হতে পারে।
জেনে নিন বেসন অথবা
মসুরের ডাল বাটার সঙ্গে
টকদই, আমন্ড বাদাম, কমলালেবুর
খোসা বাটা এবং নিমপাতা
বাটা দিয়ে একটি প্যাক
তৈরি করতে পারেন।
এটি তৈরি করে ফ্রিজে
রেখে কয়েক দিন পর্যন্ত
ব্যবহার করতে পারেন।
প্যাকটি প্রতিদিন মুখে লাগাবেন এবং
ভেজা তোয়ালে দিয়ে মুছে নেবেন। মুখ
ছাড়াও প্যাকটি শরীরের যেকোনো জায়গায়
সাবানের পরিবর্তে ব্যবহার করতে পারেন।
এ ছাড়া ১৫
দিন অন্তর ফেসিয়াল করাতে
পারেন।
ব্ল্যাকহেডস দূর করতে
চালের গুঁড়া পানি
দিয়ে বা দুধ দিয়ে
ভিজিয়ে নিয়ে এর সঙ্গে
চিনি এবং অ্যাপ্রিকট ফল
বাটা মিশিয়ে একটি দানাদার
প্যাক তৈরি করুন।
প্যাকটি মুখে লাগান।
শুকিয়ে যাওয়ার পর ভেজা
তোয়ালে দিয়ে ঘষে তুলে
ফেলুন।
তরমুজের উপকারিতা
তরমুজে ৯০ শতাংশের
বেশি জল থাকে, যা
মূলত শরীর ও ত্বকের
পানিশূন্যতা (ডিহাইড্রেশন) কমিয়ে আনে।
এ ছাড়া তরমুজের অ্যামিনো
অ্যাসিড ত্বকের কোলাজেন নামক
উপাদান বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
একই সঙ্গে এতে রয়েছে
অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট, ভিটামিন এ, বি এবং
সি। এই
উপাদানগুলো ত্বকের শুষ্কতার পাশাপাশি
বলিরেখা দূর করতে সাহায্য
করে।
ত্বকের সতেজতায়
ত্বকের যেকোনো সমস্যায়
তরমুজ ব্যবহার করা যেতে পারে
বলে জানালেন হারমনি স্পার আয়ুর্বেদিক
রূপ বিশেষজ্ঞ রাহিমা সুলতানা রীতা। এই
গরমে ব্ল্যাকহেডস, র্যাশ, পোড়া ভাব
কিংবা ব্রণের সমস্যা দেখা
দেয়। এসব
সমস্যার সমাধানে তরমুজের মাস্ক, তরমুজের রসের
আইস কিউব বেশ উপকারী। এদিকে
বিন্দিয়া এক্সক্লুসিভ বিউটি কেয়ারের রূপবিশেষজ্ঞ
শারমিন কচি ত্বকের যত্নে
তরমুজের বিভিন্ন ব্যবহারের কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘তরমুজ আসলে
এমন একটি ফল, যার
প্রতিটি অংশ আপনি ত্বকের
যত্নে ব্যবহার করতে পারবেন।’
ময়েশ্চারাইজার এবং স্ক্রাব হিসেবে
ত্বকের পোড়া ভাব
কাটিয়ে উজ্জ্বল ও ময়েশ্চারাইজ রাখতে
তরমুজের জুড়ি মেলা ভার। তরমুজে
ভিটামিন সি থাকার কারণে
এটা স্ক্রাব হিসেবে দারুণ।
তাই এক টুকরো তরমুজ
কেটে নিয়ে ত্বকে আলতোভাবে
ঘষে নিতে পারেন।
তারপর ঠান্ডা জল কিংবা
আইস কিউব দিয়ে মুখ
ধুয়ে ফেলুন। চাইলে
তরমুজের রসের সঙ্গে চালের
গুঁড়া মিশিয়ে নিয়ে স্ক্রাবিং
করতে পারেন। ১০
মিনিট রেখে ঠান্ডা জল
দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
বিন্দিয়া এক্সক্লুসিভের রূপ বিশেষজ্ঞ শারমিন
কচি বলেন, তরমুজের বীজ
শুকিয়ে গুঁড়া করেও স্ক্রাব
হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। এর
সঙ্গে শুধু যেকোনো ক্লিনজার
মিশিয়ে নিলেই হলো।
এটি আপনার ত্বকের কালো
দাগও দূর করবে।
ক্লিনজার হিসেবে
রোদ যতই তীব্র
হোক, কাজের প্রয়োজনে বাইরে
তো যেতেই হয়।
সেই সঙ্গে রয়েছে ধুলাবালু। ঘরে
ফিরেই দেখা যায় ত্বকে
র্যাশ, ব্রণের সমস্যা।
রাহিমা সুলতানা বলেন, তৈলাক্ত ত্বকে
র্যাশ আর ব্রণের সমস্যা
আরও বেশি দেখা দেয়। সে
ক্ষেত্রেও তরমুজ ব্যবহার করতে
পারেন। তরমুজ
এবং লেবুর রস একসঙ্গে
মিশিয়ে ক্লিনজার হিসেবেও ব্যবহার করা যায়।
সপ্তাহে অন্তত তিন দিন
মিশ্রণটি ত্বকে ম্যাসাজ করুন। ১০
মিনিট পর ঠান্ডা জল
দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
এমনকি যাঁদের ত্বক শুষ্ক,
তাঁরাও তরমুজ, পাকা কলা,
দুধের প্যাক ব্যবহার করতে
পারেন। সপ্তাহে
তিন থেকে চার দিন
প্যাকটি ব্যবহার করুন।
মাস্ক হিসেবে
তরমুজের সঙ্গে বেসন, দুই
চিমটি হলুদ, টক দই
এবং পরিমিত লেবুর রস
মিশিয়ে মাস্ক তৈরি করতে
পারেন। শুকিয়ে
না যাওয়া পর্যন্ত ত্বকে
লাগিয়ে রাখুন। এই
মাস্ক টোনার হিসেবে উপকারী। ফলে
ত্বকে সহজেই বলিরেখা পড়বে
না। এই
মাস্ক ১ সপ্তাহ পর্যন্ত
ফ্রিজে রাখতে পারেন।
এর বেশি না রাখাই
ভালো। অথবা
শুধু ডিমের কুসুম দিয়েও
তরমুজের মাস্ক তৈরি করতে
পারেন। এটি
রোদে পোড়া দাগ কমিয়ে
আনে। শারমিন
কচি বলেন, তরমুজের রসের
সঙ্গে সয়াবিন গুঁড়া, আধা
চামচ মধু এবং ডিমের
সাদা অংশ যদি পেস্ট
করে নেওয়া যায়, তবে
সেটা খুব ভালো মাস্ক
হিসেবে কাজ করে।
এটি যেকোনো ত্বকের জন্যই
উপকারী।
ব্রণের সমস্যায় তরমুজের বীজ
পরিষ্কার করে নেওয়া তরমুজের
বীজগুলো জলে সেদ্ধ করে
নিন। বীজগুলো
নরম হয়ে গেলে পেস্ট
করে ব্রণের ওপর মালিশ
করুন। তিন
থেকে পাঁচ মিনিট পর
শুকিয়ে গেলে তার ওপর
ডিমের সাদা অংশ ব্রাশ
দিয়ে আলতো করে লাগিয়ে
নিন। ১০
মিনিট পর পরিষ্কার জল
দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
তৈলাক্ত ত্বকের জন্য এটি
খুবই উপকারী।
তরমুজের খোসা
তরমুজের খোসার সবুজ অংশ
পাতলা করে কেটে নিয়ে
অল্প জলে সেদ্ধ করে
নিন। জল
ঘন হয়ে গেলে সেটি
ঠান্ডা করে আপনি টোনার
হিসেবেও ব্যবহার করতে পারবেন।
আরও গুণ
* তরমুজে যেহেতু ভিটামিন
এ রয়েছে, তাই এটি
আপনার চোখের নিচের কালো
দাগ দূর করে।
* তরমুজের ভিটামিন এ ত্বকের অতিরিক্ত
তৈলাক্ত ভাব দূর করে।
* তরমুজের অ্যামিনো অ্যাসিড মাথার ত্বকের রক্তসঞ্চালন
স্বাভাবিক রাখে। ফলে
চুলের স্বাভাবিক বৃদ্ধি এবং উজ্জ্বলতা
বজায় থাকে।
ত্বকের যত্নে অন্যান্য ফল
তরমুজ, কমলালেবু, আপেল
কিংবা স্ট্রোবেরি ফল কী শুধুই
খাওয়ার জন্য? রূপচর্চাতেও ফলের
জুড়ি নেই। ফলের
সাহায্যে ত্বকের অনেক সমস্যার
সমাধান সম্ভব।
তাহলে জেনে নিন
ত্বক ও চুলের সমস্যা
অনুযায়ী কোন ফল আপনার
জন্য উপযোগী।
শসা :
গরমকালে ত্বককে হাইড্রেটেড রাখা
খুব জরুরি। আর
ত্বকের স্বাভাবিক আর্দ্রতা ধরে রাখতে শসার
কোনো বিকল্প নেই।
একটি মাঝারি সাইজের শসা
কেটে ভালো করে পেস্ট
করে তার সঙ্গে টক
দই এবং ওটমিল মিশিয়ে
নিন। এরপর
মুখে ও গলায় সেই
পেস্ট লাগিয়ে ৩০ মিনিট
পর ঠান্ডা জল দিয়ে
ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে
অন্তত দু'দিন ব্যবহারে
ফিরে পাবেন আপনার ত্বকের
হারিয়ে যাওয়া আর্দ্রতা।
পেঁপে :
পাকা পেঁপে যে
ত্বককে সুন্দর রাখতে কতটা
উপযোগী তা হয়তো অনেকেই
জানেন না। সামান্য
দুধ দিয়ে পাকা পেঁপে
পেস্ট করে নিয়মিত ত্বকে
মাখলে বলিরেখা ও অনুজ্জ্বল ত্বকের
সমস্যা থেকে অনেকটাই মুক্তি
পাওয়া যায়।
কলা :
১টি পাকা কলা
পেষ্ট করে ২ টেবিল
চামচ মধু, ২ টেবিল
চামচ গ্লিসারিন, একটা ডিমের সাদা
অংশ মিশিয়ে ফেস মাস্ক
তৈরি করে মুখে লাগিয়ে
১০ মিনিট পর জল
দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
এতে ত্বকের মরা কোষ,
ধুলো-ময়লা ও ত্বকের
কালো ছোপ ছোপ দাগ
অনেকটাই দূর হয়ে যাবে।
আমলকি ও আঙুর :
আমলকির রস ও
আঙুরের রস একসঙ্গে মিশিয়ে
মুখে লাগিয়ে নিন।
শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন। এতে
ত্বক উজ্জ্বল হবে।
কমলালেবু :
প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে
উঠে মুখ ধোয়ার পর
কমলালেবুর রসের সঙ্গে গোলাপজল
ও মধু মিশিয়ে তুলা
দিয়ে মুখে লাগান।
শুকিয়ে গেলে ভেজা তুলা
দিয়ে আবার মুছে ফেলুন। এতে
ত্বকের ব্লাড সার্কুলেশন ভালো
হবে, রুক্ষ ভাব কমে
গিয়ে কোমল ও মোলায়েম
হবে।
আপেল :
আপেল শুধু খাওয়ার
জন্য ভালো তা কিন্তু
না। রূপচর্চায়ও
আপেলের ভূমিকা অনেক।
এতে আছে অ্যান্টিএজিং প্রপার্টি,
যা বলিরেখা সমস্যা কমাতে ভালো
কাজ করে। একটা
আপেল পেস্ট করে এতে
১ টেবিল চামচ গরম
দুধ, ১টা ডিমের কুসুম,
১ টেবিল চামচ ওটমিল,
১ চা চামচ মধু,
১ চা চামচ লেবুর
রস, সামান্য ময়দা মিশিয়ে ঘন
প্যাক তৈরি করে মুখে
ও গলায় লাগিয়ে নিন। ১৫
মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। তারপর
দেখুন ম্যাজিক। ত্বকের
বলিরেখা কমে যাবে, ত্বক
আগের চেয়ে অনেক বেশি
উজ্জ্বল হবে।
স্ট্রবেরি :
শুষ্ক, তৈলাক্ত বা
স্বাভাবিক যেকোনো প্রকার ত্বকের
জন্য স্ট্রবেরি খুব ভালো।
কয়েকটা স্ট্রবেরি হাত দিয়ে সামান্য
চটকে নিন। এর
সঙ্গে সামান্য ফ্রেশ ক্রিম (শুষ্ক
ত্বকের জন্য) অথবা টক
দই (তৈলাক্ত ত্বকের জন্য) এবং
১ টেবিল চামচ মধু
মিশিয়ে মাস্ক তৈরি করে
নিন। সপ্তাহে
তিনদিন এই মাস্ক মুখে
লাগান। শুকিয়ে
গেলে ধুয়ে ফেলুন।
নিয়মিত ব্যবহারে আপনার ত্বক উজ্জ্বল
ও মসৃণ হবে।
ব্রণকে বিদায় জানান
ব্রণ আজকাল তরুণীদের
জন্য একটি নিত্য সমস্যা। তবে
বাড়িতে বরফ থাকলে আর
চিন্তা নেই। ব্রণের
সমস্যা মেটাবে বরফ ।
একটি পরিষ্কার প্ল্যাস্টিকের ব্যাগে ২/৩
টি বরফের টুকরো পেঁচিয়ে
নিয়ে ব্যাগটি ব্রণের ওপর ধরে
রাখতে হবে। ব্যাস,
মাত্র ১০ মিনিটেই বিদায়
ব্রণ। এই
পদ্ধতিতে ব্রণের লালচে ভাব
দূর হয় এবং ব্রণের
আকারও ছোট হয়ে আসে।
চোখের ফোলা দূর করতে
ঘুম কম কিংবা
বেশি দুই কারণেই আমাদের
অনেকেরই চোখের নিচ ফুলে
যায়। কালি
পড়ে। দেখতে
বেশ বিশ্রী দেখায়।
এই সমস্যাও দূর করবে বরফ। একটুকরো
বরফ পরিষ্কার পাতলা কাপড়ে পেঁচিয়ে
চোখের নিচে ফোলা জায়গায়
ধরে থাকুন। এতে
ফোলা ভাব কমবে।
সঙ্গে দূর হবে রাতের
ক্লান্তিও।
তবে ফোলা ভাব
বেশি হলে চিনি ছাড়া
গ্রিন টি তৈরি করে
তা বরফ করে নিয়ে
চোখের নিচে ধরে রাখুন। ভালো
ফল পাবেন।
ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে
তবে এর জন্য
শুধু বরফ নয় আপনাকে
ব্যবহার করতে হবে শসা
কিংবা স্ট্রবেরি-এর তৈরি বরফ
। এজন্য শসা
অথবা স্ট্রবেরি যে কোনো একটি
ব্লেন্ডারে খুব ভালো করে
ব্লেন্ড করে নিন।
এরপর এটিকে ডীপ ফ্রিজে
রেখে বরফ করে নিন। এই
বরফ মুখে ঘষুন সপ্তাহে
১ দিন। এতে
ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে।
রোদে পোড়া দাগ দূর করতে
রোদে পোড়া দাগ
দূর করার জন্যও বরফ
বেশ ভালো একটি উপাদান। ২/৩ টুকরো বরফ
পরিষ্কার পাতলা কাপড়ে পেঁচিয়ে
পোড়া স্থানের উপর ঘষে নিন। এতে
পোড়া দাগ দ্রুত মিলিয়ে
যাবে।
চুল সুন্দর রাখতে প্রয়োজনীয় টিপস
• সপ্তাহে ২-৩ বার
শ্যাম্পু করতে হবে।
• রাতে ভাল করে
তেল ম্যাসাজ করতে হবে।
• গরমে চুলের ডগা
ফেটে যাওয়া, রোদে পোড়ার হাত
থেকে রেহাই পেতে হলে
গরমের শুরুতেই চুল ট্রিম করিয়ে
নিতে হবে।
• চুল ছোট না
করতে চাইলে টুপি ব্যবহার
করতে পারেন, স্কার্ফ বা
ক্লিপ দিয়ে চুল বেধেও
রাখতে পারেন। তবে
বেশি টাইট করে চুল
বাধবেন না, খেয়াল রাখবেন
চুলের মধ্যে যেন হাওয়া
চলাচল করতে পারে।
• ধুলো-ময়লা, বৃষ্টির
পানিতে ভিজে অনেক সময়
চুল নিস্তেজ হয়ে যায়।
অলিভ অয়েল, নারকেল তেল
ও ক্যাস্টর অয়েলের সাথে মেথি পেস্ট
মিশিয়ে মাথার তালুতে ম্যাসাজ
করতে পারেন। এতে
চুল ঘন ও উজ্জ্বল
থাকবে।
• দইয়ের সাথে লেবুর
রস মিশিয়ে চুলে দিতে পারেন। তারপর
শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেললে
ভাল ফল পাওয়া যাবে।
• বাইরে বেরোনোর সময়
চুল বেঁধে রাখতে হবে। তাহলে
বাইরের রোদ ময়লা থেকে
অনেক খানি রক্ষা পাবেন।
• গরমে তাপমাত্রা বাড়লে
মাথার তালুও ঘামতে শরু
করে। দিনের
শেষে বাড়ি ফিরে চুল
ভাল করে শুকিয়ে নিবেন। তারপর
বড় দাতের চিরুনি দিয়ে
চুল আঁচড়ে শুকিয়ে নিবেন।
• নারকেল তেলের সাথে
দারুচিনি গুঁড়া করে মিশিয়ে
চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করলেও চুল পড়া
কমে যাবে।
• আরও মনে রাখতে
হবে ঘুমানোর আগে মোটা দাঁতের
চিরুনি দিয়ে হালকাভাবে চুল
আঁচড়ে নিবেন। এতে
চুলের গোড়ায় রক্ত সঞ্চালন ঠিকমতো
হবে।
• চুলপড়া রোধ করতে লাইফ
স্টাইল ও ডায়েটেও পরিবর্তন
আনা দরকার। অর্থাৎ
ব্যালেন্সড ডায়েট মেনে চললে
এবং সবুজ শাকসবজি, ফলমূল
বেশি খেলে চুলের অনেক
উপকার পাওয়া যাবে।
বেশি করে প্রোটিনযুক্ত খাবার
ও প্রচুর জল পান
করতে হবে।
গরমে ছেলেদের ত্বকের যত্ন
প্রতিদিন ত্বক স্ক্রাব করা
উচিৎ। রোদে
বাইরে বের হলে ত্বকের
উপরিভাগে কালো ছোপ দাগ
পরে এবং ধুলোবালি জমে। ধুলোবালি
ত্বকে ব্রণের সমস্যা সৃষ্টি
করে। তাই
এমন স্ক্রাব ব্যবহার করা উচিৎ যা
প্রতিদিন ব্যবহার করা যায়।
বাইরে থেকে ফিরেই ত্বক
দ্রুত স্ক্রাব করে ফেলুন।
ভ্যাঁপসা গরমে ত্বকের উপরিভাগ
বেশিরভাগ সময় তৈলাক্ত দেখায়। তেলতেলে
ত্বকে ধূলোবালি জমে ত্বকের উপরিভাগ
কালচে করে ফেলে, ব্রণ
বাড়ায়। এই
সমস্যা থেকে বাঁচতে টমেটো
পিষে মুখে ঘষে ১৫
মিনিট রেখে ঠাণ্ডা পানি
দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
ত্বকের তৈলাক্ততা দূর হয়ে যাবে।
ত্বকের সুরক্ষায় অবহেলা
করবেন না কখনোই।ঘর থেকে বের
হওয়ার আগে অবশ্যই ত্বকে
সানস্ক্রিন লাগিয়ে বের হবেন। উচ্চ
মাত্রার এসপিএফ সমৃদ্ধ সানস্ক্রিন
লাগাবেন। ত্বক
অতিরিক্ত ঘেমে গেলে মুছে
ফেলবেন। সেজন্য
সাথে টিস্যু বা নরম
কাপড় রাখুন।
ডিহাইড্রেশনে পড়লে ত্বকের অনেক
ক্ষতি হয়। ত্বকের
রুক্ষতা ও শুষ্কতা বেড়ে
যায়। ত্বকের
উপরিভাগ ফেটে যায়।
তাই ত্বককে হাইড্রেট রাখতে
পরিমিত পরিমাণ জল ও
পানীয় পান করুন।
দিনে ৮ গ্লাস জল
ও অন্যান্য পানীয় পান করবেন। এতে
দেহ ও ত্বক হাইড্রেট
থাকবে।
রাতে ঘুমানোর আগে
একটু ছোটখাটো ভাবে পরিচর্চা করে
নিতে পারেন। এ
জন্য ব্যবহার করতে পারেন আইস
কিউব। সারা
মুখে আইস কিউব ঘষে
তেমনি ঘুমিয়ে পরুন আর
সকালে পান উজ্জ্বল ত্বক। এটি
মূলত ত্বকের রক্ত চলাচল
সচল করে ত্বকের রিলেক্সিং
ভাব আনে। এছাড়া
মশ্চারাইজার ক্রিম লাগিয়ে আঙুল
দিয়ে ঘষে ম্যাসাজও করে
নিতে পারেন। এটিও
একই ভাবে কাজ করে।
ত্বকের পরিচর্চায় যুগ
যুগ ধরে ব্যবহৃত হয়ে
আসছে লেবু। আর
ছেলেদের ত্বক যেহেতু ড্রাই
তাই আপনি এতে লেবু
খুব সহজেই ব্যবহার করতে
পারে। লেবু
কেটে খোসাসহ মুখে ভালভাবে
ঘষে নিলে তা ব্রণ
থেকে শুরু করে এ্যালার্জি
জিনত সমস্যা নিমিষেই দূর
করে। লেবুর
সাইট্রিক এসিড আপনার ত্বকের
অতিরিক্ত তেল, পিগমেন্টেশন, রোদে
পোড়া দাগ দূর করতেও
সাহায্য করে। একইভাবে
এর ভিটামিন ‘সি’ মুখের কালো
দাগ দূর করে ত্বককে
আরো ফর্সা করতে সাহায্য
করে।
এই গরমে আপনার
ত্বকে দেখা দেয় কালচে
আর রোদে পোড়া দাগ। এর
জন্য প্রতিদিন বাসায় ফিরে মুখ
ধোয়ার আগে শসার টুকরো
দিয়ে ১৫ থেকে ২০
মিনিট মুখ ঘষে পরিষ্কার
করে নিতে পারেন।
এটি ত্বক গভীর থেকে
পরিষ্কার করে। এ
ছাড়া শসার রস ত্বকে
প্রাকিতিক মশ্চারাইজার হিসেবেও কাজ করে।
এক চামচ কাঁচা
হলুদের সঙ্গে কাঁচা দুধ
মিশিয়ে পেষ্ট তৈরি করে
সম্পূর্ণ মুখে ভালোভাবে লাগিয়ে
নিন। কাঁচা
হলুদ ত্বকের কোমলতা ধরে
রাখে এবং কাঁচা দুধ
স্কিনের কমপ্লেকশনকে আরো ফর্সা করতে
সাহায্য করে। এছাড়া
শুষ্ক ত্বকের জন্য মধু
ব্যবহার করতে পারেন।
এটি অনেক বেশি উপকারী
ছেলেদের ত্বকের জন্য।
আধা চামচ মধুর
সঙ্গে এক টুকরো লেবুর
রস মিশিয়ে মুখে ভালোভাবে
লাগিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা
করুন। এরপর
কুসুম গরম পানিতে মুখ
ধুয়ে নিন। ইচ্ছে
হলে এর পরে ময়েশ্চারাইজার
লাগাতে পারেন। আর
দেখুন এই গরমেও আপনি
কেমন নিজেকে পাচ্ছেন সতেজ
আর প্রাণবন্ত।
প্রয়োজনীয়
কিছু উপকরণ
গরমে ত্বকের চর্চার
জন্য প্রয়োজনীয় কিছু উপকরণ:
ফেসওয়াশ
গরমের দিনে ত্বকের
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে বেশি যত্নশীল হতে
হয়। এজন্য
আপনি ব্যবহার করতে পারেন গ্লিসারিন-সমৃদ্ধ সাবান অথবা
ক্লিনজার বা ফেসওয়াশ।
তবে গরমে সবচেয়ে ভালো
হচ্ছে ময়েশ্চারাইজিং ক্লিনজার। তৈলাক্ত
ত্বকের অধিকারীদের গরমকালে কষ্ট হয় বেশি। তেলগ্রনি’গুলো এ সময়
সক্রিয় হয়ে উঠার কারণে
তেল বের হয় বেশি
তারা মেডিকেটেড ফেইস ওয়াশ ব্যবহার
করলে ভালো ফল পেতে
পারেন।
সানস্ক্রিন
গরমের দিনে সবচেয়ে
প্রয়োজন হচ্ছে সানস্ক্রিন।
রোদ থেকে রক্ষা পেতে
বাইরে বের হলে অবশ্যই
সানস্ক্রিন লোশন ব্যবহার করবেন,
বিশেষ করে চোখের নীচের
নমনীয় ত্বকের জন্য মেডিকেটেড
সানস্ক্রিন এবং তৈলাক্ত ত্বকের
জন্য তেলবিহীন সানস্ক্রিনই ব্যবহার করতে হবে।
রোদে বাইরে বের হলে
অবশ্যই সানস্ক্রিন লোশন ব্যবহার করবেন। সানস্ক্রিন
লোশন ব্যবহার করার সময় অবশ্যই
খেয়াল রাখবেন তাতে যেন
সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর এসপিএফ অন্তত ১৫
হয়। ওয়াটার
প্রুফ সানস্ক্রিনও ব্যবহার করতে পারেন।
ক্রিম
শুষ্ক ত্বকের খসখসে
ভাব দূর করার জন্য
এবং বলিরেখা পড়ার হাত থেকে
রেহাই পাওয়ার জন্য সবসময়
ক্রিম ব্যবহার করা উচিত।
অবশ্য ক্রিমের বদলে বেবি লোশনও
ব্যবহার করতে পারেন।
তবে গরমের দিনে ক্রিম
হতে হবে তেলবিহীন।
নতুবা ক্রিমের অতিরিক্ত তেল গরমে আরো
বেশি সমস্যা তৈরি করবে।
কিছু সাধারণ নির্দেশিকা
১) ত্বকের সুস্থতার
জন্য সবজি, ফল, সালাদ,
প্রোটিন, ভিটামিন, কার্বহাইড্রেড অত্যান্ত জরুরী। প্রতিদিন
কমপক্ষে ৭ থেকে ৮
গ্লাস জল পান করা
জরুরী।
২) রক্ত চলাচল
ও শ্বাস – প্রশ্বাসের কার্যকলাপ ঠিক রাখার জন্য
ব্যায়াম করতে হবে।
মানসিক চাপ থেকে ত্বক
ও চুলে নানা রকম
সমস্যা দেখা দেয়।
সেক্ষেত্রে নিয়মিত ব্যায়াম এ সমস্যা সমাধানে
কাজ করে।
৩) দিনে অন্তত
দুইবার ঠান্ডা জল দিয়ে
স্নান করা ঊচিত।
আর অবশ্যই পরিষ্কার এবং
ধোয়া সুতি কাপড় পরিধান
করুন।
৪) আমাদের ত্বকে
দুই ধরনের সোয়েট গ্ল্যান্ড
বা ঘর্মগ্রন্থি রয়েছে। হাতের
তালু এবং পায়ের পাতার
অংশে এক ধরনের এবং
অন্য ধরনের গ্ল্যান্ড আন্ডার
আর্ম ও শরীরের অন্যান্য
অংশে রয়েছে। ডিওড্রেন্ট
ট্যালকম পাউডার ব্যাবহার করে,
পারফিউম লাগিয়ে এ সম্যসার সমাধান
সম্ভব।
৫) গরমে প্রতিদিন
হালকা এবং সুতির জামা-কাপড় বদলে পরার
চেষ্টা করুন।
৬) দিনে তিন
থেকে চার বার মুখমণ্ডল
ধৌত করুন।
৭) শসা এবং
কমলার সরবত পান করুন,
এতে সজীবতা পাবেন।
৮) ঘরে তৈরী
টমেটো এবং লেবুর প্যাক
মুখমণ্ডলে লাগাতে পারেন।
এতে অতিরিক্ত তেল এবং ব্ল্যাকহেডস
তুলে নিবে।
৯) রোদে যাওয়ার
আগে অবশ্যই সানস্ক্রিন অথবা
সানব্লক ক্রিম অথবা লোশন
ব্যাবহার করুন। সানগ্লাস
ব্যাবহার করতে ভুলবেন না।
১০) যদি বাহিরে
হেঁটে বেড়াতে হয়, তাহলে ঘরে
ফিরেই প্রথমে ঠান্ডা হয়ে
নিন, এরপর ত্বকে ঠান্ডা
পানি ছিটিয়ে দিন।
ত্বকের যত্ন নিয়ে আরো
গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি পরামর্শ
• গরমে যাদের ত্বকে
ঘামাচি হয়, তারা নিমপাতার
রস লাগালে উপকার পাবেন। তেঁতো
জাতীয় খাবার খান।
ঘাম বেশি হলে ট্যালকম
পাউডারের সাথে এক চিমটি
খাবার সোডা ব্যবহার করুন।
• গরমে ত্বক শুষ্ক
হয়ে পড়ে। তাই
রূপচর্চা করা জরুরী।
ত্বক তৈলাক্ত হলে বার বার
মুখ পরিষ্কার করতে হবে।
শশা বাটা এবং মুশুরি
ডাল বাটা দুটো পেস্ট
করে মুখে লাগিয়ে ১৫
মিনিট পর মুখ ধুয়ে
ফেলুন। আপনার
মুখের তেলতেলে ভাব কেটে যাবে।
• লাউয়ের রস, তরমুজের জুস
বরফ করে মুখে ঘষুন। এতে
রোদে পোড়াভাব দূর হয়ে সাথে
সাথে আপনার ত্বক হয়ে
উঠবে উজ্জ্বল মোলায়েম।
• গরমে তৈলাক্ত ত্বক
দ্রুত ঘেমে যায় ও
ময়লা দ্রুত শুষে নেয়। এ
সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে
আপনি শশার রস পরিমাণমতো,
আধা চা চামচ লেবুর
রস, আধা চামচ গোলাপ
জলে মিশিয়ে লোশনের মতো
মুখে লাগিয়ে আধাঘণ্টা পরে
ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে
অন্তত চার-পাঁচ দিন
করুন।
• গরমে ব্রনের মাত্রা
বেড়ে যায়। ব্রন
এড়াতে সপ্তাহে তিন, চার বার
চিরতার পানি এবং দুই-তিনটি কাঁচা হলুদ
ও আখের গুঁড় খেতে
পারেন। সব
সময় মুখ পরিষ্কার রাখবেন। নিমপাতা,
হলুদ, চিরতা ও মুলতানি
মাটি এক সঙ্গে মিলিয়ে
পেস্ট বানিয়ে ব্যবহার করলেও
উপকার পাবেন।
• রোদের প্রচন্ড তাপের
কারণে ত্বকের ছোপ ছোপ
দাগ দূর করার জন্য
টমেটোর রস, কাঁচা হলুদের
রস, ভুসিওয়ালা আটা মিশিয়ে মুখ,
গলা ও ঘাড়ে লাগান। গোলাপজল
দিয়ে মুছে ধুয়ে ফেলুন। কাঁচা
দুধ, লেবুর রস, পাকা
পেঁপে, চন্দন, গোলাপের পাপড়ি
একসঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট করে
নিয়ে পুরো ত্বকে লাগান,
হালকা ম্যাসাজ করুন। ভালো
ফল পাবেন।
• গরমে যাদের ত্বকে
ঘামাচি হয়, তারা নিমপাতার
রস লাগালে উপকার পাবেন। তেঁতো
জাতীয় খাবার খান।
ঘাম বেশি হলে ট্যালকম
পাউডারের সাথে এক চিমটি
খাবার সোডা ব্যবহার করুন।
0 Comments