কম খরচে ঘুড়ে আসা যাক কক্সবাজার
আসা-যাওয়া হোক রাতের গাড়িতে:
দেশের
অনেকগুলো প্রধান শহর থেকে রাতে কক্সবাজারের জন্য বাস ছাড়ে। নন
এসি এ ধরনের রাতের
বাসে ভ্রমণ করলে আপনার খরচ বেশ কমে যাবে। ঢাকা
থেকে কক্সবাজারের বাস ভাড়া ৮০০ টাকা। রাতে
দিনের চেয়ে তাপমাত্রা কম থাকে, তাই একটু আরাম করেই যেতে পারবেন। যাওয়া
আসা দুই রাত বাসে থাকলে আপনার দুদিনের থাকার খরচ কমে যাবে।
কক্সবাজারে
বিচের যত কাছে থাকবেন ততই ভাড়া বাড়তে থাকবে। তাই
বিচের দিকে না থেকে কলাতলি রোড, বা এখানকার গলি গুলোতে খুজলে পেয়ে যাবেন বাজেটের মধ্যে থাকার ব্যাস কিছু হোটেল
।তাই গলির মধ্যে
হোটেল নিন ।
ভালোভাবে খুঁজলে
৫০০ টাকার মধ্যে হোটেল পেয়ে যেতে পারেন।
নিজ দ্বায়িত্বে
খুঁজে বের করুন হোটেল:
বাস
থেকে নামলেই আপনাকে সিএনজি বা রিক্সাওয়ালারা হোটেল খুঁজে দিতে চাইবে। ভুলেও
তাদের সাথে গিয়ে তাদের পরামর্শে হোটেল নেবেন না। এরা
সাধারণত বড় অংকের কমিশনের বিনিময়ে হোটেল ঠিক করে দেয়। তাই
এদের কথাবার্তা পাত্তা না দিয়ে নিজ দ্বায়িত্বে প্রয়োজনে পায়ে হেঁটে হোটেল খুঁজে বের করুন। এতে
আপনি দালালের হাত থেকে বেচে যাবেন।
সামগ্রি
বহন এর জন্য ট্রলি নয়
ব্যাকপ্যাক ব্যবহার করুন :
বাজেট
ট্রিপে ট্রলি নিয়ে গেলে আপনার চলাফেরা সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে। ফলে
শুধু লাগেজের জন্যই অনেকগুলো অহেতুক খরচ বেড়ে যায়। তাই
এ ধরনের ট্রিপে একটিমাত্র
ব্যাকপ্যাক (পিঠে ঝুলানো যায় এরকম ব্যাগ) ব্যবহার করুন। প্রয়োজনে
আরেকটি ডে ব্যাগ রাখতে পারেন যাতে অল্প কিছু প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রেখে বাকিগুলো রুমে রেখে আসতে পারেন।
তিন
দিনের ছুটি, সপ্তাহান্ত এড়িয়ে চলুন:
আমাদের
দেশে তিন দিনের কোনো বন্ধ থাকলেই কক্সবাজার লোকারণ্য হয়ে যায়, ফলে সে সময়টায় সব কিছুর দাম বেড়ে যায়। এছাড়া
অন্য দিনগুলোর চেয়ে সপ্তাহান্তেই বেশি ভিড় থাকে। খরচ
কমাতে হলে এ দিনগুলো এড়িয়ে
যেতে হবে আপনাকে। এছাড়া
ঈদের সময়, ডিসেম্বরের শেষ দিকে কক্সবাজারে খুব ভিড় হয়। যথা
সম্ভব এ সময়গুলো এড়িয়ে
চলতে হবে।
খাবার
দাবার:
কক্সবাজারে
খাবারের জন্য অনেক খরচ হয়ে যায়। আপনি
যদি কয়েকজনের সাথে ভ্রমণ করেন তবে খাবার দাবার ভাগে যোগে খেলে খরচ কমাতে পারবেন। যেমন
ধরুন কক্সবাজারে জনপ্রিয় খাবারের তালিকা লইট্টা মাছের ফ্রাই আছে। এই
সাইড আইটেমটি একটি নিলেই তিনজনে খাওয়া যায়। আবার
৮০ টাকা প্লেটের ভর্তা ভাজি নিলে চার জনে ভাগ করে আনায়সে খাওয়া যায়।
মূল
খাবারের জন্য যে তরকারি নেবেন সেটিও ভাগ করে খাওয়া যায়। এরকম
ভাগে-যোগে খেতে পারলে আপনার খরচ মাথাপিছু প্রতি বেলা ১৫০ টাকায় নেমে আসবে। এছাড়া
শহরে গিয়ে খেলেও খাবারের খরচ অনেক কমে যাবে। শহরের
লালদীঘির পাড়ে অনেক হোটেল আছে, সেখানে কম খরচে খেতে পারবেন।
কিছু
কিছু আইটেমের দাম খুব বেশি। চেষ্টা
করবে খাবারের তালিকা থেকে এগুলো বাদ দিতে। যেমন
রূপচাঁদা মাছ, শুধুমাত্র একটি মাছ অর্ডার করলেই আপনার মোট খাবারের সাথে ৩৫০ টাকা যোগ হয়ে যাবে। একই
কথা চিংড়ি মাছের জন্যও প্রযোজ্য। ওশেন
প্যারাডাইজ হোটেলের উল্টো দিকে গলির ভিতরে বেশ কয়েকটি হোটেল আছে, সেখানে খেতে গেলেও খরচ কিছুটা কমাতে পারবেন।
ইজি
বাইক/অটো ব্যবহার:
ইনানি
বা হিমছড়ি যেতে চাইলে কলাতলী মোড়ে এসে উঠে যেতে পারেন লোকাল ইজি বাইক/অটোতে। হিমছড়ি
পর্যন্ত মাত্র ২০ টাকা ভাড়ায় চলে যেতে পারবেন। ৫০
টাকা খরচ করে যাওয়া যায় ইনানি বিচ পর্যন্তুও। আর
যদি সংখ্যায় বেশি হোন চাইলে হিমছড়ির জন্য ২০০ টাকাতেও অটো রিজার্ভ করে নিতে পারবেন।
একইভাবে
যদি মহেশখালি যেতে চান তবে লঞ্চঘাট থেকে শেয়ারে স্পীড বোট উঠে পার হবেন। তারপর
আদিনাথ মন্দির ঘুরে দেখে আবার চলে আসবেন কক্সবাজার। মেরিন
ড্রাইভে যদি ট্রিপ দিতে চান তবে কলাতলি মোড়ে এসে সম্ভব হলে জীপে উঠে বসবেন। আগে
আগে গেলে সামনের সিটে বসে উপভোগ করতে পারবেন পুরো মেরিন ড্রাইভ, খরচও নামমাত্র।
সঠিক
সময়ে চেক আউট
মনে
রাখবেন আপনার হোটেলের চেক ইন সাধারণত দুপুর একটা আর চেক আউট সকাল ১১টার দিকে হয়। আগেই
হোটেলে জানিয়ে রাখবে আপনার গাড়ি রাতে ছাড়বে, সন্ধ্যা পর্যন্ত আপনি কী হোটেলের রুমে থাকতে পারবেন কিনা। সাধারণত
ভিড় না থাকলে হোটেল মালিকরা কোনো ঝামেলা করে না।
তবে
ভিড় থাকলে আপনাকে ১১টার পর আর সময় দেবেনা। এসব
ক্ষেত্রে যেটা করতে পারেন রুম ছেড়ে দিয়ে লাগেজ রেখে যেতে পারেন হোটেল কাউন্টারে। সেক্ষেত্রে
সারাদিন ঘুরে ফিরে সন্ধ্যায় হোটেলে এসে ব্যাগ নিয়ে চলে যাবেন বাস ধরার উদ্দেশ্যে।
একটি
জিনিস মনে রাখবেন আপনার টাকা কম বলে লজ্জা পাবার কিছু নেই। বরং
অল্প টাকা নিয়ে আপনি দেশ দেখতে বের হয়েছেন এটা গর্বের বিষয়। একসময়
হয়তো আপনার টাকা হবে, তখন ঘোরাঘুরি করা সময় নাও থাকতে পারে।
0 Comments